অনলাইন ডেস্ক
ভারত বাংলাদেশের কাছে পূর্বনির্ধারিত সময়ে ভ্যাকসিন রফতানি করবে কি না তা নিয়ে গত কয়েকদিন ধরে চলছে ব্যাপক আলোচনা। ক্ষণে ক্ষণে বক্তব্য বদলাচ্ছেন এর সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা, ফলে বিভ্রান্তি বাড়ছে বিষয়টিতে। মানুষ কার কথা বিশ্বাস করবে, সত্য কোনটা তা জানতে হয়তো অপেক্ষা করতে হবে শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত। তবে গত দু’দিন নেতিবাচক খবর বেশি থাকলেও মঙ্গলবার আশার পাল্লাই বেশি ভারী দেখা যাচ্ছে। সবশেষ বিবিসি বলছে, আগামী দু’তিন সপ্তাহের মধ্যেই বাংলাদেশকে ভ্যাকসিন দেবে ভারত।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যমটিকে জানিয়েছেন, ভারতে ভ্যাকসিন প্রদান কর্মসূচি শুরুর ১৪ দিনের মধ্যেই সেটি রফতানি শুরু হবে। স্থানীয় চাহিদা মেটাতে ভারত ভ্যাকসিন রফতানি নিষিদ্ধ করেছে, এমন খবরের ভিত্তিও উড়িয়ে দিয়েছেন তিনি।
এ কর্মকর্তার কথায়, করোনাভাইরাস মহামারি মোকাবিলায় অন্য দেশগুলোকে ভারতের সহায়তার পরিকল্পনা এখনও একই পথেই রয়েছে।
তিনি বলেন, ভ্যাকসিন প্রদান শুরুর ১৪ দিনের মধ্যে আমরা দক্ষিণ এশিয়ার কয়েকটি প্রতিবেশী দেশের কাছে রফতানির অনুমতি দেবো। এর কিছু উপহার হিসেবে দেওয়া হবে, বাকিগুলো সরবরাহ করা হবে সরকার যে দামে ভ্যাকসিনগুলো কিনছে প্রায় সেই দামে।
ভারতীয় এ কর্মকর্তা বলেন, বৃহত্তম ভ্যাকসিন প্রস্তুতকারক হিসেবে প্রতিবেশীদের দেওয়া প্রতিশ্রুতি এবং বাকি বিশ্বের বিষয়ে ভারত পুরোপুরি সচেতন।
এদিকে, ভারতের কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য সচিব রাজেশ ভূষণ জানিয়েছেন, চলতি মাসের মাঝামাঝি তারা করোনা ভ্যাকসিন প্রদান কর্মসূচি শুরু করতে পারেন। তিনি বলেছেন, জরুরি ব্যবহারের অনুমতিপ্রাপ্তির ১০ দিনের মধ্যে এ কর্মসূচি শুরু হবে।
এই হিসাবে, ভারতে ভ্যাকসিন প্রদান কর্মসূচি শুরু হতে সর্বোচ্চ ১০ দিন এবং এর দুই সপ্তাহ পরে রফতানি শুরু হলে বাংলাদেশে ভ্যাকসিন আসতে পারে আগামী ২৪ দিনের মধ্যেই।
ভারতের ভ্যাকসিন রফতানি নিয়ে বিভ্রান্তি দূর করেছেন এশিয়া অঞ্চলে অক্সফেোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার তৈরি করোনা ভ্যাকসিনের উৎপাদক সিরাম ইনস্টিটিউটের প্রধানও। যদিও পরপর দুই দিন তিনি দুই রকমের কথা বলেছেন।
সিরামের সিইও আদর পুনাওয়ালা বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমকে প্রথমে বলেছিলেন, আগামী কয়েকমাস তাদের ভ্যাকসিন রফতানির অনুমতি দেবে না ভারত সরকার। অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসকে তিনি জানিয়েছিলেন, ভারতের অভ্যন্তরীণ বাজারেও ভ্যাকসিন বিক্রিতে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে তাদের ওপর।
তবে মঙ্গলবার এ ভারতীয় ব্যবসায়ী বিবিসি’কে বলেছেন, বিদেশে সরকারের করোনা নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির আওতায় ভ্যাকসিন রফতানির অনুমতি রয়েছে সিরাম ইনস্টিটিউটের। এর ফলে, চুক্তি মোতাবেক আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই বাংলাদেশ, সৌদি আরব এবং মরক্কোকে ভ্যাকসিন সরবরাহ করতে পারবেন তারা।
সোমবার আদর পুনাওয়ালা আরও জানিয়েছিলেন, সিরাম ইনস্টিটিউট শুধু বিদেশের সরকারগুলোকেই ভ্যাকসিন দিতে পারবে। এক্ষেত্রে প্রথম ১০ কোটি ভ্যাকসিন বিক্রি হবে বিশেষ দামে (২ দশমিক ৭৪ মার্কিন ডলার), এর পরেরগুলোর দাম অনেক বেশি হবে।
গণমাধ্যমের খবর অনুসারে, বাংলাদেশ ইতোমধ্যেই ভারতের কাছে তিন কোটি ভ্যাকসিনের অর্ডার করেছে। চুক্তি অনুসারে, ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু করে আগামী ছয় মাস প্রতি মাসে ৫০ লাখ করে ডোজ পাবে বাংলাদেশ। এর মূল্য হিসেবে গত রোববার অগ্রিম ৬০০ কোটি টাকা পাঠিয়ে দেওয়ার কথাও জানিয়েছে দেশের সরকার।
সূত্র: বিবিসি
Discussion about this post