লাল বলে এখন পর্যন্ত মাত্র ৬* ম্যাচ খেলা আফগানিস্তানের টেস্ট ক্রিকেটের গল্পটা কেবল শুরু হইছে। তবে এর মধ্যেই অনন্য এক রেকর্ড গড়ে বাকি সব টেস্ট খেলুড়ে দেশকে পিছনে ফেলে দিয়েছে তারা। মাত্র ১১ ইনিংসেই প্রথমবারের মত দলীয় সংগ্রহে ৫০০ রানের গন্ডি পার করেছে তারা। এমন কীর্তি নেই আর কোন দেশের। যাদের বিপক্ষে এই কীর্তি গড়েছে আফগানরা, আগের রেকর্ডটি ছিল সেই জিম্বাবুয়ের দখলে, তাদের লেগেছিল ১৭ ম্যাচ।
হাশমতউল্লাহ শহীদির মাইলফলকটি ছুঁয়ে ফেলার অপেক্ষায় ছিলেন আফগানিস্তান অধিনায়ক আসগর আফগান। ততক্ষণে ১৬০ ওভার খেলে ফেলেছে আফগানিস্তান। পরের ওভারের চতুর্থ বলে ১ রান নিয়েই উচ্ছ্বাসে ফেটে পড়েন হাশমতউল্লাহ। দেশের হয়ে টেস্টে প্রথম ডাবল সেঞ্চুরির আনন্দে খানিকটা দৌড়েও নেন বাঁহাতি এ ব্যাটসম্যান।
এরপরই ৪ উইকেটে ৫৪৫ রানে প্রথম ইনিংস ঘোষণা করে আফগানিস্তান। এরপর নিজেদের প্রথম ইনিংসে বিনা উইকেটে ৫০ রান নিয়ে আবুধাবি টেস্টে দ্বিতীয় দিনের খেলা শেষ করেছে জিম্বাবুয়ে।
হাশমতউল্লাহর ডাবল সেঞ্চুরিতে একটি অন্য রকম মাইলফলকের দেখাও পেল আফগানিস্তান। টেস্ট মর্যাদা পাওয়ার পর ম্যাচসংখ্যায় দেশকে দ্রুততম ডাবল সেঞ্চুরি পাইয়ে দেওয়ার দৌড়ে আফগানিস্তানকে যুগ্মভাবে শীর্ষে তুললেন তিনি।
১৯২৮ সালে টেস্ট মর্যাদা পাওয়ার পর ১৯৩০ সালে ষষ্ঠ টেস্টে এসে কোনো ব্যাটসম্যানের কাছ থেকে প্রথম ডাবল সেঞ্চুরির দেখা পেয়েছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। সাবেক ওপেনার ক্লিফোর্ড রোচ ক্যারিবিয়ানদের হয়ে প্রথম ডাবল সেঞ্চুরির মালিক। হাশমতউল্লাহ বসলেন ক্লিফোর্ড রোচের পাশেই। ২০১৮ সালে টেস্ট মর্যাদা পাওয়ার পর তাঁর সৌজন্যেই নিজেদের ষষ্ঠ টেস্টে কারও কাছ থেকে ডাবল সেঞ্চুরির দেখা পেল আফগানিস্তান।
বাংলাদেশ আছে এই দৌড়ে সবার পেছনে। ২০০০ সালে টেস্ট মর্যাদা পাওয়ার পর কোনো ব্যাটসম্যানের কাছ থেকে প্রথম ডাবল সেঞ্চুরির দেখা পেতে ১৩ বছর লেগেছে বাংলাদেশের। সেটিও আজকের দিনেই। ২০১৩ সালের এই ১১ মার্চেই গল টেস্টে বাংলাদেশ দলকে প্রথম ডাবল সেঞ্চুরি এনে দেন মুশফিকুর রহিম। সেটি ছিল বাংলাদেশের ৭৬তম টেস্ট।
বাংলাদেশের চেয়ে এক টেস্ট আগে ডাবল সেঞ্চুরির দেখা পেয়েছে ইংল্যান্ড। নিজেদের ৭৫তম টেস্টে এসে ইংল্যান্ডের হয়ে প্রথম ডাবল সেঞ্চুরিটি করেছিলেন টিপ ফস্টার।
ম্যাচসংখ্যায় দেশকে দ্রুততম ডাবল সেঞ্চুরির ইনিংস পাইয়ে দেওয়ার দৌড়ে জিম্বাবুয়েকে দুইয়ে রেখেছেন ডেভ হটন। সাবেক এ ব্যাটসম্যান ১৯৯৪ সালে জিম্বাবুয়ের হয়ে ডাবল সেঞ্চুরি করেন, সেটি ছিল জিম্বাবুয়ের ৯ম টেস্ট।
অস্ট্রেলিয়াকে ১৬তম টেস্টে প্রথম ডাবল সেঞ্চুরি এনে দেন বিলি মারডক। ১৮তম টেস্টে মার্টিন ডোনেলির কাছ থেকে ডাবল সেঞ্চুরির দেখা পেয়েছে নিউজিল্যান্ড। পাকিস্তান এদিক থেকে এগিয়ে। সাবেক উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান ইমতিয়াজ আহমেদ পাকিস্তানের ১৬তম টেস্টে প্রথম দুই শ রানের দেখা পান।
প্রতিবেশী দেশটির তুলনায় তা পেতে একটু দেরিই হয়েছে ভারতের। ৪৫তম টেস্টে ভারতকে ডাবল সেঞ্চুরি এনে দেন পলি উমরিগড়। শ্রীলঙ্কা প্রথম ডাবল সেঞ্চুরির দেখা পায় তাদের ২৫তম টেস্টে। ব্রেন্ডন কুরুপ্পু দেশটির প্রথম ডাবল সেঞ্চুরিয়ান। নিজেদের ২৬তম টেস্টে এসে অব্রে ফকনারের ব্যাট থেকে ডাবল সেঞ্চুরির দেখা পায় দক্ষিণ আফ্রিকা।
Discussion about this post