অনলাইন ডেস্ক
রাজেশ ভাট নামে ভারতের আহমেদাবাদের প্রধান দমকল কর্মকর্তা অনেকের মতোই মনে করতেন যে, একবার করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে গেলে শরীরে যে অ্যান্টিবডির জন্ম হয় তার ফলে দ্বিতীয়বার আক্রান্ত হওয়ার সুযোগ খুব কম। কিন্তু দ্বিতীয়বারও তিনি এপ্রিলে করোনায় আক্রান্ত হন। প্রথমবার আক্রান্ত হওয়ার ৩০ দিনের মাথায় তিনি দ্বিতীয়বার আক্রান্ত হন।
ভয়াবহ দ্বিতীয় ঢেউয়ের সময় আক্রান্ত হয়ে ভাটকে ১৩দিন হাসপাতালে থাকতে হয়েছিল গুরুতর ফুসফুসের সংক্রমণের জন্য। প্রথমবার করোনায় আক্রান্ত হওয়ার সময় তিনি বাড়িতে কোয়ারেন্টিনে থেকেই সুস্থ হয়েছিলেন।
একবার আক্রান্ত বা টিকা নেওয়ার পর আক্রান্ত না হওয়ার সাধারণ ধারণা থাকাই দ্বিতীয়বার সংক্রমণের ঘটনায় আহমেদাবাদ ও গুজরাটে অনেকেই দ্বিধায় পড়ে গেছেন। যদিও দ্বিতীয় সংক্রমণের ঘটনা খুব বেশি ঘটছে না এবং যারা আক্রান্ত হয়েছেন তাদের সংক্রমণ ছিল মাঝারি।
সম্প্রতি এই বিষয়ে একটি গবেষণা চালিয়েছে গুজরাট বায়োটেকনোলজি রিসার্চ সেন্টার (জিবিআরসি)। তারা কম্পিউটার সিমুলেশনের মাধ্যমে এই গবেষণা চালায়। তাদের গবেষণা প্রতিবেদনটি এখনও কোনও জার্নালে প্রকাশিত হয়নি এবং পিয়ার-রিভিউ চলছে। এতে বলা হয়েছে, আগের সংক্রমণ বা টিকা নেওয়ার পর শরীরে যে অ্যান্টিবডির জন্ম হয় সেটিকে পাশ কাটাতে পারে ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট।
গবেষণা অনুসারে, করোনাভাইরাসে ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টে দুটি অ্যামিনো এসিড নেই। তাই ভাইরাসের স্পাইক প্রোটিনে ই১৫৬জি রূপান্তরিত হয়। করোনার স্পাইক প্রোটিন মানবদেহে আবদ্ধ থাকা অবস্থায় এই সর্বোচ্চ পরিবর্তনের কথা জানান দেয়। ভ্যারিয়েন্টটিতে এই পরিবর্তনের ফলে তা অ্যান্টিবডিকে পাশ কাটাতে পারে। কারণ অ্যান্টিবডি ভাইরাসের যে প্রতিলিপিকে স্মরণ করতে পারে সেটির সঙ্গে ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের সামঞ্জস্য থাকে না।
তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অ্যান্টিবডিকে পাশ কাটিয়ে সংক্রমিত হওয়ার ঘটনা খুব বেশি না। ভারতীয় চিকিৎসক ড. অমিত প্রজাপতি জানান, এপ্রিল-মে মাসে তারা দ্বিতীয়বার আক্রান্ত হওয়া মাত্র একজনকে পেয়েছেন।
তিনি বলেন, আমাদের বিভাগে দুই ডোজ টিকা নেওয়ার পরও আক্রান্ত হওয়া মাত্র একজন রোগী পাওয়া গেছে। তাই এই গবেষণাকে একটি সতর্ক বার্তা হিসেবে দেখা উচিত। যাতে করে অ্যান্টিবডি তৈরি হলেও নিজেদের সুরক্ষার বিষয়টি আমরা যেনও অগ্রাহ্য না করি। সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া
Discussion about this post