বর্তমান সময়ের প্রেক্ষাপটে চাকরি পাওয়া যেমন একটা বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে, তেমনি সরকারি চাকরি পাওয়া আরও কঠিন। বর্তমান সময়ে পুলিশ ডিপার্টমেন্টে অফিসার পদে দুভাবে নিয়োগ হয়ে থাকে। একটা বিপিএসসির পরীক্ষায় অংশগ্রহণের মাধ্যমে, অন্যটা সরাসরি পুলিশ ডিপার্টমেন্ট কর্তৃক সাব–ইন্সপেক্টর পদে নিয়োগের মাধ্যমে। বর্তমান সমাজে সাব–ইন্সপেক্টর চাকরির গুরুত্ব কোনো অংশে কম নয়।
দ্বিতীয় শ্রেণির চাকরির মধ্যে এটি সম্মান ও সেবাদানের দিক থেকে প্রথম স্থান দখল করে আছে বলে আমি মনে করি। এবার আসি আসল কথায়। ইতিমধ্যে প্রাথমিকভাবে স্বাস্থ্য পরীক্ষায় যাঁরা নির্বাচিত হয়েছেন, তাঁদের লিখিত পরীক্ষা আগামী ১৬, ১৭ ও ১৮ জুন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। এখন এই বিষয়ে আমার কিছু অভিজ্ঞতা বলছি। আমার শিক্ষাজীবনের সর্বশেষ পরীক্ষা, অর্থাৎ স্নাতকোত্তর শেষ না করতেই চাকরিটা আমার কাছে ধরা দিয়েছিল। কীভাবে এর প্রস্তুতি নিয়ে ছিলাম, চলুন বলা যাক।
ইংরেজি, বাংলা রচনা ও কম্পোজিশন
১. এ অংশ ভালো করার জন্য মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক প্রবন্ধগুলো দেখা যেতে পারে।
২. সাম্প্রতিক ঘটনার দিকে লক্ষ রাখতে হবে।
৩. জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বিষয়ে, অর্থাৎ, তাঁর জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত ও তাঁর সংগ্রামী জীবন সম্পর্কে জানতে হবে।
৪. ভাবসম্প্রসারণের জন্য নবম-দশম শ্রেণির রচনা পার্টের বোর্ড বইটি দেখলে হবে।
৫. ইংরেজির জন্য Phrase and idioms, Preposition, Right form of verb বিষয়গুলো দেখতে হবে। এ ক্ষেত্রে প্রফেসরের English for competitive exam বইটি সহায়ক হবে বলে মনে করি।
৬. অনুবাদ অংশে ভালো করার জন্য ইংরেজি পত্রিকা থেকে নিজে নিজে বাংলা করার চেষ্টা করতে হবে। এ ছাড়া ‘মাসিক সম্পাদকীয় সমাচার’ নামে একটি বই পাওয়া যায়, যাতে অনুবাদগুলো সুন্দর করে ছোট আকারে দেওয়া থাকে। এটাও পড় যেতে পারে।
৭. সর্বোপরি ফ্রি হ্যান্ডরাইটিংয়ে দক্ষতা থাকলে আরও ভালো করা সম্ভব। Composition or Essay writing–এর সময় অযথা, অবাঞ্ছিত শব্দ ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকতে হবে।
সাধারণ জ্ঞান ও পাটিগণিত
১. সাধারণ জ্ঞান অংশে পত্রিকা পড়ার কোনো বিকল্প নেই। সাম্প্রতিক সবচেয়ে যে বিষয়ে আলোচনা বেশি হয়েছে, সেই বিষয়ে ভালো ধারণা থাকতে হবে। যেমন: রোহিঙ্গা ইস্যু, নিউজিল্যান্ডে হামলা, উত্তর কোরিয়া ইত্যাদি। এ ছাড়া বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তন ও তার প্রভাব। আন্তর্জাতিক চুক্তি, জঙ্গি সংগঠনের নাম, গোয়েন্দা সংস্থার নাম, আন্তর্জাতিক অঙ্গনে পুলিশ, জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে পুলিশ। এ ছাড়া টিকা আকারে প্রফেসরের সাব–ইন্সপেক্টর নিয়োগ গাইডে পাওয়া যাবে।
২. পাটিগণিত অংশের জন্য একটাই সাজেশন, আর সেটা হলো প্রফেসরের বিসিএসের লিখিত গণিত বইটি। আমিও এটা পড়েছিলাম। শুধু পাটিগণিত অংশটুকু করবেন।
পাটিগণিত থেকে ঐকিক নিয়ম, শতকরা, লসাগু, গসাগু, অনুপাত, সমানুপাত, সুদ, লাভক্ষতি বিষয়ে দেখতে হবে। এ ছাড়া বীজগণিত অংশে সরল আসতে পারে।
মনস্তত্ত্ব
এই অংশে ২৫ নম্বরে ২৫ পাওয়া খুব সহজ। এ অংশের জন্য কারেন্ট অ্যাফেয়ার্স পড়তে হবে। তা ছাড়া ১. Correct Spelling ২. Mental Ability ৩. বিপরীত ও সমার্থক শব্দ, আইকিউ, সম্পর্ক নির্ণয়, সংখ্যা চিহ্নিত, ধারা, টীকা ইত্যাদি আসতে পারে।
সর্বোপরি যে বিষয়টি আপনাকে সফলতার দ্বারপ্রান্তে নিয়ে যাবে, তা হলো আপনার নিজের ওপর আস্থা। হোক ছোট কিংবা বড়, সব প্রশ্নের উত্তর লিখে আসবেন।
লেখক: সাব–ইন্সপেক্টর, ঢাকা মহানগর পুলিশ, ঢাকা।
Discussion about this post