নিউজ ডেস্ক
মাহে রমজানের শেষ জুমার দিনটি ‘জুমাতুল বিদা’ নামে পরিচিত। আরবি শব্দ ‘জুমুআ’ এর বাংলা অর্থ শুক্রবার আর ‘বিদা’ অর্থ শেষ।
শুক্রবার (৭ এপ্রিল) চট্টগ্রামে দিনটি ইবাদত–বন্দেগি ও জিকির-আসকারের মাধ্যমে পালন করছেন ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা। জুমার নামাজ শেষে মহান আল্লাহর দরবারে ক্ষমা প্রার্থনা ও রহমত কামনা করেন মুসল্লিরা।
জুমাতুল বিদার মধ্য দিয়ে পবিত্র মাহে রমজানকে এক বছরের জন্য বিদায় সম্ভাষণ জানানো হয়। জমিয়তুল ফালাহ মসজিদ, আন্দরকিল্লা শাহী জামে মসজিদ, নবাব ওয়ালি বেগ খাঁ জামে মসজিদ, শেখ বাহার উল্লাহ শাহী জামে মসজিদ, চন্দনপুরা জামে মসজিদ সহ বিভিন্ন মসজিদে জুমার নামাজ আদায় করেন মুসল্লিরা।
খুতবায় রমজান মাসের ফজিলত ও ইবাদতের গুরুত্ব ব্যাখ্যাসহ বিশেষ দোয়া করা হয়। নামাজ শেষে দেশ ও জাতির কল্যাণ এবং মুসলিম উম্মাহর ঐক্য ও শান্তি কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করার পাশাপাশি করোনা মহামারি থেকে সবাইকে রক্ষার জন্য দোয়া করা হয়।
জুমার নামাজ অপরিহার্যভাবে জামাতের সঙ্গে আদায় করা আবশ্যক বিধায় একাকি পড়ার বিধান নেই। এদিন মুমিন মুসলমানদের ইমানি সম্মিলন হয়। এদিন এমন একটি সময় আছে যে সময় মুমিন বান্দার মোনাজাত ও ইবাদত আল্লাহ বিশেষভাবে কবুল করেন। এ সময়টি হলো দ্বিতীয় খুতবার আজানের সময় থেকে সূর্যাস্তের পূর্ব পর্যন্ত।
হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত এক হাদিসে রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, নিশ্চয়ই তোমাদের রব বলেছেন, বনি আদমের প্রত্যেকটি নেক-আমলের সওয়াব দশগুণ থেকে সাতশত গুণ পর্যন্ত দেওয়া হয় শুধু রোজা ছাড়া। কেননা রোজা শুধুই আমার জন্য, আর আমি নিজেই এর প্রতিদান দেবো।
আর নিশ্চয়ই রোজাদারের মুখের গন্ধ আল্লাহর কাছে মেশ্ক আম্বারের চেয়েও বেশি প্রিয়। তোমাদের কারো রোজা থাকা অবস্থায় যদি কেউ তার সঙ্গে জাহেলের মতো আচরণ করে তাহলে সে বলে দেবে, আমি একজন রোজাদার (সহিহ আল-বোখারি, হাদিস: ৫৯২৭, সহিহ মুসলিম, হাদিস ১১৫১, মুসান্নেফে ইবনে আবি শাইবা, হাদিস: ৮৮৯৪, মুসনাদে আহমাদ: ৯৭১৪)। আর জুমার দিনের মাহাত্ম্য সম্পর্কে হজরত আবু হুরায়রা (রা.) বর্ণিত এক হাদিসে রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, সূর্যোদয়ের মাধ্যমে যে দিনগুলো হয় তার মধ্যে সর্বোত্তম দিন হলো জুমার দিন।
এই দিনে হজরত আদমকে (আ.) সৃষ্টি করা হয়েছিল এবং এই দিনেই তাকে জান্নাতে প্রবেশ করানো হয়েছিল এবং এই দিনেই তাকে পৃথিবীতে পাঠানো হয়েছিল। আর এদিনের মধ্যে এমন একটি সময় আছে, যখন কোনো মুসলমান নামাজরত অবস্থায় দোয়া করলে অবশ্যই তার দোয়া কবুল করা হয় (সুনানে তিরমিজি, হাদিস: ৪৯১)। রমজান মাসে রোজা রাখা অবস্থায় জুমার দিনের নিশ্চিত দোয়া কবুলের শেষ সুযোগ হিসেবে জুমাতুল বিদা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
Discussion about this post