নিজস্ব প্রতিবেদক
খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের (খুবি) এক শিক্ষককে বরখাস্ত ও দুইজনকে অপসারণের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবিতে ষষ্ঠ দিনের মত প্রতিবাদ কর্মসূচি অব্যাহত রয়েছে। বুধবার (৩ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের একটি অংশ প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করেন।
এসময় শিক্ষার্থী ও শিক্ষকেরা বলেন, যতদিন পর্যন্ত এই তিন শিক্ষককে বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার না করা হবে ততদিন প্রতিবাদ সমাবেশ অব্যহত থাকবে।
অন্যদিকে, বেলা সাড়ে ১১টার দিকে একই দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় ১০ জন শিক্ষক টানা চতুর্থ দিনের মত অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন।
গত ২৩ তারিখে বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেটের ২১২তম সভায় শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে উস্কানি, অসদাচরণ, প্রশাসনবিরোধী কার্যক্রমসহ নানা অভিযোগ এনে বাংলা ডিসিপ্লিনের সহকারী অধ্যাপক মো. আবুল ফজলকে বরখাস্ত এবং ইতিহাস ও সভ্যতা ডিসিপ্লিনের প্রভাষক হৈমন্তী শুক্লা কাবেরী ও বাংলা ডিসিপ্লিনের প্রভাষক শাকিলা আলমকে চাকরি থেকে অপসারণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
এরই প্রতিবাদে অবস্থান কর্মসূচিতে পরিবেশ বিজ্ঞান ডিসিপ্লিনের অধ্যাপক ড. আব্দুল্লাহ হারুন চৌধুরী বলেন, যতদিন না পর্যন্ত আবুল ফজল, শুক্লা কাবেরী ও শাকিলা আলমদের চাকুরিচ্যুতির সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার না হবে ততদিন আমাদের এ প্রতিবাদ চলতে থাকবে। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে বর্তমানে একটা ভয়ের সংস্কৃতি সৃষ্টি হয়েছে। যারা অন্যায়ের প্রতিবাদ করবে তাদের চাকুরিচ্যুতি করা হবে, পদোন্নতি আটকে দেওয়া হবে।
অধ্যাপক ড. আব্দুল্লাহ হারুন চৌধুরী অভিযোগ করে বলেন, যারা আমাদের আন্দোলনের সাথে সংহতি প্রকাশ করছেন তাদেরকেও বিভিন্নভাবে ভয় দেখানো হচ্ছে। ইতোমধ্যে অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতি এ অন্যায় সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানিয়েছে। কিন্তু আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতি অত্যন্ত নির্লজ্জভাবে তারা চুপচাপ আছে। কারণ তারা বিনা ভোটে নির্বাচিত সমিতি।
অপরদিকে প্রতিবাদ কর্মসূচিতে শিক্ষার্থীদের মধ্যে বাংলা ডিসিপ্লিনের আশিক বিশ্বাস বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের এ অন্যায় সিদ্বান্ত আমরা কোনভাবে মানি না, মানবো না। খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠার ৩০ বছর হলেও খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়কে এ অঞ্চলের মানুষ যে জায়গায় চেয়েছিল, যে জায়গায় কল্পনা করেছিলো তা আজও পূরণ হয়নি। এখানে যৌক্তিক দাবির কথা বলতে গেলে বহিষ্কৃত হতে হয়।
তিনি বলেন, সেখানে অন্যায় মিশে ছিল, ব্যক্তিগত প্রতিহিংসা মিশে ছিল। এই খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন শিক্ষকদের যে চাকুরিচ্যুত করেছে তার কোনো নৈতিক ভিত্তি ছিল না। অত্যন্ত তড়িঘড়ি করে তারা এ সিদ্বান্ত নিয়েছে।
প্রতিবাদ কর্মসূচিতে তারা ২ মিনিট নীরবতা পালন করেন। এছাড়া পরবর্তী কর্মসূচি জানতে চাইলে শিক্ষার্থীরা বলেন, আগামীকাল খুলনার শিববাড়িতে নাগরিক ঐক্য পরিষদের সাথে আমরা প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করবো। যতদিন না শিক্ষকদেরকে স্বপদে পুনর্বহাল না করা হবে ততদিন আমরা আমাদের কর্মসূচি চালিয়ে যাবো।
Discussion about this post