লিগে বসুন্ধরা কিংসের ম্যাচ মানেই লাতিন ছোঁয়া থাকবেই। আর্জেন্টাইন ফুটবলার রাউল বেসেরা ও ব্রাজিলিয়ান রবসন রবিনিয়োর হ্যাটট্রিকে উড়ন্ত জয় পেয়েছে কিংস।
কুমিল্লার শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত স্টেডিয়ামে মঙ্গলবার হোম ম্যাচে আরামবাগকে ৬-১ গোলে বিধ্বস্ত করেছে বসুন্ধরা কিংস। কিংসের জোড়া হ্যাটট্রিকের জবাবে জমাট রক্ষণ ভেদ করে আরামবাগের জার্সিতে একমাত্র গোল আসে উচ্ছ্বাসের কাছ থেকে।
এবারের লিগে কিংস একরকম অদম্য। কাগজে-কলমে শক্তির জায়গা প্রমাণ করে চলেছে অস্কার ব্রুজনের শিষ্যরা। জয়ের নেশায় বুঁদ থাকা কিংস নবম ম্যাচে আরামবাগকে বিশাল ব্যবধানে উড়িয়ে দিয়ে নিজেদের অষ্টম জয় তুলে নিয়েছে। ম্যাচের তিন মিনিটেই লিড নেয় স্বাগতিকরা। ডানপ্রান্ত থেকে তৌহিদুল আলম সবুজের ক্রস পেয়ে হেডে গোল করেন রাউল বেসেরা।
কিংসকেও চমকে দিতেও সময় নেয়নি আরামবাগ। আরাফাত মিয়ার থ্রু পাস নিয়ন্ত্রণে নিয়ে ঠান্ডা মাথায় গোলকিপার আনিসুর রহমান জিকোকে ফাঁকি দিয়ে বল জালে জড়ান নিহাত জামান উচ্ছ্বাস। আরামবাগের জার্সিতে তার প্রথম গোলে সমতায় ফেরার উল্লাস মাতে সফরকারীরা।
এই আনন্দ বেশিক্ষণ ধরে রাখা সম্ভব হয়নি তাদের। ৩২ মিনিটে আবারও লিড নেয় কিংস। এবার জোনাথন ফার্নান্দেজের ক্রস আরামবাগের রক্ষণে বাধা পেয়ে চলে যায় রবসন রবিনিয়োর কাছে। বল নিয়ন্ত্রণে নিয়ে ড্রিবলিংয়ে জায়গা তৈরি করে ডি-বক্সের ভেতর থেকে কোনাকুনি শটে বল জালে জড়ান এই ব্রাজিলিয়ান।
ম্যাচের ৪২ মিনিটে এবার ব্রাজিলিয়ান ঢঙে গোল করে ম্যাচের ব্যবধান ৩-১ করে ফেলেন রবিনিয়ো। রিমনের পাস থেকে ডি-বক্সের অনেক বাইরে বল পেয়ে ড্রিবলিংয়ে বোকা বানিয়ে বক্সের ভেতর থেকে জাল কাঁপান এই ব্রাজিলিয়ান।
বিরতি থেকে ফিরে আরও তিনবার আরামবাগের জালে বল পাঠায় কিংস।
ম্যাচের ৬৫ মিনিটে নিজের দ্বিতীয় ও দলের চার নম্বর গোলটি করেন রাউল বেসেরা। বাম প্রান্ত থেকে রিমনের ক্রস খালিদ শাফির মাথা ছুঁয়ে পড়ে বেসেরার সামনে। সেখান থেকে গোল করতে মোটেও বেগ পেতে হয়নি। আলতো টোকায় বল জালে জড়ান তিনি।
এই গোল দিয়ে আরামবাগের হার নিশ্চিত হয়। অপেক্ষাটা ছিল হ্যাটট্রিক পূরণের। শুধু একটা না দুটো পূরণ হয়েছে কিংসের।
ম্যাচের ৭৪ মিনিটে ডি-বক্সের ভেতরে রক্ষণ থেকে ফিরে আসা বলটা জালে জড়িয়ে হ্যাটট্রিক তুলতে ভুল করেননি বেসেরা (৫-১)। কিংসের জার্সিতে এটাই বেসেরার প্রথম হ্যাটট্রিক। আর চলমান লিগে কিংসেরও এটা প্রথম হ্যাটট্রিক।
তার তিন মিনিট পর কিংসের জার্সিতে এক ম্যাচে দ্বিতীয় হ্যাটট্রিকের দেখা মিলল। এবার বেসেরার পাস পেয়ে ডি-বক্সের ভেতরে থেকে বল জালে জড়ান রবিনিয়ো। নিজের প্রথম ও লিগের চতুর্থ হ্যাটট্রিকটা আসে এই ব্রাজিলিয়ানের কাছ থেকে।
এর আগে চলমান লিগের প্রথম হ্যাটট্রিক করেন শেখ জামালের গাম্বিয়ান ফরোয়ার্ড পা ওমর জব। দ্বিতীয় হ্যাটট্রিক আসে শেখ রাসেলের নাইজেরিয়ান ওবি মোনেকের কাছ থেকে। আর আজ হলো দুটি। কাকতাল হলেও সত্য, সবগুলো হ্যাটট্রিক হয়েছে আরামবাগের বিপক্ষে।
এ জয়ে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষস্থান আরও পাকাপোক্ত করল কিংস। নয় ম্যাচে ২৫ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে আছে তারা। আর আট ম্যাচেই হেরে পয়েন্ট টেবিলের তলানিতে আরামবাগ।
Discussion about this post