নিজস্ব প্রতিবেদক
শিক্ষার্থীদের বিশ্বায়নের এই যুগে চাকরির বাজার উপযোগী করে গড়ে তুলতে বদলে যাচ্ছে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অনার্স ও মাস্টার্সের কারিকুলাম। এর পাশাপাশি চালু হচ্ছে কর্মমুখী ও বৃত্তিমূলক কোর্স। প্রশিক্ষণের মাধ্যমে শিক্ষকদের দক্ষ করে গড়ে তোলা হবে এসব কোর্স পড়ানোর জন্য। কারিকুলাম তৈরির সম্ভাব্যতা যাচাইয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে ১৫ সদস্যের একটি উচ্চপর্যায়ের কমিটি গঠন করেছে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
জানা গেছে,শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনির সভাপতিত্বে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের কারিকুলাম কর্মমুখী করতে গত ১ এপ্রিল একটি ভার্চুয়াল সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় বিস্তারিত আলোচনা শেষে অনার্স ও মাস্টার্স কোর্সে কর্মমুখী ও পেশাগত শিক্ষাকার্যক্রম প্রবর্তনের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়কে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
এদিকে, গত ২৩ জুন গতানুগতিক ধারা পরিবর্তন করে কর্মমুখী এবং বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সঙ্গে মিল রেখে দ্রুত কর্মসংস্থানমুখী একটি কারিকুলাম তৈরি করতে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগসহ সরকারি চার সংস্থাকে নির্দেশ দেয় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়। সেখান থেকে শিক্ষার দুই বিভাগের সচিব, বাংলাদেশ রফতানি অঞ্চল কর্তৃপক্ষ এবং জাতীয় দক্ষতা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষকে দ্রুত যুগোপযোগী কারিকুলামের পরিকল্পনা সংক্রান্ত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়।
মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিব মো. মাহবুব হোসেন জানান, বর্তমানে অনার্স ও মাস্টার্সের সিলেবাসের সঙ্গে সঙ্গে শিক্ষার্থীদের স্কিল ডেভেলপমেন্ট (দক্ষতার উন্নয়ন) করা যায় কি না, এটি বর্তমান শিক্ষাকার্যক্রমের সঙ্গে ইন্টিগ্রেট (একীভূত করা) করা যায় কি না, তার সম্ভাব্যতা যাচাই করা দরকার। আইনগত ও কাঠামোগত পরিবর্তন করতে হলে সেটাও করা হবে।
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের কারিকুলাম কর্মমুখী করতে সভায় অংশ নেওয়া বিশিষ্টজনরা বলেন, দেশের বিভিন্ন জেলায় পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় আছে। সেখানে মেধাবীরা ভর্তির সুযোগ পাচ্ছেন। তবে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির অযোগ্য শিক্ষার্থীদের কলেজগুলো যেভাবে পাঠদান করছে, সেটি সঠিক মানের হচ্ছে না। বিপুলসংখ্যক শিক্ষার্থীকে অনার্স বা মাস্টার্স ডিগ্রি দেওয়ার তো দরকার নেই।
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় সনদধারী বেকার তৈরি হচ্ছে মন্তব্য করে তারা বলেন, উন্নত দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো শিক্ষার্থীদের ঢালাওভাবে উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত করে না। কারণ, কোনো অর্থনীতিই বিপুল সংখ্যক অনার্স-মাস্টার্সধারীকে কর্মসংস্থানের সুযোগ দিতে পারে না। কোনো শিক্ষার্থীর হাতে যখন অনার্স ও মাস্টার্স ডিগ্রির সনদ থাকে, তখন তিনি সমাজে নিজের মানমর্যাদা নির্ধারণ করে ছোটখাটো কোনো কাজ করেন না।
Discussion about this post