নিউজ ডেস্ক
করোনা প্রাদুর্ভাবের প্রায় ১০ মাস পর দেশে করোনার অ্যান্টিবডি টেস্টের অনুমোদন দিলো স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। রবিবার (২৪ জানুয়ারি) সচিবালয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক জানান, অ্যান্টিবডি টেস্টের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, অনেক দিনের দাবি ছিল অ্যান্টিবডি টেস্টের অনুমতি দেওয়ার। এখন এটা চালু করার অনুমতি দিয়ে দিয়েছি। আজ আপনাদের যখন বললাম তখন থেকেই এটা চালু হয়ে গেলো।
এর আগে কোভিড-১৯ বিষয়ক জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটিসহ জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা একাধিকবার অ্যান্টিবডি পরীক্ষার দাবি জানিয়ে এসেছেন। বিশেষজ্ঞরা বলেছিলেন, দেশে ভ্যাকসিন দেওয়ার আগে অ্যান্টিবডি টেস্ট চালু করা দরকার।
গত ১৭ সেপ্টেম্বর পরামর্শক কমিটিও তাদের সভায় অ্যান্টিজেন ও অ্যান্টিবডি টেস্টের ওপর গুরুত্বারোপ করে। কমিটি তাদের সভা শেষে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে তখন বলেছিল, বর্তমানে পিসিআর টেস্টের মাধ্যমে কোভিড-১৯ পরীক্ষা করা হচ্ছে, যার পরিমাণ তুলনামূলক কম। কোভিড-১৯ পরীক্ষা বৃদ্ধি করতে পারলে কোভিড-১৯ সংক্রমণ আরও বেশি শনাক্ত করার সম্ভাবনা রয়েছে। এজন্য জাতীয় পরামর্শক কমিটি অ্যান্টিজেন ও অ্যান্টিবডি টেস্টের জন্য একাধিকবার পরামর্শ দেয়।
জাতীয় পরামর্শক কমিটি মনে করে, তিন পদ্ধতিতে (পিসিআর, অ্যান্টিজেন ও অ্যান্টিবডি টেস্ট) কোভিড-১৯ পরীক্ষা কার্যক্রম পাশাপাশি থাকলে তা কোভিড-১৯ পরিস্থিতি মোকাবিলায় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
গত ১৭ সেপ্টেম্বর সরকার দেশে অ্যান্টিজেন টেস্টের অনুমতি দেয়।
এর আগে গত ৩ জুন কোভিড-১৯ বিষয়ক জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটি করোনা শনাক্তে র্যাপিড টেস্টের জন্য সুপারিশ করে। তারা আরটি পিসিআর (রিভার্স ট্রান্সক্রিপটেজ পলিমারেজ রিঅ্যাকশন) পরীক্ষার সঙ্গে সঙ্গে অ্যান্টিজেন ও অ্যান্টিবডি পরীক্ষা করার পক্ষেও মত দেন।
কমিটির সভাপতি অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ বলেন, ‘এখন সেরোসার্ভিল্যান্স নিয়ে কাজ করার সময় এসে গেছে, যার জন্য অ্যান্টিবডি টেস্ট চালু করাও প্রয়োজন। এটা করা গেলে বিশ্ব মহামারি নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি সংক্রমণ পরিস্থিতির একটি পরিষ্কার চিত্র পাওয়া যাবে।’
তিনি বলেন, ‘সংক্রমণ বুঝতে হলে অ্যান্টিবডি টেস্ট শুরু করা জরুরি। সেরোসার্ভিল্যান্স ছাড়াও অ্যান্টিবডি টেস্টের গুরুত্ব রয়েছে প্লাজমা থেরাপির জন্য।
কোভিড-১৯ ল্যাবরেটরি পরীক্ষা সম্প্রসারণ নীতিমালা বিষয়ক বিশেষজ্ঞ কমিটির প্রধান অধ্যাপক ডা. লিয়াকত আলী বলেন, ‘মহামারির সময়ে ইনফেকশন কতজনের হয়েছে, সেটা অ্যান্টিবডি টেস্ট ছাড়া বলা যায় না। তাই এ সময়ে অ্যান্টিবডি টেস্ট খুব জরুরি, নয়তো পরিসংখ্যান সঠিক হবে না। আসলে দেশে কতজন সংক্রমিত হয়েছে, আবার কতজনের শরীরে অ্যান্টিবডি গ্রো করেছে, কিন্তু পোস্ট কোভিড সিন্ড্রোমে মারা গেছেন, সেটা জানার জন্য হলেও অ্যান্টিবডি টেস্ট দরকার।
Discussion about this post