খেলাধুলা ডেস্ক
বাংলাদেশের ফুটবলে পরিচিত নাম এলিটা কিংসলি। ঢাকার ফুটবলে গোল করতে জুড়ি নেই নাইজেরিয়ান এই স্ট্রাইকারের। তবে কিংসলি এখন আর নাইজেরিয়ার নন, তিনি শুধুই বাংলাদেশের। বৈবাহিক সূত্রে কাল বাংলাদেশের নাগরিকত্ব পেয়েছেন তিনি। এর আগে কিংসলিকে বাতিল করতে হয়েছে জন্মসূত্রে পাওয়া নাইজেরিয়ার নাগরিকত্ব। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কিংসলি নিজেই।
চলতি লিগের মধ্যবর্তী দলবদলে প্রিমিয়ার লিগের শীর্ষ ক্লাব বসুন্ধরা কিংসে নাম লেখাবেন এলিটা কিংসলে। নাইজেরিয়ান হয়ে বিদেশি কোটায় নয়, বাংলাদেশি হিসেবেই খেলবেন তিনি।
বাংলাদেশের ঘরোয়া ফুটবলে বিদেশিদের মধ্যে অন্যতম সফল ধারাবাহিক এই ফরোয়ার্ড। চলতি মৌসুমে তিনি ফ্রি খেলোয়াড়। মধ্যবর্তী দলবদলে কিংসের জার্সি গায়ে দেখা যাবে এই ফুটবলারকে। কিংসের সভাপতি ইমরুল হাসান বলেন, ‘কিংসলের সঙ্গে আমাদের কথাবার্তা চলছে। সে আগ্রহী, আমরাও আগ্রহী। কয়েকদিনের মধ্যে আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হবে দুই পক্ষের মধ্যে।’
কিংসলে বাংলাদেশের নাগরিক সনদ পেয়েছেন চলতি সপ্তাহে। বাংলাদেশের জাতীয় পরিচয়পত্র, পাসপোর্ট এখনো হয়নি। নাগরিক সনদই লিগে খেলার জন্য যথেষ্ট মনে করেন ক্লাবের সভাপতি, ‘তারিক কাজীকে আমরা এই কাগজ দিয়েই খেলিয়েছি। কিংসলের ক্ষেত্রেও এটা প্রযোজ্য হওয়ার কথা। কিংসলের পাসপোর্ট খুব দ্রুত হয়ে যাওয়ার কথা।’
মধ্যবর্তী দলবদল চলবে ৭ এপ্রিল পর্যন্ত। এর মধ্যে জরুরি ভিত্তিতে আবেদন করা পাসপোর্ট কিংসের হাতে চলা আসার কথা। পাসপোর্ট হয়ে গেলে আর পেছন ফিরে তাকাতে হবে না কিংসলেকে। তখন বাংলাদেশ জাতীয় দলের জন্যও তিনি খেলার যোগ্য বিবেচিত হবেন।
কিংসের ফরোয়ার্ড লাইনে দুই ল্যাতিন আমেরিকান। দেশি স্ট্রাইকার সবুজকে থাকতে হয় সাইডবেঞ্চে। এক বছরের বেশি সময় লিগের বাইরে থাকা কিংসলের কিংসের হয়ে মাঠা নামা চ্যালেঞ্জিং। এ প্রসঙ্গে ইমরুল বলেন, ‘কিংসলে দেশের ফুটবলে খেলা অন্যতম সেরা স্ট্রাইকার। এজন্য আমরা আগ্রহ প্রকাশ করেছি। একাদশ, দলে রাখা না রাখা সম্পূর্ণ কোচের এখতিয়ার এবং খেলোয়াড়ের পারফরম্যান্সের উপর।’
এলিটা কিংসলে বাংলাদেশের ফুটবলে মুক্তিযোদ্ধা, আরামবাগ, বিজেএমসির হয়ে খেলেছেন। বিজেএমসির হয়ে লিগের সর্বোচ্চ গোলদাতাও হয়েছেন। বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দলের সাবেক ডাচ কোচ লোডভিক ডি ক্রুইফের সময় ঘরোয়া ফুটবলে দীর্ঘদিন খেলা ফুটবলারদের কয়েকজনকে বাংলাদেশের নাগরিকত্ব দিয়ে বাংলাদেশ দলে খেলানোর চেষ্টা শুরু হয়েছিল। নানা জটিলতায় সেটা আর হয়নি।
কিংসলে বাংলাদেশি মেয়ে বিয়ে করে নিজের চেষ্টাতেই বাংলাদেশি হয়েছেন। এর আগে আশির দশকে আবাহনীর শ্রীলঙ্কান ডিফেন্ডার পাকির আলীকে নাগরিকত্ব দেয়ার চেষ্টা হলেও শেষ পর্যন্ত হয়নি। বিদেশি ক্রীড়াবিদদের মধ্যে সম্মানসূচক বাংলাদেশের নাগরিকত্ব পেয়েছেন ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান ক্রিকেটার ও বাংলাদেশ জাতীয় দলের সাবেক কোচ গর্ডন গ্রিনিজ, বিশ্বখ্যাত বক্সার মোহাম্মদ আলী। ঘরোয়া ফুটবলে খেলা কোনো বিদেশি ফুটবলারের বাংলাদেশের নাগরিকত্ব গ্রহণ এটাই প্রথম।
Discussion about this post