বিশেষ প্রতিবেদক
স্বাস্থ্য অধিদফতরের প্রেসের সঙ্গে জড়িত লোকজনের মাধ্যমেই ফাঁস হয়েছে মেডিকেল, ডেন্টাল ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র। সব মিলিয়ে এ কাজে যুক্ত ছিল পঞ্চাশ জনের একটি সক্রিয় চক্র।
গ্রেফতার ব্যক্তিরা হলেন- প্রশ্নফাঁস চক্রের প্রধান জসিম উদ্দিন ভুঁইয়া ওরফে মুন্নু, পারভেজ খান, জাকির হোসেন ওরফে দিপু, মোহাইমিনুল ওরফে বাঁধন ও এসএম সানোয়ার হোসেন। এর মধ্যে মোহাইমিনুল ও সানোয়ার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রশ্নপত্র ফাঁসে জড়িত। গত ১৯ ও ২০ জুলাই রাজধানীর মিরপুর এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়। জসিমের কাছ থেকে দুই কোটি ২৭ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্র, দুই কোটি ৩০ লাখ টাকার চেক এবং পারভেজের কাছ থেকে ৮৪ লাখ টাকার চেক উদ্ধার করেছে সিআইডি। ফাঁস করা প্রশ্নপত্র বিক্রি করে তারা এই টাকা অর্জন করেছেন। তাদের বিরুদ্ধে সিআইডি অধিকতর তদন্ত করছে।
বৃহস্পতিবার দুপুরে মালিবাগে সিআইডির সদর দফতরে সংবাদ সম্মেলন থেকে জানানো হয় এসব তথ্য। এতে সিআইডির সাইবার অপরাধ বিভাগের উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) শাহ আলমসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করে সিআইডির এক কর্মকর্তা জানান, আটক ব্যক্তিরা বিশ্ববিদ্যালয়, মেডিকেল ভর্তি ও ব্যাংকের নিয়োগ পরীক্ষাসহ বিভিন্ন নিয়োগ পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র ফাঁস করতো। এদের মধ্যে হাসান মাহমুদ ও রাশেদুল সজিবকে গত ২২ ডিসেম্বর রাজধানীর মালিবাগ মোড় থেকে আটক করা হয়। এদের তথ্যের ভিত্তিতে বাকিদের বিভিন্ন স্থান থেকে গ্রেফতার করা হয়।
এ সময় সিআইডির সাইবার অপরাধ বিভাগের জ্যেষ্ঠ সহকারী পুলিশ সুপার সুমন কুমার দাস বলেন, ‘এখানে পঞ্চাশ জনের একটা চক্র সক্রিয় আছে। পুরো চক্রকে আইনের আওতায় আনতে আমরা কাজ করছি। প্রেসের সঙ্গে তাদের একটা যোগাযোগ ছিল। তাদের পরিবারের সদস্য কেউ কেউ প্রেসের সঙ্গে যুক্ত ছিল। প্রেসের কোনো সদস্য ও প্রশ্নপত্র প্রণয়নের সঙ্গে যারা জড়িত তাদের সঙ্গে যোগাযোগ ছিল। এর ভিত্তিতেই তারা প্রশ্নগুলো ওখান থেকে নিয়ে এসে পরবর্তী সময়ে একটা বাসায় রেখে এই কাজগুলো করত।’
প্রেসের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘১৯৮৮ সাল থেকে মেডিকেল ও ডেন্টালের প্রশ্ন ছাপা হতো স্বাস্থ্য অধিদফতরের অধীন একটি প্রেসে।’ তিনি আরও জানান, দুইভাবে ফাঁস হতো। একটি হল প্রেস থেকে প্রশ্ন ফাঁস করে বাসায় নিয়ে পড়িয়ে দিত একটি চক্র। আরেকটি চক্র প্রশ্ন পেলে বাইরে নিয়ে ডিজিটাল ডিভাইসের মাধ্যমে পরীক্ষার্থীর কাছে পৌঁছে দিত। পুরো চক্রকে সিআইডি গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়েছে।
Discussion about this post