নিজস্ব প্রতিবেদক
দেশে চলমান করোনার পরিস্থিতির মধ্যে যেখানে করোনার প্রকোপ নেই বা কম এমন গ্রাম বা এলাকাভিত্তিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া নিয়ে আলোচনা চলছে। এতে সমর্থনও জানিয়েছেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা সচিব মো. মাহবুব হোসেনও। বৃহস্পতিবার ‘করোনা বিপর্যস্ত শিক্ষা : কেমন বাজেট চাই’ শীর্ষক ভার্চুয়াল শিক্ষা সংলাপে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তিনি এ সমর্থন জানান। তিনি বলেন, ‘এখন বোধহয় সময় এসেছে গ্রামভিত্তিক বা এলাকাভিত্তিক পলিসি নিতে হবে।’
সংলাপে শিক্ষাবিদ ও সংশ্লিষ্টরা প্রস্তাব করেন, যেসব গ্রামে বা এলাকায় করোনার সংক্রমণ নেই সেখানে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দিতে হবে। পৌরসভা বা উপজেলা সদর বাদ দিয়ে হলেও শিক্ষায় পিছিয়ে থাকা গ্রাম ও প্রত্যন্ত অঞ্চলের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া প্রয়োজন। করোনা সহজে যাবে না এমনটা মেনে নিয়েই স্বাস্থ্যবিধি ও সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে পর্যায়ক্রমে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দিতে হবে।
এই প্রস্তাবের পরিপেক্ষিতে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব মো. মাহবুব হোসেন বলেন, আমাদের পরিকল্পনা ছিল— যারা এসএসসি ও এইচএসসি সমমানের পরীক্ষার্থী তারা প্রতিদিন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আসবে। অন্য ক্লাসের শিক্ষার্থীরা একদিন করে আসবে। একেক দিন একেকটা ক্লাস নেওয়ার, কিন্তু আমরা পারিনি। মে মাস পর্যন্ত (২২ মে) শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছুটি বাড়াতে হয়েছে। আমরা চেষ্টা করছি, নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছি। আমরা আশা করছি— পরিস্থিতির উন্নতি হলে এই পদ্ধতি নিয়ে এগুতে পারবো।
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা এবং শিক্ষার্থীদের ক্ষতির বিষয়ে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব বলেন, শিক্ষার্থীদের ক্ষতি কাটাতে আমাদের সব অবকাঠামো ব্যবহার করছি। কিন্তু নির্দিষ্ট সংখ্যক শিক্ষার্থীর কাছে আমরা পৌঁছাতে পারছি না। কিন্তু শিক্ষা সকলের জন্য। যাদের আনতে পারছি না তাদের জন্য বিশেষ কর্মসূচি নিতে হবে।
সচিব আরও বলেন, ‘আমরা সারা বাংলাদেশের জন্য একটা পলিসি নিয়েছি। ঢাকা শহরের একজন শিক্ষার্থীর যত এক্সেস আছে চর এলাকার একজন শিক্ষার্থীর সেইটা নেই। কিন্তু তারও একটা সুবিধা রয়েছে, সেখানে করোনার ততটা প্রকোপ নেই। সেই বিষয় ও বাস্তবতাকে কাজে লাগিয়ে শিক্ষার্থীদের নেটওয়ার্কের মধ্যে আনতে পারি।’
মো. মাহবুব হোসেন বলেন, ‘শিক্ষার্থীর সঙ্গে শিক্ষকের ইন্টার্যাকশনের সুযোগ রেখেছিলাম। সেটি সাময়িকভাবে বন্ধ করেছি। অ্যাসাইনমেন্ট কার্যক্রম শুরু করেছিলাম। সেটি বন্ধ করেছি। একজন শিক্ষক যেনও প্রতিটি শিক্ষার্থীর সঙ্গে যোগাযোগ রাখে তার একটি ফ্রেমওয়ার্ক আমরা তৈরি করছি। ’
এলাকাভিত্তিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার বিষয়ে সংলাপে আলোচকরা বলেন, ‘জাতীয় টেকনিক্যাল পরামর্শক কমিটি’র মত নিয়ে বিভাগ ও জেলা পর্যায়ে কমিটি গঠন করতে হবে। আঞ্চলিক কমিটি জাতীয় কমিটির সঙ্গে পরামর্শ করে সিদ্ধান্ত নিতে পারবে কোন এলাকায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া যাবে। করোনা পরিস্থিতির ওপর নির্ভর করে স্বাস্থ্যবিধি ও সামাজিক দূরত্ব মেনে পর্যায়ক্রমে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার প্রস্তাব উঠে আসে গণস্বাক্ষরতা অভিযান আয়োজিত সংলাপে।
Discussion about this post