খেলাধুলা ডেস্ক
চুক্তির মেয়াদ শেষে চলতি মৌসুমের পর ফ্রি ট্রান্সফারে বিদায় নিতে যাচ্ছেন ম্যানচেস্টার সিটি তারকা সার্জিও আগুয়েরো। শেষ হচ্ছে এই আর্জেন্টাইন স্ট্রাইকারের ম্যানচেস্টার সিটির প্রায় দশ বছরের বর্ণাঢ্য ক্যারিয়ারের অধ্যায়। গেল সোমবার সিটির পক্ষ থেকে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে।
ম্যানচেস্টার সিটির ইতিহাসের সর্বকালের অন্যতম সেরা এই খেলোয়াড়ের বিদায়ের খবর শুনে কিছুটা বিস্মিত হয়েছেন কোচ পেপ গার্দিওয়ালা। স্প্যানিশ এই কোচের মতে আগুয়েরোর অভাব কখনও পূরণ করা যাবে না। গত দশ বছরে আর্জেন্টাইন তারকা ম্যানচেস্টার সিটিকে যা দিয়েছে সিটিজেনরা আজীবন স্মরণ করবে বলে দাবী করেন সিটি কোচ। গতকাল স্কাই স্পোর্টসকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এমনটাই জানান পেপ গার্দিওয়ালা। ব্রিটিশ এই সংবাদমাধ্যমকে সিটি কোচ বলেন,
“সার্জিও অপূরনীয়। তার অভাব কেউ পূরণ করতে পারবে না। আপনি সংখ্যা দেখে হয়তো বলতে পারেন তা সম্ভব, তবে ৩৬০ ম্যাচ খেলে আড়াইশোর বেশি গোল এবং অসংখ্য শিরোপা জেতা কিন্তু সহজ না।”
“সে আমাদের কিংবদন্তি। এই ক্লাবটি বছরের পর বছর ক্লাবের এই শতাব্দীর সেরা স্ট্রাইকারকে মনে রাখবে। তবে আমাদের আত্মার মধ্যে, হৃদয়ে, ভক্তদের মনে, আমাদের জনগণের ও তাঁর পাশাপাশি খেলোয়াড়দের মধ্যে আগুয়েরো অপরিবর্তনীয় হয়ে থাকবে। সব কোচই তাকে খেলাতে পছন্দ করবে। “
“সে খুবই দুর্দান্ত এবং আমি নিশ্চিত যে তার মন যদি এখনও তার মতো আগ্রাসী থাকে তবে ক্যারিয়ার আরও দু’তিন বা চার বা পাঁচ বছরের চেয়ে বেশি বাড়াতে পারবে।”
এসময় ম্যানচেস্টার সিটিতে সার্জিও আগুয়েরোর অবদানের কথা স্বীকার করে পেপ গার্দিওয়ালা ইতালির ম্যারাডোনা ও স্পেনের মেসির কথা বলেন। সিটি কোচের দাবী ইতালির নাপোলির হয়ে ম্যারাডোনা কিংবা স্পেনের বার্সেলোনার হয়ে মেসি যা করেছেন ইংল্যান্ডেও সেটাই করেছেন আগুয়েরো। পেপ গার্দিওয়ালা যোগ করে বলেন,
“ইতালিতে ম্যারাডোনা যা করেছে বা স্পেনে মেসি, আগুয়েরো ইংল্যান্ডে সেটাই করেছে। সংখ্যাই তার হয়ে কথা বলবে। ভেতরে এরকম আগুন, জয়ের ইচ্ছে আর প্রতিভা থাকলে আপনি একাই ম্যাচ জেতাতে পারেন।”
২০১১ সালে স্প্যানিশ ক্লাব অ্যাথলেটিকো মাদ্রিদ ছেড়ে সিটিতে পাড়ি জমান আগুয়েরো। এরপর আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি তাকে। সিটির ইতিহাসের অন্যতম সেরা খেলোয়াড় হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করার পাশাপাশি তিনি উপভোগ করেছেন বেশকিছু ব্যক্তিগত ও দলীয় সাফল্য।
সার্জিও আগুয়েরো ম্যান সিটির ইতিহাসের সর্বকালের সর্বোচ্চ গোলদাতা। সকল প্রতিযোগিতা মিলে ৩৮৪ ম্যাচে তিনি লক্ষ্যভেদ করেছেন ২৫৭ বার। সিটির জার্সিতে তার সেরা ও সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ গোলটি নিঃসন্দেহে এসেছিল ২০১২ সালের মে’ তে। যোগ করা সময়ের শেষ মুহূর্তে তার কল্যাণে কুইন্স পার্ক রেঞ্জার্সকে হারিয়েছিল দলটি। রুদ্ধশ্বাস জয়ে সিটি ঘুচিয়েছিল ৪৪ বছরের অপেক্ষা। ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডকে চমকে দিয়ে তারা জিতেছিল ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের শিরোপা।
Discussion about this post