নিজস্ব প্রতিবেদক
করোনা পরিস্থিতির কারণে ২০২১ সালের এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার বিষয়ে সিদ্ধান্ত জানাতে চলতি সপ্তাহে সংবাদ সম্মেলনে আসবেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও শিক্ষাবোর্ড সূত্রে এমন তথ্য জানা গেছে।
জানতে চাইলে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বোর্ডের সমন্বয়ক ও ঢাকা শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর নেহাল আহমেদ সোমবার (১২ জুলাই) গণমাধ্যমে বলেন, এসএসসি ও এইচএসসি দুটি পাবলিক পরীক্ষার বিষয়ে শিক্ষামন্ত্রী শিগগির ব্রিফিং করবেন। কী ধরনের সিদ্ধান্ত আসতে পারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এ বিষয়ে বিস্তারিত মন্ত্রী জানাবেন।
করোনা পরিস্থিতি উন্নতি না হলে সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়ে বিকল্প পদ্ধতিতে মূল্যায়ন করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে। সেই ঘোষণা দিতে পারেন শিক্ষামন্ত্রী। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এসএসসি ৬০ দিন ও এইচএসসি ৮৪ দিন সরাসরি ক্লাস করিয়ে পরীক্ষা নিতে হলে কমপক্ষে আগস্টের শুরুতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলতে হবে। কারণ ৬০ দিন ক্লাস করোনার পর পরীক্ষার আগে ১৫ থেকে ২০ দিন সময় দিতে হবে প্রস্তুতির জন্য। আবার পরীক্ষা নিতে কমপক্ষে ২৫ দিন সময় লাগবে। অন্যদিকে এসএসসি পরীক্ষা শেষ হওয়ার পর ২০ থেকে ২৫ দিন বিরতি দিয়ে এইচএসসি পরীক্ষা শুরু করতে হবে।
পরীক্ষা না নিতে পারলে বিকল্প চিন্তা করছে এ সংক্রান্ত গঠিত বিশেষজ্ঞ কমিটি। কমিটিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, বুয়েট, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় এবং বাংলাদেশ পরীক্ষা উন্নয়ন ইউনিটের (বেডু) বিশেষজ্ঞরা কাজ করছেন।
ঈদের পর পর পরীক্ষা নিয়ে শিক্ষার্থী-অভিভাবকদের উদ্বেগ দূর করতে পরীক্ষার বিকল্প কী কী হতে পারে তার রোডম্যাপ প্রকাশ করবেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি।
জানতে চাইলে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব মো. মাহবুব হোসেন বলেন, যেহেতু আপাতত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা যাচ্ছে না, তাই যত বিকল্প পদ্ধতি আছে সেগুলোর প্রস্তুতি শেষ করে রাখছি। যখন যেটা প্রয়োগ করা যায়, সেটাই বাস্তবায়ন করা হবে।
জানা গেছে, কমিটির একাধিক প্রস্তাব আছে। এর মধ্যে একটি হচ্ছে, রচনামূলক বা সৃজনশীল প্রশ্ন (সিকিউ) বাদ দিয়ে কেবল বহু নির্বাচনী প্রশ্নে (এমসিকিউ) পরীক্ষা নেওয়া। বিষয় ও পূর্ণমান (পরীক্ষার মোট নম্বর) কমিয়ে পরীক্ষা নেওয়া। এক্ষেত্রে প্রতি বিষয়ের দুই পত্র একটিতে একীভূত করা।
পাশাপাশি ২০০ নম্বরের জায়গায় ১০০ নম্বরে পরীক্ষা নেওয়া হবে। কিন্তু এই উভয়ক্ষেত্রেই করোনা পরিস্থিতির উন্নতি জরুরি। অর্থাৎ সংক্রমণ ১০ শতাংশের নিচে নেমে এলে স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করে পরীক্ষা নেওয়া হবে। আর স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিতে কেন্দ্রের সংখ্যা বর্তমানের তুলনায় দ্বিগুণ করে এই পরীক্ষা নেওয়া হবে। ইতোমধ্যে আরও একটি দিক ছড়িয়ে পড়েছে। সেটি হচ্ছে, আগের ফল এবং অ্যাসাইনমেন্টের মূল্যায়নের ওপর এসএসসি ও এইচএসসি শিক্ষার্থীদের গ্রেড দেওয়া।
এর মধ্যে এসএসসির সম্পর্কে বলা হচ্ছে, জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট (জেএসসি) পরীক্ষার ফলের ৫০ শতাংশ এবং অ্যাসাইনমেন্টের ৫০ শতাংশ ফলাফল নিয়ে ফল প্রস্তুত করা হতে পারে। আর এইচএসসির ক্ষেত্রে বলা হচ্ছে, শিক্ষার্থীর এসএসসির ফলের ৫০ শতাংশ, জেএসসির ২৫ শতাংশ এবং অ্যাসাইনমেন্টের ফলের ২৫ শতাংশ সমন্বয় করে ফল প্রস্তুত করা হতে পারে।
এই বছর মার্চ মাস থেকে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ শুরুর পর অনলাইনে পরীক্ষা নেওয়ার জন্য দুটি কমিটি করা হয়। এরমধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে অনলাইনে পরীক্ষা নেওয়ার অনুমতি মিললেও মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকে অনলাইনে পরীক্ষা নেওয়া সম্ভব নয় বলে জানিয়ে দিয়েছেন এ সংক্রান্ত কমিটির প্রধান এবং আন্তঃশিক্ষা বোর্ডের সমন্বয়ক ও ঢাকা শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর নেহাল আহমেদ।
Discussion about this post