খেলাধূলা ডেস্ক
বাংলাদেশের নখদন্তহীন স্পিন অ্যাটাক মিরপুরের ব্যাটিং পিচে ক্যারিবীয় ব্যাটসম্যানদের তেমন কোনো পরীক্ষাই নিতে পারেনি। তবে ৪ উইকেট তুলে নিয়ে পেসারের গুরুত্ব চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিলেন আবু জায়েদ রাহি।
শুক্রবার (১২ ফেব্রুয়ারি) সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টের দ্বিতীয় দিনে নিজেদের প্রথম ইনিংসে সব উইকেট হারিয়ে ৪০৯ রান সংগ্রহ করেছে উইন্ডিজ। জবাবে ৪ উইকেট হারিয়ে ১০৫ রান তুলে দিন শেষ করেছে বাংলাদেশ। ক্যারিবীয়দের চেয়ে এখনও ৩০৪ রানে পিছিয়ে মুমিনুলরা।
প্রথমদিনই বোঝা গেছে, বাঁচা-মরার ম্যাচে স্বাগতিক বাংলাদেশ বানিয়েছে পিওর ব্যাটিং পিচ। যেখানে বল পড়ে স্লো হয়ে আসে। ফলে বাংলাদেশের স্পিনাররা টার্ন আর বাউন্স পাননি। উইন্ডিজ ব্যাটসম্যানরা অনায়াসে দেখেশুনে পিছিয়ে গিয়ে শট খেলেছেন। একাধিক পেসার না থাকার ফলও ভুগতে হচ্ছে বাংলাদেশকে। অন্যদিকে একই পিচে বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের কঠিন পরীক্ষা নিচ্ছেন ক্যারিবীয় বোলাররা।
১১৬ রানে ৪ উইকেট হারানো উইন্ডিজ তাদের প্রথম ইনিংস টেনে নিল ৪০৯ রান পর্যন্ত। ৫ উইকেট তুলে নিয়ে আগের দিনটা তবু ‘মন্দের ভালো’ কেটেছিল বাংলাদেশের। কিন্তু দ্বিতীয় দিন ক্যারিবীয় ব্যাটসম্যানরা দেখা দিলেন দানবীয় রূপে। ব্যাট হাতে বাংলাদেশি স্পিনারদের ওপর রীতিমত ছড়ি ঘুরিয়েছেন এনক্রুমা বোনার, জশুয়া দা সিলভা, আলঝারি জোসেপরা।
দিনের প্রথম সেশনটা পুরোপুরি ওয়েস্ট ইন্ডিজের বলা যায়। এই সময়ে সফরকারীরা ১০২ রান যোগ করেছে ওভারপিছু ৩.৫২ করে রান তুলে। উইকেট হারিয়েছে ১টি। ওই এক উইকেট আবার অভিষেক সেঞ্চুরির দিকে ছুটতে থাকা এনক্রুমা বোনারের। তবে তার দৌড় থেমেছে ম্যাজিক ফিগার থেকে ১০ রান দূরে থাকতেই। প্রথম সেশনে সাফল্য বলতে ওইটুকুই।
বোনারের সঙ্গে ৮৮ রানের জুটি গড়েছিলেন জশুয়া দা সিলভা। পরে আলঝারি জোসেপকে নিয়েও ১১৮ রানের দুর্দান্ত এক জুটি গড়ে তোলেন তিনি। কিন্তু তাইজুলের বলে বোল্ড হওয়ার আগে জশুয়া দা সিলভাও (৯২) সেঞ্চুরি করতে পারেননি। জোসেপও থামেন সেঞ্চুরি থেকে ১৮ রান দূরে। তবে ‘লেজ’ এর ভরসায় ৪০০ ছাড়ায় উইন্ডিজ।
বল হাতে ৪ উইকেট করে তুলে নিয়েছেন আবু জায়েদ রাহি ও তাইজুল ইসলাম। ১ উইকেট করে ঝুলিতে পুরেছেন মেহেদী হাসান মিরাজ ও সৌম্য সরকার। এর মধ্যে মিরাজ ১০০তম টেস্ট উইকেট থেকে আছেন ১ উইকেট দূরত্বে।
জবাবে স্কোর বোর্ডে ১ রান তুলতেই ওপেনার সৌম্য সরকারের উইকেট হারায় বাংলাদেশ। সৌম্য সরকার যে এখনও পূর্ণ টেস্ট ওপেনার নন, নতুন বলে তার ব্যর্থতা যেন সেটারই প্রমাণ দিল। ইনিংসের প্রথম ওভারের শেষ বলে ফ্লিক করতে চেয়েছিলেন এই বাঁহাতি। কিন্তু বল নিচু রাখতে পারেননি। ফলে শর্ট মিড-উইকেটে থাকা মেয়ার্স সহজেই ক্যাচ তালুবন্দি করেন। তৃতীয় ওভারে ফের গ্যাব্রিয়েলের আঘাত। এবার লুজ শট খেলে গালিতে থাকা বোনারকে ক্যাচ উপহার দেন নাজমুল হাসান শান্ত।
শুরুর ধাক্কা কাটিয়ে উঠার চেষ্টা করেছিলেন তামিম ইকবাল ও মুমিনুল হক। দুজনের জুটিতে আসে ৫৮। রাকিম কর্নওয়ালের বলে ড্রাইভ করতে গিয়ে উইকেটরক্ষক দা সিলভার হাতে ক্যাচ তুলে দেন মুমিনুল (২১)। ওয়ানডে স্টাইলে ব্যাটিং করতে থাকা তামিমও ইনিংস লম্বা করতে পারেননি। পরের ওভারেই জোসেপের গুড লেন্থের বলে বলে মিড উইকেটে ফ্লিক করতে গিয়েছিলেন টাইগার ওপেনার, কিন্তু বল শর্ট মিড উইকেটে থাকা মোসলের তালুবন্দি হয়। ৫২ বলে ৪ চার ও ১ ছক্কায় ৪৪ রান করেন তামিম।
৭১ রানেই ৪ উইকেট হারানো বাংলাদেশের ভরসা হয়ে আছেন মুশফিকুর রহিম ও মোহাম্মদ মিঠুন। ২৭ রানে অপরাজিত মুশফিক, ৬ রানে মিঠুন। টিকে থাকার প্রাণান্ত চেষ্টায় ৬১ বল খেলে ফেলেছেন মিঠুন।
বল হাতে উইন্ডিজের গ্যাব্রিয়েল নিয়েছেন ২ উইকেট। ১টি করে উইকেট গেছে কর্নওয়েল ও জোসেপের ঝুলিতে।
এর আগে ৫ উইকেট হারিয়ে ২২৩ রান নিয়ে প্রথম দিন শেষ করেছিল উইন্ডিজ। ৭৪ রানে অপরাজিত ছিলেন বোনার, ২২ রানে জশুয়া দা সিলভা।
Discussion about this post