আন্তর্জাতিক ডেস্ক
মিয়ানমারের প্রেসিডেন্ট উইন মিন্ট, ক্ষমতাসীন দলের নেত্রী অং সান সু চিসহ শীর্ষ নেতাদের আটক করার পর দেশজুড়ে এক বছরের জরুরি অবস্থা জারি করেছে সেনাবাহিনী। মিয়ানমার সেনাবাহিনী নিয়ন্ত্রিত টেলিভিশনের বরাত দিয়ে এএফপি ও বিবিসি এ খবর জানিয়েছে।
মিয়ানমার টাইমসের খবরে বলা হয়েছে, সামরিক বাহিনী পরিচালিত টেলিভিশনে সম্প্রচারিত এক ভিডিও ভাষণে বলা হয়েছে, সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান সিনিয়র জেনারেল মিং অং হ্লাইংয়ের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করা হয়েছে। তিনি এক বছর ক্ষমতার কেন্দ্রবিন্দুতে থাকবেন। আর সেনাবাহিনীর সাবেক প্রধান ও ভাইস প্রেসিডেন্ট মিন্ট সুয়েকে এক বছর মেয়াদে ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
গত বছরের নভেম্বরে অনুষ্ঠিত নির্বাচনকে ব্যাপক কারচুপি আখ্যা দিয়ে এই সেনা অভ্যুত্থান বৈধতা নেওয়ার চেষ্টা করছে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী। আইনসম্মত পন্থায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার লক্ষ্যে জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছে বলে দাবি করা হয়েছে সেনাবাহিনীর বিবৃতিতে।
এদিকে, এ ঘটনার পর থেকেই মিয়ানমারজুড়ে থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। নেপিদোসহ দেশটির প্রধান প্রধান শহরে সেনা টহল দিতে দেখা গেছে। সব ব্যাংক বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
রাজধানীসহ প্রধান প্রধান শহরগুলোতে টেলিফোন ও ইন্টারনেট সেবা ব্যাহত হচ্ছে। রাষ্ট্রীয় সম্প্রচার মাধ্যম এমআরটিভি জানিয়েছে, তারা কিছু কারিগরি সমস্যার মুখে পড়েছে এবং তাদের সম্প্রচার বন্ধ রয়েছে।
বিবিসি আরো জানায়, সেনা সদস্যেরা বেশ কয়েকটি অঞ্চলের মুখ্যমন্ত্রীর বাড়িতে অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করেছে বলে জানিয়েছেন তাদের পরিবারের সদস্যরা।
বিবিসির দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সংবাদদাতা জনাথান হেড জানিয়েছেন, গত সপ্তাহে সংবিধান মেনে চলার অঙ্গীকারের কথা জানিয়েছিল সামরিক বাহিনী। এক দশকেরও বেশি সময় আগে সংবিধান তৈরি করা হয়েছিল। এরপরও এটিকে পুরো মাত্রায় সামরিক অভ্যুত্থান বলেই মনে হচ্ছে।
বিবিসির সংবাদদাতা বলছেন, সংবিধান অনুযায়ী উল্লেখযোগ্য ক্ষমতা রয়েছে সামরিক বাহিনীর, যার মাধ্যমে তারা জরুরি অবস্থা ঘোষণা করতে পারে। কিন্তু অং সান সু চির মতো রাজনৈতিক ব্যক্তিকে আটক করার ঘটনা উস্কানিমূলক এবং খুবই ঝুঁকিপূর্ণ।
মিয়ানমারে ২০১১ সাল পর্যন্ত সামরিক জান্তা প্রায় ৫ দশক ক্ষমতায় ছিল। জান্তা শাসনের সময় সু চি অনেক বছর ধরে গৃহবন্দি ছিলেন। পরের নির্বাচনে এনএলডি সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়। দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন সু চি। দেশটি আবারও সেনাশাসনের যাঁতাকলে গেল।
Discussion about this post