শিক্ষার আলো ডেস্ক
সম্মানজনক এক্সেমপ্লারি রিসার্চ অ্যাওয়ার্ডে ভূষিত হয়েছেন সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই) প্রবাসী বাংলাদেশি শিক্ষক জিনাত রেজা খান । একাডেমিক নৈতিকতার প্রসারে অনন্য অবদান রাখা শিক্ষক কিংবা গবেষকদের প্রতিবছর এই সম্মাননা প্রদান করে থাকে বিশ্ববিদ্যালয়ভিত্তিক সংগঠন ইউরোপিয়ান নেটওয়ার্ক ফর একাডেমিক ইন্টেগ্রিটি। বিশ্বের খ্যাতনামা ৩৫টি বিশ্ববিদ্যালয়ের অংশগ্রহণে এই সংগঠনটি পরিচালিত হয়।
জিনাত খান দুবাইয়ের ইউনিভার্সিটি অব ওলংগংয়ের সহকারী অধ্যাপক। সেখানে তিনি সাইবার নৈতিকতা ও তথ্যবিজ্ঞান বিষয়ে পড়ান। তিনি দুই যুগের বেশি সময় ধরে একাডেমিক নৈতিকতাবিষয়ক গবেষণা ও এর প্রসারের সঙ্গে জড়িত। সহজ করে বললে একাডেমিক ইন্টেগ্রিটি বা একাডেমিক নৈতিকতা হলো শিক্ষাক্ষেত্রে নৈতিকতার শিক্ষা। এটি শিক্ষাজীবনে একধরনের ভিত্তি হিসেবে কাজ করে, যা আমাদের নৈতিকতার চর্চা শেখায়। পড়াশোনা বা জ্ঞান অর্জনের সময় যেকোনো ধরনের অসদুপায় অবলম্বন করা থেকে নিরুৎসাহিত করে, যা একই সঙ্গে সমাজের জন্য একজন ভবিষ্যতের দায়িত্বশীল নাগরিক হিসেবেও গড়ে তোলে।
হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটি, কেমব্রিজ ইউনিভার্সিটিসহ বিশ্বের বিভিন্ন নামীদামি বিশ্ববিদ্যালয়ে একাডেমিক নৈতিকতা বিষয়ে সেমিনার, সম্মেলন ও কর্মশালা পরিচালনা করেছেন জিনাত। এ ছাড়াও দ্য অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি প্রেসসহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও গবেষণা সংস্থার সম্পাদনা পর্ষদে কাজ করার অভিজ্ঞতা রয়েছে জিনাত খানের। ২০১৯ সালে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে নিজ উদ্যোগে ‘শিক্ষাক্ষেত্রে সততা ও নৈতিকতা’বিষয়ক একটি সিম্পোজিয়ামের আয়োজন করেন তিনি।
ইউএইতে একাডেমিক নৈতিকতাবিষয়ক গবেষণায় জিনাত খানকে অগ্রগামী হিসেবে বিবেচনা করা হয়। ২০১৪ সালে এই বিষয়ের ওপর তিনি পিএইচডি ডিগ্রি লাভ করেন। গবেষক ও শিক্ষক হিসেবে তাঁর বেশ বর্ণাঢ্য পেশাজীবন। মধ্যপ্রাচ্যে তিনি প্রায় ২০ বছর ধরে শিক্ষকতা করছেন। এ ছাড়া তিনি ২০০৫ সাল থেকে একাডেমিক নৈতিকতাবিষয়ক গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছেন। এ বিষয়ের ওপর জিনাতের প্রায় ৮০টি গবেষণাপত্র রয়েছে, যা বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সাময়িকী ও বইয়ে প্রকাশিত হয়েছে। ইউএইতে একাডেমিক নৈতিকতাবিষয়ক গবেষণায় অগ্রগামী প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর একাডেমিক ইন্টেগ্রিটি ইন দ্য ইউএইর প্রতিষ্ঠাতা সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন তিনি।
জিনাত রেজা খান সব সময় বিশ্বাস করেন, সমাজের সব শ্রেণির মানুষের জন্য পড়াশোনা করার অধিকার রয়েছে। তবে তিনি মনে করেন, পড়াশোনা অথবা শিক্ষাগ্রহণের সঙ্গে নৈতিকতার চর্চা না থাকলে মানুষের জ্ঞান কিংবা দক্ষতা অর্থহীন হয়ে পড়ে। তাঁর মতে, আমাদের প্রচলিত শিক্ষাব্যবস্থায় প্রায়ই নৈতিকতার চর্চা নিয়ে আলোচনা হলেও এটি সব সময় বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয় না। কিন্তু শিক্ষাব্যবস্থায় নৈতিকতার চর্চা নিশ্চিত না করা গেলে এটির ক্ষতিকর প্রভাব সমাজের সবাইকে ভোগ করতে হবে।
Discussion about this post