সেরাতুল মুস্তাকীম ডেস্ক
‘ইসলাম’ আরবি সালাম শব্দ থেকে উদগত। যার আক্ষরিক অর্থ শান্তি ও স্থিতিশীলতা। সালাম মহান আল্লাহর গুণবাচক নামগুলোর একটি। অন্যকে সম্ভাষণ ও অভ্যর্থনা জানানোর ইসলামী রীতি হলো সালাল বিনিময়। আবদুল্লাহ ইবনে আমর (রা.) বলেন, এক ব্যক্তি রাসুল (সা.)-কে জিজ্ঞেস করল, ইসলামের কোন কাজটি উত্তম? রাসুল (সা.) ইরশাদ করলেন, খানা খাওয়াও এবং সালাম দাও—যাকে চেনো তাকেও, যাকে চেনো না তাকেও। (সহিহ বুখারি, হাদিস : ১১)
প্রথম সালাম দেন যিনি
সর্বপ্রথম সালাম দেন প্রথম মানব ও নবী আদম (আ.)। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, আল্লাহ তাআলা আদম (আ.)-কে সৃষ্টি করে বলেন, যাও ফেরেশতাদের সালাম দাও এবং তারা তোমার সালামের কী উত্তর দেয়, মন দিয়ে শোনো। এটিই হবে তোমার এবং তোমার সন্তানদের সালাম। আদম (আ.) ফেরেশতাদের বলেন, ‘আসসালামু আলাইকুম’ (আপনাদের ওপর শান্তি বর্ষিত হোক)। ফেরেশতারা উত্তরে বলেন, ‘আসলামু আলাইকা ওয়া রহমাতুল্লাহ’, (আপনার ওপর শান্তি এবং আল্লাহর রহমত বর্ষিত হোক।’ (মিশকাত, হাদিস : ৪৬২৮)
সালাম জান্নাতিদেরও অভ্যর্থনা
জান্নাতিদের অভ্যর্থনাও হবে সালাম। আল্লাহ বলেন, ‘যারা ঈমান আনে ও সৎকর্ম করে, তাদের এমন জান্নাতে প্রবেশ করানো হবে, যার নিচে নির্ঝরিণী প্রবাহিত হবে। তাদের প্রতিপালকের নির্দেশে তারা সেখানে অনন্তকাল থাকবে। সেখানে তাদের অভিবাদন হবে সালাম।’ (সুরা ইবরাহিম, আয়াত : ২৩)
সালামের শিক্ষা
সালাম আমাদের উত্তম চরিত্র ও ভালো আচরণ শিক্ষা দেয়। কেননা রাসুল (সা.)-কে কেউ সালামের পরিবর্তে গাল দিলেও তিনি কোনো নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া দেখাননি। একবার এক ইহুদি এসে রাসুল (সা.)-কে বলল, ‘আস-সামু আলাইকুম’ অর্থাৎ আপনার মৃত্যু হোক।
আল্লাহর রাসুল (সা.) জবাবে কিছুই বললেন না। কাছেই ছিলেন আয়েশা (রা.), তিনি ইহুদির এই মৃত্যু কামনার কথা শুনে ফেলেন। মনের কষ্টে রাসুল (সা.)-কে বললেন, হে আল্লাহর রাসুল, আপনি এই ইহুদিকে কিছুই বললেন না যে; সে তো আপনাকে মৃত্যু কামনা করেছে। রাসুল (সা.) বললেন, তাকে আমি কি বলব? সে আমাকে মৃত্যুর গালি দিয়েছে। তার কথায় কি আমার মৃত্যু হয়েছে বা হবে?
আমি যদি তাকে অনুরূপ জবাব দিতাম তাহলে হয়তো বা সে এখানে মরে যেত। তাই আমি চুপ থাকলাম। চুপ থাকাতে ঝগড়াও হয়নি।
আল মাওদু অবলম্বনে।
Discussion about this post