খেলাধূলা ডেস্ক
বাংলাদেশ ক্রিকেটে ‘পয়া ভেন্যু’ বলা হয় চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামকে। ধরা হয়, সাগরিকার এই স্টেডিয়ামে খেলা মানেই বাংলাদেশের জয়। কিন্তু এই সাগরিকাই সবশেষ দুই টেস্ট ম্যাচে বিষাদ উপহার দিল টাইগারদের। নিজেদের টেস্ট ইতিহাসের অন্যতম হতাশাময় দুটি পরাজয় এই জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামেই দেখল স্বাগতিকরা।
২০১১ সালের ওয়ানডে বিশ্বকাপে মিরপুরের শেরে বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ৫৮ রানে অলআউট হওয়ার পর সাগরিকায় খেলতে নেমে পরপর দুই ম্যাচে ইংল্যান্ড ও নেদারল্যান্ডসকে হারিয়েছিল বাংলাদেশ। মূলত এরপর থেকেই সৌভাগ্যের ভেন্যু হিসেবে ধরা হয় সাগরিকার এই মাঠকে।
কিন্তু সর্বশেষ দুই টেস্ট সাগরিকার পয়া ভেন্যুর স্বীকৃতি কেড়ে নেয়ার জন্য যথেষ্ট। ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছে আজ (রোববার) অপ্রত্যাশিত এক হার তো আছেই। তার আগের টেস্টে আফগানিস্তানের মতো নবীশ দলের কাছেও এই ভেন্যুতে হেরেছে টাইগাররা।
আজ ক্যারিবীয়দের সামনে ৩৯৫ রানের বিশাল লক্ষ্য দিয়েও ম্যাচ জিততে পারেননি বাংলাদেশ। অভিষিক্ত কাইল মায়ারসের অবিস্মরণীয় ডাবল সেঞ্চুরি ইনিংসে ৩ উইকেটের অবিশ্বাস্য জয় পেয়েছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। রেকর্ডবুকে তোলপাড় করে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপে নিজেদের দ্বিতীয় জয় তুলে নিয়েছে ক্যারিবীয়রা।
টেস্ট ইতিহাসে চতুর্থ ইনিংসে সবচেয়ে বেশি রান তাড়া করে জয়ের রেকর্ডে এটি জায়গা করে নিয়েছে পঞ্চম স্থানে। আর এশিয়ার মাটিতে চতুর্থ ইনিংসে সবচেয়ে বেশি রান তাড়ায় জয়ের রেকর্ড এটিই। উপমহাদেশে অভিষেকে সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড গড়ে মায়ার্স খেলেছেন ৩১০ বলে ২০ চার ও ৭ চারের মারে ২১০ রানের ইনিংস।
বৃষ্টিবিঘ্নিত সেই ম্যাচে নষ্ট হয়েছিল অন্তত ১০৬ ওভার। তবু ম্যাচ বাঁচাতে পারেনি বাংলাদেশ। দুই ইনিংস মিলে রশিদ খানের ১১ উইকেট, রহমত শাহর সেঞ্চুরি, আসগর আফগানের জোড়া ফিফটির সুবাদে মাত্র তৃতীয় টেস্ট খেলতে নামা আফগানরা পেয়েছিল নিজেদের দ্বিতীয় জয়। যা নিঃসন্দেহে এখনও পর্যন্ত টেস্ট ক্রিকেটে আফগানিস্তানের সেরা জয়।
২০১৯ সালের সেপ্টেম্বরে হওয়া সেই ম্যাচের চতুর্থ ইনিংসে বাংলাদেশকে জয়ের জন্য ৩৯৮ রানের বিশাল লক্ষ্য ছুড়ে দেয় আফগানিস্তান। প্রথম ইনিংসে রশিদের ঘূর্ণিতে কুপোকাত হয়ে বাংলাদেশের ইনিংস থেমেছিল ২০৫ রানে। ফলে দ্বিতীয় ইনিংসের এই বিশাল লক্ষ্য তাড়া করা ছিল টাইগারদের জন্য পাহাড়সম চ্যালেঞ্জ।
তবে ম্যাচ জেতা না গেলেও, ড্রয়ের সমূহ সম্ভাবনা ছিল সাকিব আল হাসানের দলের সামনে। তাদের কাজ আরও সহজ করে দেয় বৃষ্টি। ম্যাচের শেষদিন বৃষ্টির কারণে খেলাই হয়নি প্রথম সেশনে। দ্বিতীয় সেশনে নেমে মাত্র ২.১ ওভার খেলা হতেই আবারও নামে বৃষ্টি। বাংলাদেশকে হারাতে আফগানদের তখন প্রয়োজন ছিল ৪ উইকেট।
পঞ্চমদিন মাঠে বৃষ্টির বাগড়া দেখতে দেখতে রশিদ খান বলছিলেন, অন্তত এক ঘণ্টা পেলেই বাংলাদেশকে হারাতে পারবেন তারা। হয়েছিলও তাই। দিনের শেষ সেশনে বাংলাদেশকে খেলতে দেয়া হয় এক ঘণ্টার কিছু বেশি সময়। যেখানে বাকি ছিল ১৮.৩ ওভার। কিন্তু সেটিও পার করতে পারেনি টাইগাররা। রশিদ-জহিরদের ঘূর্ণিতে ১৫.১ ওভারেই বাকি সব উইকেট হারিয়ে ম্যাচ হেরেছিল ২২৪ রানের বড় ব্যবধানে।
Discussion about this post