নিজস্ব প্রতিবেদক
কোভিড-১৯ এর সূচনা থেকে করোনা রোগীদের প্রধান চাহিদা হলো উচ্চমাত্রার অক্সিজেন প্রবাহ। একজন করোনা রোগীর মিনিটে ৫০- ১০০ লিটার অক্সিজেনের প্রয়োজন হয়, যা হাইফ্লো ন্যাজাল ক্যানোলার মাধ্যমেই দেওয়া সম্ভব।
এ ক্যানোলার বাজারমূল্য ২-১০ লাখ টাকা। এ কারণে পৃথিবীর অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেরও বিভিন্ন গবেষণা সংস্থা ও প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়গুলো কম মূল্যের হাইফ্লো ন্যাজাল ক্যানোলা তৈরি করার চেষ্টা করছে।
প্রিমিয়ার ইউনিভার্সিটির ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ কমমূল্যের হাইফ্লো ন্যাজাল ক্যানোলা তৈরি করেছে। এ ক্যানোলা দিয়ে মিনিটে ৫০-৭০ লিটার অক্সিজেন একজন করোনা রোগীকে দেওয়া সম্ভব। এ অক্সিজেনের ঘনত্ব ২০-৫৪ শতাংশ। ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের চেয়ারম্যান টুটন চন্দ্র মল্লিকের তত্ত্বাবধানে ক্যানোলাটি তৈরি করেছেন বিভাগের শেষ বর্ষের তিন শিক্ষার্থী মোহাম্মদ মাহফুজুল হক, জিতু দাশ ও নুরুল আজিজ।
বৃহস্পতিবার (২৭ মে) বেলা ১টায় প্রিমিয়ার ইউনিভার্সিটির উপাচার্য কার্যালয়ে আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন সমাজবিজ্ঞানী, একুশে পদকপ্রাপ্ত শিক্ষাবিদ ও উপাচার্য প্রফেসর ড. অনুপম সেনকে ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের তৈরি হাইফ্লো ন্যাজাল ক্যানোলাটি প্রদর্শন করা হয়।
তিনি বলেন, করোনা রোগীদের জীবন রক্ষা করার জন্য দেশের হাসপাতালগুলো উচ্চমূল্যে হাইফ্লো ন্যাজাল ক্যানোলা বিদেশ থেকে আমদানি করছিল। এতে রোগীদের চিকিৎসা-খরচ অনেক বেড়ে যাচ্ছিল। তাই দেশীয় প্রযুক্তি ব্যবহার করে কমমূল্যের হাইফ্লো ন্যাজাল ক্যানোলা তৈরির প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়েছিল। প্রিমিয়ার ইউনিভার্সিটির ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থীরা সম্প্রতি এ ধরনের ক্যানোলা তৈরি করে খুবই গুরুত্বপূর্ণ ও প্রশংসনীয় কাজ করেছে।
তিনি ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের কমমূল্যের হাইফ্লো ন্যাজাল ক্যানোলা তৈরির জন্য ধন্যবাদ জানান।
এ ক্যানোলা প্রজেক্টের তত্ত্বাবধায়ক টুটন চন্দ্র মল্লিক বলেন, কমদামে হাইফ্লো ন্যাজাল ক্যানোলা তৈরির প্রধান চ্যালেঞ্জ হলো অক্সিজেনের প্রবাহের সঙ্গে সঙ্গে অক্সিজেনের ঘনত্ব, আদ্রতা ও তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করা। এ বিষয়গুলো যাচাই-বাছাই করার জন্য প্রকৌশলী ও চিকিৎসকের সমন্বয় প্রয়োজন।
তিনি উল্লেখ করেন, এ প্রজেক্টে মেডিক্যাল এক্সপার্ট হিসেবে সহায়তা করেছেন চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ডা. মোহাম্মদ চৌধুরী।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন প্রিমিয়ার ইউনিভার্সিটির ট্রেজারার প্রফেসর একেএম তফজল হক, রেজিস্ট্রার খুরশিদুর রহমান, ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সহকারী অধ্যাপক সাইফুদ্দিন মুন্না, কমমূল্যের হাইফ্লো ন্যাজাল ক্যানোলাটির উদ্ভাবক বিভাগের শেষ বর্ষের তিন শিক্ষার্থী মোহাম্মদ মাহফুজুল হক, জিতু দাশ ও নুরুল আজিজ।
Discussion about this post