শিক্ষার আলো ডেস্ক
“শিক্ষার মান উন্নয়ন বিপ্লব” চলমান বিশ্বের প্রতিটি দেশের ন্যায় জাতীয় ইস্যু হয়ে দাঁড়িয়েছে। আমাদের মত তৃতীয় বিশ্বের উন্নয়নশীল দেশে একটি সুশিক্ষিত জাতি গঠন অত্যাবশ্যক। এ কাজ সরকারি প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করে আসছে বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সমূহ। একমাত্র মানসম্পন্ন নিবেদিত প্রাণ শিক্ষকসমাজ ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানই পারে জাতির কাঙ্খিত এ বিপ্লব ঘটাতে। গতানুগতিকতা পরিহার করে আধুনিক টিউটোরিয়াল সিস্টেম, নিয়মিত পরীক্ষাসহ শিক্ষকগণের নিরবচ্ছিন্ন তত্ত্বাবধানে শিক্ষার্থীর সুপ্ত প্রতিভার বিকাশ সাধন সম্ভব।
এর মাধ্যমে সুসমন্বিত ও কল্যাণধর্মী জীবন যাপনের জন্য সচেতন কর্তব্যবোধে উদ্বুদ্ধ সৎ ও প্রগতিশীল সচেতনতাসম্পন্ন ব্যক্তিত্বের বিকাশ সাধন করে দেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতির প্রয়াসে কর্তব্যনিষ্ঠ ও কর্মকুশল জনশক্তি সরবরাহ করা এবং শিক্ষার্থীর আকাঙ্খা ও প্রবণতা অনুযায়ী উচ্চশিক্ষার উপযোগী করে গড়ে তোলার মধ্য দিয়ে শিক্ষার্থীকে অতীত ঐতিহ্য, ইতিহাস, সংস্কৃতির ধারণা প্রদান ও বর্তমান সমস্যা সমাধানের দিক নির্দেশনা দিয়ে জাতির আশা আকাঙ্খার রূপরেখা বাস্তবায়ন সম্ভব।
এহেন লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে ২০০৪ সালে বন্দরনগরী চট্টগ্রামের বুকে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে অরবিট রেসিডেন্সিয়াল স্কুল এন্ড কলেজ। সকলের আস্থা ও ভালোবাসায় এবং গৌরবময় ফলাফলের ধারাবাহিকতায় আজ ২০ তম বছরে পদার্পণ করেছে স্কুলটি।
পরিচালনা পর্ষদে রয়েছেন স্বনামখ্যাত প্রতিষ্ঠান এইচ এন এস গ্রুপ ও TESA–এর চেয়ারম্যান বিশিষ্ট শিল্পপতি মোহাম্মদ মহীদুল ইসলাম (সভাপতি), নাসা গ্রুপ এর নির্বাহী পরিচালক বিশিষ্ট শিক্ষানুরাগী মোহাম্মদ মোশাররফ হোসেন বুলবুল (সহ–সভাপতি), এবং বিশিষ্ট সমাজসেবী এবং শিক্ষানুরাগী তোজাম্মেল হক পাটোয়ারী (ট্রেজারার) সহ আরও অনেক শিক্ষাবিদ। আর যাঁর সার্বক্ষণিক তত্ত্বাবধানে সাফল্যের শিয়রে অগ্রসরমান এই বিদ্যাপীঠ, তিনি হলেন অধ্যক্ষ মুজিবুর রহমান বিএসসি(অনার্স), এমএসসি (ফলিত গণিত), বিএড (এইচ আর এম)।
স্কুল সম্মন্ধে জানতে চাইলে এর উল্লেযোগ্য নানাদিক তুলে ধরেন দুই যুগেরও অধিক অভিজ্ঞ এই শিক্ষক।
প্রশিক্ষিত শিক্ষক ও পরিকল্পিত শিক্ষা
এ প্রতিষ্ঠানে রয়েছে একদল মেধাবী উচ্চ শিক্ষিত, প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত, পরিশ্রমী, প্রাণোচ্ছল ও আন্তরিক শিক্ষক, যাঁরা বিশ্বের উন্নততর শিক্ষা পদ্ধতির অনুসারে সৃজনশীল পদ্ধতির উপর বিষয়ভিত্তিক মাস্টার ট্রেনার দ্বারা প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত। মাইক্রো টিচিং এর মত আধুনিক শিক্ষক প্রশিক্ষণের মাধ্যমে শ্রেণিতে পাঠদান সহজ, আকর্ষণীয় ও বাস্তবসম্মত করার লক্ষ্যে শিক্ষকদের দক্ষতা, পারদর্শিতা উত্তরোত্তর বৃদ্ধি করা হয়।
একাডেমিক ক্যালেন্ডার
শিক্ষাবর্ষ হচ্ছে জানুয়ারী হতে ডিসেম্বর পর্যন্ত। শিক্ষাবর্ষের শুরুতে নির্ধারিত ছুটি, সাপ্তাহিক, মাসিক এবং সেমিস্টার পরীক্ষাসমূহের তারিখ ও অন্যান্য অনুষ্ঠানাদির তারিখ সম্বলিত একাডেমিক ক্যালেন্ডার প্রণয়ন করে সেই অনুযায়ী শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়।
আধুনিক শিক্ষাপদ্ধতি
আধুনিক শিক্ষাপদ্ধতিতে শিশুরা প্রথাগত বই পুস্তকের বদলে বিভিন্ন শিক্ষা সামগ্রী ও খেলনার মাধ্যমে খেলতে খেলতে শিখবে। শিশুদের এ বয়সে তাদের মনস্তত্ত্ব জেনে তাদের নিবিড় পরিচর্যা করার কঠিন দায়িত্বে আছেন শিশুমনোবিজ্ঞানে প্রশিক্ষিত স্নেহবৎসল শিক্ষক, যারা মায়ের আদরে শিশুদের মার্জিত ও রুচিশীল ভাবে শারীরিক ও মানসিক বিকাশে সহায়তা করবেন। নিম্নশ্রেণিতে একই ক্লাসে দুজন শিক্ষিকা নিয়োজিত থাকেন। একজন পাঠদান করেন এবং অপরজন পড়া শেখানো ও লেখানোর কাজ নিশ্চিত করেন।
মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম
এই প্রতিষ্ঠানে রয়েছে সুসজ্জিত মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম। প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত শিক্ষক কর্তৃক ৬ষ্ঠ থেকে ১০ম শ্রেণী পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের প্রজেক্টরের মাধ্যমে পাঠ দান করা হয়।
পর্যালোচনা ক্লাস
শিক্ষার্থীদের যাতে গৃহশিক্ষক দরকার না হয় সে জন্য প্রতিদিন সাধারণ ক্লাস শেষে নিম্ন শ্রেণিগুলোতে পর্যালোচনা ক্লাসের (RC) ব্যবস্থা আছে। এতে পর্যায়ক্রমে শিক্ষার্থীদের কম্পিউটার শিক্ষায় ও এর ব্যবহারে সামগ্রিক দক্ষতা লাভ করে।
বিজ্ঞানাগার
তাত্ত্বিক শিক্ষার পাশাপাশি ব্যবহারিক বিজ্ঞান শিক্ষার জন্য আমাদের রয়েছে শ্রেণি অনুযায়ী সকল আধুনিক যন্ত্রপাতি সমৃদ্ধ বিজ্ঞানাগার।
স্পোকেন ইংলিশ
ইংরেজী ভাষায় কথোপকথনের জড়তামুক্ত হয়ে দক্ষতা বৃদ্ধি এবং ক্যাম্পাসের কথোপকথনের পরিবেশ ইংরেজী করার প্রাথমিক পদক্ষেপ হিসেবে শ্রেণির মান অনুযায়ী স্পোকেন ইংলিশ আমাদের শিক্ষাক্রমে অন্তর্ভূক্ত আছে। তাছাড়া, ক্যাম্পাসের স্পোকেন ইংলিশ চর্চা বাধ্যতামূলক।
নৈতিকতার প্রশিক্ষণ
ভাল মানুষ হওয়ার জন্য চাই মানবিক গুণাবলীর যথাযথ বিকাশ। কোমলমতি ছাত্র–ছাত্রীদের নৈতিকতার গুণসমূহ যেমন– অকারণে মোবাইল ফোন–কম্পিউটার ইন্টারনেট ব্যবহার না করা, মিথ্যা না বলা, সম্মান প্রদর্শন, ধর্মচর্চা, শৃংখলা, দায়িত্ববোধ, সময় সচেতনতা, পরিচ্ছন্নতা ও দৈনন্দিন জীবনে করণীয় বিষয়ে প্রতিনিয়ত দৃষ্টি আকর্ষণ করাসহ আনুষ্ঠানিকভাবে প্রশিক্ষণ কর্মসূচি পালন করা হয়।
সাংস্কৃতিক বিভাগ ও সহপাঠক্রমিক কার্যাবলী
আমাদের শিক্ষাক্রমে বিনোদনমূলক অনুষ্ঠানের অংশ হিসেবে রয়েছে ষাম্নাসিক দেয়ালিকা প্রকাশ, বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান যেমন– বিতর্ক, আবৃত্তি, চিত্রাংকন, সংগীত, ফ্যাশন শো এবং নৃত্য প্রতিযোগিতা ইত্যাদি। এছাড়াও রয়েছে জাঁকজমকভাবে বার্ষিক শিক্ষা সফর, ক্লাস পার্টি, কৃতি শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনা ও পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠান এবং জাতীয় দিবসসমূহ উদযাপন।
ডে–কেয়ার ব্যবস্থা
পারিবারিক সীমাবদ্ধতা ও আশেপাশের পরিবেশের কারণে যে সকল অভিভাবক বাসায় সন্তানদের পড়াশুনার পূর্ণাঙ্গ পরিবেশে তৈরিতে সক্ষম হচ্ছেননা কিংবা সন্তানকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারছেন না তাদের সন্তানদের জন্য ডে–কেয়ার ব্যবস্থাপনা একটি সময়োপযোগী ও কার্যকরী পদক্ষেপ।
আবাসিক ব্যবস্থাপনা
বিভিন্ন কারণে আমাদের দেশে আবাসিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের গুরুত্ব দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। যেমন : অভিভাবকদের প্রবাস জীবন, সামাজিক ও রাজনৈতিক অস্থিরতা, পারিবারিক নিয়ন্ত্রণে রাখতে না পারা, ব্যক্তিগতভাবে সময় দিতে না পারা, আশেপাশের খারাপ পরিবেশের প্রভাব, নির্ভরযোগ্য–ইন্টারনেটের কুপ্রভাব ইত্যাদি।
এ সমস্যা সমাধানকল্পে আমাদের রয়েছে সার্বক্ষণিক কড়া তদারকিসহ সুসমম্বিত আবাসিক ব্যবস্থা। এখানে প্রত্যেক ছাত্র পরিকল্পিত রুটিন অনুসরণ করে প্রতিটি ক্ষণ অতিবাহিত করে। পড়ালেখার পাশাপশি খেলাধূলা, সংস্কৃতি চর্চা ও বিভিন্ন শিক্ষামূলক কার্যক্রমের মাধ্যমে নিজেকে একজন ব্যক্তিত্ববান, দায়িত্বশীল ও সুশিক্ষিত নাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে সক্ষম হয়। এখানে ছাত্ররা টিভি, মোবাইল ফোন, কম্পিউটার এবং ইন্টারনেটের অপব্যবহার থেকে মুক্ত থাকে। অতএব, আপনার সন্তানের উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করতে আমাদের উপর আস্থা রাখূন।
করোনাকালীন শিক্ষা ব্যবস্থাপনা
এ প্রসংগে অধ্যক্ষ বলেন, করোনাকালে শিক্ষা বিপর্যয়ে ছাত্রছাত্রীদের শিক্ষাজীবন সচল রাখতে অরবিট রেসিডেন্সিয়াল স্কুল এন্ড কলেজ অনলাইন ক্লাসের আয়োজন করেছে।সরকার পরিচালিত সংসদ টিভির পাশাপাশি প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত শিক্ষকগণ ফেসবুক এবং জুম এ্যাপের মাধ্যমে নিয়মিত বিষয়ভিত্তিক পাঠদান করেছেন।ক্লাস শেষে রেকর্ডকৃত ভিডিও ক্লাস ডাউনলোড করে তা আবার দেখার সুযোগ শিক্ষার্থীদের পাঠ আত্মস্থ করতে ভীষণ সহায়ক হয়েছে।ছাত্রছাত্রীরা মাসিক পরীক্ষা, সাময়িক পরীক্ষাসহ নানা মূল্যায়ন পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছে।সরকার কর্তৃক নির্ধারিত এ্যাসাইনমেন্টও সম্পন্ন করেছে মাধ্যমিকের শিক্ষার্থীরা।
লেখাপড়ার পাশাপাশি করোনার দু:সহ সময়ে শিক্ষার্থীদের মনোবল চাঙ্গা রাখতে ও নৈতিক অবস্থান অক্ষুন্ন রাখতে আমরা আয়োজন করেছি গান, কবিতা, কুইজসহ নানা সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডের।শিক্ষকদের স্বরচিত ২১ টি গান শিক্ষকদের কন্ঠে ধারণ করে ভিডিও প্রচার করা হয়েছে।অনেক শিক্ষার্থীও এতে অংশগ্রহণ করেছে। আমরা প্রতিনিয়ত অভিভাবক এবং ছাত্রছাত্রীদের লেখাপড়া ও স্বাস্থ্যের খোঁজখর রেখেছি। সবমিলিয়ে করোনাকালীন দু:সময়ে শিক্ষার্থীদের শিক্ষাজীবন সচল রাখতে আন্তরিক প্রয়াস ছিল অরবিটের। সম্মানিত অভিভাবকবৃন্দ কর্তৃক দারুণ প্রশংসিত হয়েছে আমাদের এই শিক্ষাসেবা।
বিস্তারিত জানতে- শহর ক্যাম্পাস: ১৩২২/১৪৮৫, সিডিএ এভিনিউ,পূর্ব নাসিরাবাদ,( দৈনিক পূর্বকোণ অফিস সংলগ্ন) চট্টগ্রাম ।
ফোন: ২৫৫৩১৮৫, অধ্যক্ষ ০১৮১৯-৩৯০৫০৫, ভর্তি শাখা- ০১৯১৫-৭৫১৭৯০, ০১৮৯০-৮৭৪৬৪২
স্থায়ী ক্যাম্পাস: সন্দ্বীপ কলোনী, ১ নং ওয়ার্ড , ফতেয়াবাদ, চট্টগ্রাম সিটি কর্পেোরেশন।
ফোন: ০১৮৯৪-৯৭৫৬৭০, ০১৯১৫-৭৫১৭৯০, অধ্যক্ষ ০১৮১৯-৩৯০৫০৫
Discussion about this post