খেলাধুলা ডেস্ক
অনভিজ্ঞ রক্ষণভাগ নিয়েই নেপাল গেছে জেমি ডে’র দল। রিয়াদুল রাফি-হাবিবুর রহমান-টুটুল হোসেন-বিশ্বনাথ-রিমনদের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ কাঠমাণ্ডুর তিন জাতির টুর্নামেন্ট।
বড় চ্যালেঞ্জের টুর্নামেন্টে নেই বসুন্ধরা কিংসের তপু বর্মন ও ইয়াসিন খান। বড় খেলোয়াড়রা না থাকায় রক্ষণে অভিজ্ঞতার অভাব দেখছেন গোলরক্ষক আনিসুর রহমান, ‘এই টুর্নামেন্টে পুরো দল ভালো না খেললে মুশকিল হয়ে যাবে। নেপাল ও কিরগিজস্তান ভালো দল। তাই রক্ষণভাগে তপু থাকলে ভালো হতো। এই ম্যাচগুলোতে অভিজ্ঞ দু-একজন রক্ষণভাগে থাকলে ভরসা পাওয়া যায়। ম্যাচ জিততে হলে যেমন গোল লাগবে, তেমনি প্রতিপক্ষকে ঠেকানোর কাজ করতে হবে রক্ষণভাগের।’ চোটের কারণে তপু দলের বাইরে। আর ইয়াসিনের ফর্ম ইদানীং ভালো যাচ্ছে না মোটেও, তাই তাঁকে বাদ দিয়েই নতুন রক্ষণ সাজিয়েছেন কোচ। দুই অভিজ্ঞ স্টপারকে ছাড়া লাল-সবুজের দলের নতুন পরীক্ষা হবে নেপাল ও কিরগিজস্তান অনূর্ধ্ব-২৩ দলের বিপক্ষে। তবে তরুণ রিয়াদুল রাফি দ্রুত জাতীয় দলের সঙ্গে মানিয়ে নিয়েছেন এবং চমৎকার খেলছেন। সাইফ স্পোর্টিংয়ে হয়েও লিগে পারফরম্যান্সের সেই ধারা বজায় রেখে জায়গা ধরে রেখেছেন জাতীয় দলে।
স্টপার পজিশনে রাফির সঙ্গী হবেন কে? হতে পারেন আবাহনীর টুটুল হোসেন বাদশা কিংবা মোহামেডানের হাবিবুর রহমান সোহাগ। টুটুল আগে থেকেই খেলছেন জাতীয় দলে, মাঝে ইনজুরির কারণে ছেদ পড়েছিল। সুতরাং লাল-সবুজের রক্ষণ সুরক্ষার ব্যাপারটা তাঁর জানা আছে। অনেক দেরিতে জাতীয় দলে ডাক পাওয়া হাবিবুর রহমান চান কোচের ভরসার প্রতিদান দিতে, ‘তপু নেই বলে রক্ষণভাগের কাজটা কঠিন হয়ে গেছে। সুযোগ পেলে আমি চেষ্টা করব তাঁর অভাব পুষিয়ে দিতে। হয়তো একটু দেরিতে জাতীয় দলের জার্সি পরার সুযোগ হচ্ছে, কিন্তু আমি কোচের কৌশলের সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার কাজ করছি। কোথায় কিভাবে প্রতিপক্ষকে ব্লক করতে হবে, সেসব নিয়ে ট্রেনিং হচ্ছে আমাদের।’
প্রতিপক্ষকে আটকে দিয়ে নিজেদের খেলার কৌশল ঠিক করা এই কোচ নতুনদের সুযোগ দেওয়ার পক্ষে, ‘তপু নেই, এটা ঠিক। তবে সব সময় সবাইকে পাওয়া যাবে, এমন আশা করাও ঠিক নয়। এক একটা পজিশনে যত বিকল্প থাকবে ততই দলের শক্তি বাড়বে। এ জন্য নতুনদেরও তৈরি রাখতে হবে। সোহাগ-রিমনরা ভালো খেলেই দলে ঢুকেছে, তারা জাতীয় দলে পারফরম করবে আশা করি।’ এই দলে দারুণ সংযোজন হলো রিমন হোসেন। বসুন্ধরা কিংসের স্প্যানিশ কোচ অস্কার ব্রুজোনের হাতে তৈরি এই লেফটব্যাক এবার ঘরোয়া ফুটবলে চমৎকার খেলে নিজেকে যোগ্য করে তুলেছেন লাল-সবুজের জার্সির।
কিন্তু ক্লাব দলের চেয়ে বাংলাদেশ দলের রক্ষণভাগ সামলানো যে বড় কঠিন। কারণ এই দলের বল পজেশন থাকে কম, মধ্যমাঠের খেলায় নেই ওরকম সৃষ্টিশীলতা আর গোল করার সামর্থ্যও ক্ষীণ। এত ঘাটতি নিয়ে একটি দল আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলতে নামলে রক্ষণভাগের ওপর চাপটা পড়ে বেশি। সেই চাপ ৯০ মিনিট ধরে সামলাতে হয়ে প্রত্যেক ডিফেন্ডারকে। বেশ কিছু দুর্দান্ত সেভ করতে হবে গোলরক্ষককে। এবার অবশ্য তারা নেপাল যাচ্ছে গোল করে ম্যাচ জেতানোর ব্রত নিয়ে। কারো চোখে আবার ফাইনালের স্বপ্ন। সেদিক থেকেও ডিফেন্ডারদের অবলম্বন করতে হবে বাড়তি সতর্কতা—আগে গোল খেয়ে পিছিয়ে পড়া যাবে না। আসলে বাংলাদেশ দলের ম্যাচ যেন ডিফেন্ডার-গোলরক্ষকের ‘দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে’ নামা। অন্যরা যে যা-ই খেলুক, তাঁদের ভালো খেলা ছাড়া কোনো গত্যন্তর নেই।
Discussion about this post