অনলাইন ডেস্ক
এবার ফ্রান্সে যুক্তরাজ্যের রাজধানী লন্ডন থেকে ফেরা এক ব্যক্তির শরীরে নভেল করোনাভাইরাসের নতুন স্ট্রেইন বা ধরনটি শনাক্ত করা হয়েছে। ফ্রান্সের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে এ খবর জানানো হয়েছে। সংবাদমাধ্যম বিবিসি আজ শনিবার এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় আরো জানায়, নতুন স্ট্রেইনের করোনা শনাক্ত হওয়া ওই ব্যক্তির শারীরিক অবস্থা ভালো রয়েছে। তবে এ ব্যাপারে আর কোনো তথ্য জানানো হয়নি।
বিবিসি জানিয়েছে, ফ্রান্সের আগে বেশ কয়েকটি দেশে করোনাভাইরাসের নতুন এই স্ট্রেইন শনাক্ত করা হয়েছে। এর মধ্যে গতকাল শুক্রবার জাপানে পাঁচজনের শরীরে এই নতুন ধরনের করোনাভাইরাস শনাক্ত করা হয়। তাঁরা সবাই যুক্তরাজ্য থেকে ফিরেছিলেন। এ ছাড়া ডেনমার্ক, অস্ট্রেলিয়া ও নেদারল্যান্ডেও এই করোনাভাইরাসটি শনাক্ত করা হয়েছে।
যুক্তরাজ্য এরই মধ্যে করোনার নতুন একটি ধরনের সংক্রমণ প্রতিরোধের জন্য চেষ্টা করছে। নতুন ধরনের ওই করোনাভাইরাস গতানুগতিক ভাইরাসের চেয়ে ৭০ শতাংশ পর্যন্ত বেশি সংক্রামক হয়ে উঠতে সক্ষম। এ নিয়ে এখনো গবেষণা চলছে।
সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে লন্ডন ও কেন্ট শহরে প্রথম নতুন ধরনের এই করোনাভাইরাসের দেখা মেলে। ডিসেম্বরে এসে লন্ডনে এই নতুন ধরনের ভাইরাসই বেশি দেখা যাচ্ছে। সংবাদ সংস্থা সিনহুয়ার খবরে বলা হয়েছে, গত ৯ ডিসেম্বরের হিসাব অনুযায়ী লন্ডনে সংক্রমণের ৬২ শতাংশই এই ভাইরাস। ইংল্যান্ডের পূর্বাঞ্চলে এটি ৫৯ শতাংশ আর দক্ষিণ-পূর্ব ইংল্যান্ডে ৪৩ শতাংশ। প্রধানমন্ত্রী বরিসের সংবাদ সম্মেলনে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে ব্রিটিশ সরকারের প্রধান বৈজ্ঞানিক উপদেষ্টা প্যাট্রিক ভ্যালেন্স এসব কথা জানান।
এদিকে, যুক্তরাজ্যে ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাসের নতুন ধরন বা রূপান্তরিত রূপ নিয়ে করণীয় বিষয়ে গত বুধবার একটি বৈঠক ডাকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানায়, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ইউরোপের আঞ্চলিক পরিচালক হ্যান্স ক্লুজ টুইট বার্তায় বলেন, ‘করোনার নতুন এই ধরনের বিষয়ে তুলনামূলক আরো ভালো তথ্য না পাওয়া পর্যন্ত ভ্রমণে সীমাবদ্ধতা আনা বুদ্ধিমানের কাজ হবে।’
যদিও, করোনার নতুন এ ধরন নিয়ে ডব্লিউএইচও নিজেদের সর্বোচ্চ সতর্কতার কথা উল্লেখ করে বলেছে, এটি মহামারি বিবর্তনের একটি সাধারণ অংশ। সংস্থাটি ভাইরাসের নতুন এই ধরন শনাক্ত করায় ব্রিটেনের প্রশংসা করছে।
এরই মধ্যে করোনার নতুন এই সংক্রমণরোধে বেশকিছু দেশ যুক্তরাজ্যের ওপর ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে।
এদিকে, ফ্রান্স সরকার দেশটির সীমান্ত বন্ধের ঘোষণা দিলেও গত বুধবার নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে নেয় এবং ভ্রমণের ক্ষেত্রে করোনা নেগেটিভ সার্টিফিকেট দেখানোর বিধিনিষেধ আরোপ করে। এ ছাড়া গত সপ্তাহে ফ্রান্সে লকডাউন তুলে নেওয়া হলেও সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, সংক্রমণের হার এখনো পর্যাপ্ত পরিমাণে কমেনি।
বিশ্বব্যাপী করোনাভাইরাসের সর্বশেষ পরিসংখ্যান জানার অন্যতম ওয়েবসাইট ওয়ার্ল্ডোমিটারের তথ্য অনুযায়ী, ফ্রান্সে এখন পর্যন্ত ২৫ লাখ ৪৭ হাজারের বেশি মানুষের করোনা শনাক্ত করা হয়েছে। এর মধ্যে মৃত্যু হয়েছে ৬২ হাজার ৪০০ জনেরও বেশি মানুষের।
Discussion about this post