খেলাধূলা ডেস্ক
কোপা দেল রে ফাইনালে বার্সেলোনার মৌসুমের প্রথম ট্রফি জয়ের পথে করেছিলেন জোড়া গোল। শিরোপা জেতার পরের ম্যাচেও একই ছন্দে লিওনেল মেসি। বৃহস্পতিবার রাতে লা লিগাতেও পেয়েছেন জোড়া গোল। সঙ্গে আছে অ্যাসিস্টও। দলের সেরা খেলোয়াড়দের দুর্দান্ত পারফরম্যান্সে ঘরের মাঠে গেতাফেকে ৫-২ গোলে উড়িয়ে দিয়েছে বার্সেলোনা।
বর্তমানে লিগ টেবিলের তিনে থাকলেও লিগ জয়ের ক্ষেত্রে বার্সেলোনার সম্ভাবনাটা দারুণ। তবে সমীকরণটা কঠিন। জিততে হবে অবশিষ্ট সব ম্যাচে। সে সমীকরণ থেকে একটা ম্যাচকে বিদায় করল বার্সা। নিজে করেছেন জোড়া গোল, লিওনেল মেসি গড়েও দিয়েছেন একটি; তাতে গেটাফেকে রোমাঞ্চকর এক ম্যাচে ৫-২ গোলে হারিয়েছে দল। ফলে লিগ জয়ের আশাটাও টিকে রইল কাতালানদের।
অথচ এই গেটাফেই ম্যাচের আগে কী ত্রাস নিয়েই না হাজির হয়েছিল বার্সার সামনে! আগের ম্যাচেই রিয়াল মাদ্রিদকে রুখে দিয়েছিল গোলশূন্যভাবে। তার ওপর মৌসুমের প্রথম দেখায় এই গেটাফেই মেসিদের প্রথম হারের বিস্বাদ দিয়েছিল। সে ইতিহাসের চোখরাঙানি তো ছিলই, তার ওপর শেষ ম্যাচেই রিয়ালের কাছে দলটি হেরে খুইয়েছিল ১৯ ম্যাচের অপরাজিত যাত্রা। বাজে ফর্ম পিছু না ছাড়ার শঙ্কাটা তাই ছিলই।
সে শঙ্কা উড়িয়ে দেওয়ার কাজটা মেসিরা করেছেন দারুণভাবেই। অষ্টম মিনিটে সার্জিও বুসকেটসের দারুণ এক রক্ষণ চেরা পাস খুঁজে পায় মেসিকে। প্রতিপক্ষ রক্ষণকে পেছনে ফেলে গোলটা বাগিয়ে নিতে কোনো সমস্যাই হয়নি বার্সা অধিনায়কের। উদ্বোধনী গোলটা অবশ্য আরও আগেই পেতে পারত বার্সা, তৃতীয় মিনিটে মেসির শটটা ক্রসবার রুখে না দিলে। তবে তার আক্ষেপ দলটির ছিল না খুব একটা।
তবে এর কিছু পরেই গেটাফে সমতা ফেরায় ম্যাচে। ১২ মিনিটে মার্ক কুকুরেইয়ার ক্রসে শট নেন রদ্রিগেজ, লক্ষ্যে না থাকলেও ক্লেমেন্ত লংলের গায়ে লেগে তা জড়ায় জালে। ২৮ মিনিটে গোল পেল বার্সা, তবে সেটাও আত্মঘাতী। নিচ থেকে আক্রমণ সাজানোর চেষ্টায় থাকা গেটাফেকে চাপে রেখেছিলেন বার্সা ফরোয়ার্ডরা, সে চাপেই কিনা গোলরক্ষককে ব্যাকপাস দিয়েছিলেন সোফিয়ান চাকলা, গোলরক্ষক জায়গা ছেড়ে এগিয়ে এসেছেন তা না দেখেই। গোলরক্ষককে ফাঁকি দিয়েই যা জড়ায় জালে।
এর কিছু পরেই ব্যবধান বাড়ান মেসি। ৩৩ মিনিটে তার শট প্রথমে গোলপোস্টে লেগে ফিরে এলেও, ফিরতি সুযোগে তা জড়ায় জালে। ৩-১ গোলে এগিয়ে যায় বার্সা।
বিরতির পরে গেটাফে ব্যবধান কমিয়ে ম্যাচ জমিয়ে তোলার ইঙ্গিত দেয়। পেনাল্টি থেকে গোলটি করেন এনেস উনাল। এরপর বলের দখল বাড়িয়ে বার্সেলোনাকেই চাপে ফেলে দেয় সফরকারীরা।
তবে ৮৪ মিনিটে রোনাল্ড আরাউহোর গোলেই শেষ হয় সব রোমাঞ্চ। মেসির কর্নার থেকে দারুণ এক হেডারে গোল করেন উরুগুইয়ান ডিফেন্ডার। যোগ করা সময়ে পেনাল্টি পায় বার্সা, মেসি হ্যাটট্রিকের দুয়ারে দাঁড়িয়েও বলটা বাড়িয়ে দেন সতীর্থ অ্যান্টোয়ান গ্রিজমানের কাছে। তার গোলেই ৫-২ স্কোরলাইন নিয়ে মাঠ ছাড়ে বার্সা।
এই জয়ে ৩১ ম্যাচে ৬৮ পয়েন্ট নিয়ে তৃতীয় স্থানে উঠে এসে শিরোপা দৌড়ে ভালোভাবেই টিকে থাকলো বার্সেলোনা। অন্যদিকে হুয়েস্কাকে ২-০ গোলে হারিয়ে আতলেতিকো মাদ্রিদ আবারও শীর্ষস্থান ফিরে পেয়েছে। ৩২ ম্যাচে তাদের অর্জন ৭৩ পয়েন্ট। রিয়াল মাদ্রিদ সমান ম্যাচ খেলে ৭০ পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে।
Discussion about this post