লিজেন্ডস চ্যাম্পিয়নস ট্রফি নামের এ টুর্নামেন্ট শুরু হলো আজ থেকে। ১০ ওভার ১০ বলের টুর্নামেন্ট। ৬ বলের প্রথাগত ওভারের পাশাপাশি একজন বোলার ১০ বলের একটি ওভার করবেন। বাংলাদেশে এমন সংস্করণের ক্রিকেট এই প্রথম। সাবেকদের ফিটনেস মাথায় রেখে কম ওভার ও তুলনামূলক ছোট সীমানার এ টুর্নামেন্ট। কোনো দর্শক নেই, কিন্তু মাঠের রঙিন পোশাকে মনে হচ্ছিল এ যেন আরেক বিপিএল। ব্যাটিংয়ে নেমে রান তোলার তাড়া ছিল সবার। দৌড়ে রান নেওয়া কষ্টকর বলেই হয়তো বলকে সীমানাছাড়া করারই চেষ্টা ছিল সবার। বিসিবি পরিচালক ইসমাইল হায়দার মল্লিক এ টুর্নামেন্ট উদ্বোধন করার পর উঠল বিপিএলের প্রসঙ্গও।
সর্বেশষ বিপিএলের ফাইনাল হওয়ার পর কাল এক বছর পূর্ণ হয়েছে। এর মধ্যে গত বছর বিপিএল মাঠে গড়ানোর কথা থাকলেও গত অক্টোবরে বিসিবি জানিয়ে দেয়, করোনাভাইরাস মহামারির কারণে ২০২০ সালে আর বিপিএল মাঠে গড়াচ্ছে না। নতুন বছরে সাবেক ক্রিকেটারদের মিলনমেলার এ টুর্নামেন্টে তাই বিপিএলের নতুন মৌসুম নিয়ে সংবাদকর্মীরা জানতে চেয়েছিলেন বিসিবি পরিচালক ইসমাইল হায়দার মল্লিকের কাছে। তিনি জানালেন, কোভিড–১৯ পরিস্থিতির উন্নতি ঘটলে এবং সরকারের ছাড়পত্র পেলে বিপিএলের নতুন মৌসুম নিয়ে ভাবা হবে, ‘বিপিএল নিয়ে এখনো বলার মতো পরিস্থিতি হয়নি। তবে কোভিড পরিস্থিতি যদি নিয়ন্ত্রণে চলে আসে, সরকারের তরফ থেকে যখনই আমরা ছাড়পত্র পাব এবং বিদেশি ক্রিকেটাররা যখন এ দেশে আসতে আগ্রহ প্রকাশ করবে, তখন আমরা বিপিএল নিয়ে ভাবনা–চিন্তা শুরু করব।’
করোনা মহামারির কারণে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে বিপিএল পেছালেও মাঠে খেলোয়াড়দের সঙ্গে ঠিকই করমর্দন করতে দেখা গেল বিসিবি পরিচালককে। সেটা সম্ভবত সৌহার্দ্য ও সম্প্রীতির প্রকাশ থেকে। দেশের কিংবদন্তি ক্রিকেটারদের নিয়ে এ টুর্নামেন্ট প্রসঙ্গে বিসিবি পরিচালক বললেন, ‘এ উদ্যোগ যখন নেওয়া হয়, সাবেক ছয় অধিনায়ক—আকরাম ভাই, সুজন ভাই, দুর্জয় ভাই, নান্নু ভাই, সুমন ভাই, পাইলট ভাই, রফিক ভাইদের মতো তারকা যাঁরা আছেন, সবাইকে এক প্ল্যাটফর্মে জড়ো করলে এটা আসলে ক্রিকেটের প্রচারে উদ্ধুদ্ধ করবে তরুণ প্রজন্মকে। তাঁদের খেলা তো এখন আর দেখা যায় না। এখনকার প্রজন্ম তো তাঁদের খেলা দেখেনি। এমন একটা টুর্নামেন্ট কিন্তু এখন টিভিতে প্রচার হচ্ছে। বাণিজ্যিকভাবেও এটা লাভজনক নয়। কিন্তু এ উদ্যোগ খুবই ভালো। বোর্ডের তরফ থেকেও আমরা থাকতে পেরে খুবই আনন্দিত।’
মোট ছয় দলের এ টুর্নামেন্টে লিগ পর্বে দুই গ্রুপে ভাগ হয়ে অংশ নিচ্ছেন সাবেক ক্রিকেটাররা। রয়েছেন ৬ আইকন ক্রিকেটার। একমি স্ট্রাইকার্সের আইকন খালেদ মাসুদ পাইলট, এক্সপো রেইডার্সের আইকন খালেদ মাহমুদ সুজন, বৈশাখী বেঙ্গলসের আইকন মিনহাজুল আবেদীন, জা’দুবে স্টার্সের আইকন আকরাম খান, জেমকন টাইটানসের আইকন হাবিবুল বাশার ও নারায়ণগঞ্জ ওয়ারিয়র্সের আইকন নাইমুর রহমান। এ ছয় আইকন জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক। তাঁদের বাইরেও খেলছেন শাহরিয়ার হোসেন, এনামুল হক , ফারুক আহমেদ, মেহরাব হোসেনদের মতো জাতীয় দলের সাবেক ক্রিকেটাররা। আর ঘরোয়া ক্রিকেটের সাবেকরা তো আছেনই।
এই টুর্নামেন্ট থেকে অর্জিত অর্থ ব্যয় করা হবে অসচ্ছল ও বিপদগ্রস্ত ক্রিকেটারদের জন্য। ২০ ফেব্রুয়ারি ফাইনালের ফাঁকে পেশদার ক্রিকেটারদের সংগঠন কোয়াবের হাতে তুলে দেওয়া হবে এই অর্থ।
Discussion about this post