‘কিছুই নয়’ বোঝাতে শূন্য শব্দটা ব্যবহার করা হয়। গণিতে শূন্যের রয়েছে নানা রকমের প্রয়োগ।
বিভিন্ন সময় পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে শূন্যের ধারণা ছিলো। প্রাচীন মিশর, মেসোপটেমিয়া সভ্যতা ও ভারতে এর প্রমাণ পাওয়া যায়। আজ আমরা শূন্য নিয়ে কিছু মজার তথ্য জানবো-
১. শূন্য হলো একইসঙ্গে একটি সংখ্যা ও অঙ্ক। এককভাবে শূন্যের কোন মান নেই, কোন সংখ্যার আগে শূন্য বসলেও তা কোন মান নির্ধারণ করে না। কোন সংখ্যার পেছনে বসলে তবেই শূন্য তার মান বাড়াতে পারে।
২. শূন্য একটি নিরপেক্ষ অংক। এটি ধনাত্মক বা ঋণাত্মক নয়। শূন্যকে বলা হয় স্বাভাবিক পূর্ণ সংখ্যা।
৩. ভারতীয় সংস্কৃতে শব্দটা হলো ‘শ্যুন্যেয়া’ যার অর্থ খালি বা ফাঁকা, এ থেকে ‘শূন্য’ এসেছে।
৪. সংকেত বা প্রতীক হিসেবে শূন্যকে ব্যবহার না করে সংখ্যা হিসেবে সফলভাবে ব্যবহার করেন প্রাচীন ভারতীয় গণিতবিদরা। গণিতবিদ আর্যভট্টকে বলা হয় শূন্যের আবিস্কারক।
৫. ইংরেজিতে ‘জিরো’ শব্দটি এসেছে ভেনিশিয় শব্দ ‘জিরো’ থেকে। এটা ইতালিয় ‘জিফাইরো’ থেকে পরিবর্তিত হয়ে এসেছে। আবার ‘জিফাইরো’ শব্দটি এসেছে আরবি শব্দ ‘সাফাইর’ বা ‘সাফাইরা’ থেকে যার অর্থ ‘সেখানে কিছু ছিল না’।
৬. ঐতিহাসিকরা বলেন গ্রিকরা ‘কিছু না’ বুঝাতে ‘ওমিক্রন’ ব্যবহার করতো। ‘ওমিক্রন’ হলো গ্রিক বর্ণমালার ১৫তমো বর্ণ যার আকৃতি ‘0’ এর মতোই।
৭. মিশরিয় চিত্রলিপিতে একটি প্রতীক ছিলো যাকে বলা হয় ‘নেফর’, এর অর্থ ‘সুন্দর’। প্রতীকটি তারা ‘শূন্য’ দিয়ে বোঝাতো।
৮. ইংরেজি বর্ণমালা ‘o’ (ও) এবং গণিতের ‘0’ (শূন্য) দেখতে দুটোই গোলাকার। পার্থক্যটা কম্পিউটারেই ভালোভাবে বোঝা যায়। ‘o’ বর্ণ দিয়ে অংক করা যাবে না। কারণ এর আকৃতি একেবারেই গোল, আর অংক ‘0’ এর আকৃতি একটু চ্যাপ্টা।
৯. কোন সংখ্যার আগে শূন্যের কোন মান না থাকলেও মোবাইলের নাম্বার শূন্য দিয়ে শুরু হয়। তবে মোবাইল নাম্বার কোন সংখ্যা নয়। মোবাইল নাম্বারের ০, ১ বা ২ প্রতিটা অংক হলো একেকটা প্রতীক।
১০. ইংরেজিতে ‘জিরো’ হলো একমাত্র সংখ্যা যার রয়েছে অনেকগুলো নাম। যেমন- নিল (nil), জিপ (zip), জিলচ (zilch), নওট (nought) ও নট (naught) ইত্যাদি।
১১. ক্রিকেটে কোন ব্যাটসম্যান শূন্য রান করলে বলা হয় সে ‘ডাক’ মেরেছে। পুরো কথাটা হলো ডাক’স এগ বা হাঁসের ডিম। আর এ ডিমের আকৃতি হলো শূন্যের মতোই।
১২. টেনিস খেলায় ‘ভালোবাসা’ মানে হলো ‘স্কোর শূন্য’। কোন খেলোয়াড়ের স্কোর শূন্য থাকলে তাকে বলা হয় ‘love’। ফরাসি শব্দ ‘লওউফ’ যার অর্থ হলো ডিম। ‘লওউফ’ থেকেই ‘লাভ’ শব্দটা এসেছে বলে ধারণা করা হয়।
১৩. আগে শূন্য বোঝাতে কেবল একটি ডট (.) চিহ্নের মতো ব্যবহার করা হতো। এটিই পরে ‘0’ রূপ পায়।
Discussion about this post