অনলাইন ডেস্ক
বিধিনিষেধ অমান্য করে বিনা প্রয়োজনে ঘর থেকে বের হলেই জরিমানাসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক (ডিসি) মোহাম্মদ মমিনুর রহমান।
তিনি বলেন, সরকারি আদেশ অমান্য করে হোটেল-রেঁস্তোরাসহ অন্য ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান খোলা রাখলে জরিমানা ও ডাবল জরিমানার পাশাপাশি প্রতিষ্ঠান সিলগালা করে দেওয়া হবে। সড়কে ভাড়ায় চালিত যানবাহনের বিরুদ্ধেও নেওয়া হবে ব্যবস্থা।
মঙ্গলবার (৬ জুলাই) সকালে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে ডিসি এসব সিদ্ধান্তের কথা জানান।
সকাল থেকে জেলা প্রশাসনের ১৪ জন ও বিআরটিএর ২ জনসহ ১৬ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে র্যাব, পুলিশ, বিজিবি ও আনসার বাহিনীর সদস্যদের নিয়ে নগরে শুরু হয়েছে যৌথ অভিযান। বুধবার (৭ জুলাই) পর্যন্ত অভিযান চলমান থাকবে। করোনার সংক্রমণ রোধে মানুষকে ঘরে রাখতে সরকার কঠোর লকডাউনের সময় ১৪ জুলাই পর্যন্ত বর্ধিত করেছে।
ডিসি বলেন, মাস্ক পরাসহ শতভাগ স্বাস্থ্যবিধি না মানার কারণে করোনার সংক্রমণ মাত্রাতিরিক্ত হারে বাড়ছে।
গত ২৪ ঘণ্টায় চট্টগ্রামে করোনায় ৯ জনের মৃত্যুর পাশাপাশি আক্রান্ত হয়েছে ৬৬২ জন। মন্ত্রিপরিষদ কর্তৃক ১ জুলাই থেকে সপ্তাহব্যাপী কঠোর লকডাউন ঘোষণা করার পর বিধিনিষেধ বাস্তবায়নে জেলা প্রশাসনের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। আমরা মানুষকে ঘরে রাখতে চাই। কিন্তু করোনার সংক্রমণকে ভয় না করে বিভিন্ন অজুহাতে ও বিনা প্রয়োজনে তারা ঘর থেকে বের হচ্ছেন। প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে হোটেল-রেস্তোরাঁসহ অন্যান্য প্রতিষ্ঠান খোলা রাখছেন। যৌথ অভিযানে তাদের অজুহাত দেওয়ার সুযোগ নেই।
জেলা প্রশাসক বলেন, ১-৪ জুলাই পর্যন্ত ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বন্ধ ছিল। ৫ জুলাই থেকে এসব প্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার পর টাকা উত্তোলন ও অন্যান্য মিথ্যা অজুহাতে মানুষ ঘর থেকে বের হচ্ছে। মানুষ জড়ো হওয়ার কারণে করোনার সংক্রমণ দিনের পর দিন বাড়ছে।
মানুষকে সচেতন করার জন্য জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ৬টি গাড়িতে মাইক বসিয়ে নগরের অলিগলিতে প্রচার-প্রচারণা কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে। অতি জরুরি প্রয়োজন ছাড়া রাস্তায় বের হলেই পথচারীকেও জরিমানা করা হবে। আমরা সবাই মিলে একসঙ্গে কাজ করলে কঠোর লকডাউন বাস্তবায়ন করতে পারব।
চট্টগ্রাম জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, গত ২৪ ঘণ্টায় চট্টগ্রামে ১ হাজার ৮৯০টি নমুনা পরীক্ষায় করোনা শনাক্ত হয়েছে ৬৬২ জনের। এর মধ্যে নগরে ৪৪৯ জন এবং উপজেলায় ২১৩ জন। এ নিয়ে মোট আক্রান্ত ৬১ হাজার ৫৮৯ জন। এইদিন করোনায় ৯ জন মারা গেছেন। এর মধ্যে ৭ জন উপজেলায় এবং ২ জন নগরে। ১৪ উপজেলার প্রায় প্রতিটিতেই বেড়েছে সংক্রমণ। দক্ষিণ চট্টগ্রামের লোহাগাড়া উপজেলায় ১০ জন, সাতকানিয়ায় ১ জন, বাঁশখালীতে ৯ জন, আনোয়ারায় ৬ জন, চন্দনাইশে ২ জন, পটিয়ায় ৮ জন ও বোয়ালখালীতে ১০ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে গতকাল। উত্তর চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়ায় ১৩ জন, রাউজানে ২০ জন, ফটিকছড়িতে ৩২ জন, হাটহাজারীতে ২১ জন, সীতাকুণ্ডে ৪১ জন, মিরসরাইতে ৩৮ জন ও সন্দ্বীপে ২ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে।
Discussion about this post