নিজস্ব প্রতিবেদক
করোনা পরিস্থিতির কারণে প্রায় ১৫ মাস ধরে বন্ধ রয়েছে দেশের সব শিক্ষা-প্রতিষ্ঠান । অ্যাসাইনমেন্ট, টিভি, অনলাইনসহ বিভিন্ন উপায়ে শিক্ষার ক্ষতি কাটিয়ে উঠার চেষ্টা করলেও তাতে খুব একটা সফলতা আসেনি।
বন্ধ হয়ে গেছে অনেক বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। বেকার হয়েছেন অনেক শিক্ষক কর্মচারিরাও। শিক্ষা সংশ্লিষ্টরা এ অবস্থাকে মহাবিপর্যয় আখ্যা দিয়ে করোনার কারণে ক্ষতিগ্রস্ত শিক্ষাখাতের অপূরণীয় ক্ষতি পূরণে আসন্ন বাজেটে শিক্ষাকে সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়ে বরাদ্দের দাবি জানিয়েছেন।
আসন্ন বাজেট করোনায় শিক্ষার যে যে ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি প্রভাব পড়েছে তা বিবেচনায় নিয়ে সুস্পষ্টভাবে বরাদ্দ দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন শিক্ষক নেতারা। শুধু বরাদ্দ বাড়ানোই নয়, সেটার গুণগত ব্যয় হওয়ার বিষয়টিতেও সর্বাধিক গুরুত্ব দেয়ার পরামর্শ দিয়েছেন শিক্ষা সংশ্লিষ্টরা।
স্বাধীনতা শিক্ষক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ শাহজাহান আলম সাজু বলেন, যে সমস্ত শিক্ষার্থীরা ঝরে গিয়েছে তাদেরকে আর্থিক প্রণোদনার মাধ্যমে হলেও ফিরিয়ে আনতে হবে। তাদের মানসিক স্বাস্থ্যের দিকে নজর দেওয়ার উপর গুরুত্বারোপ করেন তিনি।
এ বিষয়ে শিক্ষা বিশেষজ্ঞ ও গণস্বাক্ষরতা অভিযানের নির্বাহী পরিচালক রাশেদা কে চৌধুরী বলেন, করোনা মহামারীর নেতিবাচক প্রভাবগুলো বিবেচনায় নিয়ে একটি প্রণোদনা প্যাকেজের আওতায় যথাযথ বাজেট বরাদদ্দ প্রয়োজন। একই সঙ্গে সেই প্রণোদনা প্যাকেজ যেন যথাযথভাবে ব্যবহৃত হয় তার জন্য মনিটরিং নিশ্চিত করতে হবে বলেও জানান এই শিক্ষাবিদ।
জাতিসংঘের শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সংস্কৃতিবিষয়ক সংস্থা ইউনেস্কোর পরামর্শ অনুযায়ী, একটি দেশের শিক্ষা বরাদ্দ জাতীয় বাজেটের ন্যূনতম ২০ শতাংশ হওয়া জরুরি। যা হবে জিডিপির আকারের ৬ শতাংশ।
জানা গেছে, বাংলাদেশে টাকার অঙ্কে প্রতিবছরই কয়েক হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ বাড়ে শিক্ষাখাতে। কিন্তু মোট বাজেটের অনুপাতে প্রতিবছরই কমে। ২০১৭-১৮ অর্থবছরে শিক্ষায় বরাদ্দ ছিল ৪৩ হাজার ৬২৯ কোটি টাকা। যা মোট বাজেটের ১৩.২৪ শতাংশ। ২০১৮-১৯ অর্থবছরে বরাদ্দ বাড়লেও মোট বাজেটের আনুপাতিক হারে তা কমে দাঁড়ায় ১২ দশমিক ৫৫ শতাংশে। ২০১৯-২০ অর্থবছরেও টাকার অঙ্কে বাড়লেও আনুপাতিক হারে আরো কমে দাঁড়ায় ১১ দশমিক ৬৮ শতাংশে। আর চলতি অর্থবছরে করোনা মহামারীর মধ্যেও শিক্ষায় আগের বছরের তুলনায় বাড়ে মাত্র শূন্য দশমিক শূন্য এক শতাংশ।
আগামী অর্থবছরেও বাজেটে শিক্ষাখাতে বরাদ্দ বাড়বে, কিন্তু তা মোট বাজেটের তুলনায় কত শতাংশ হবে সেটায় এখন দেখার বিষয়।
Discussion about this post