শিক্ষার আলো ডেস্ক
আজ তাজউদ্দীন আহমদের ৯৭তম জন্মদিন। ১৯২৫ সালের এই দিনে (২৩ জুলাই) গাজীপুরের কাপাসিয়ার দরদরিয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন বাংলাদেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অনুপস্থিতিতে মুক্তিযুদ্ধকে এগিয়ে নিয়ে যেতে আজীবন রাজনীতিবীদ তাজউদ্দীন আহমেদের অবদান ছিল অসামান্য। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে ভারতে গিয়ে প্রবাসী সরকার গঠনের চিন্তা করেন তাজউদ্দীন আহমেদ। ৪ এপ্রিল দিল্লিতে তিনি ইন্দিরা গান্ধীর সঙ্গে আনুষ্ঠানিক আলোচনা করেন। ১০ এপ্রিল তিনি আগরতলায় সরকার গঠন করার উদ্যোগ নেন।
তাজউদ্দীন আহমেদ ছাত্রজীবনেই রাজনীতিতে জড়ান। ১৯৪৩ সালে মুসলিম লীগের রাজনীতিতে প্রত্যক্ষভাবে যুক্ত হন। পরের বছরই তিনি বঙ্গীয় মুসলিম লীগের কাউন্সিলের সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হোন। ১৯৪৮ সালের ৪ জানুয়ারি গঠিত পূর্ব পাকিস্তান ছাত্রলীগের (বর্তমানে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ) অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন তাজউদ্দীন।
১৯৫০ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে বিএ (সম্মান) ডিগ্রি লাভ করেন বাংলাদেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী। রাষ্ট্রভাষা আন্দোলনের সর্বদলীয় সংগ্রাম পরিষদের সদস্য হিসেবে তিনি ভাষা আন্দোলনের সময় গ্রেপ্তার হোন। ১৯৫১ থেকে ১৯৫৩ সাল পর্যন্ত পূর্ব পাকিস্তান যুবলীগের নির্বাহী পরিষদের সদস্য ছিলেন তিনি। এর প্রতিষ্ঠাতা সদস্যও তিনি। ১৯৫৩ থেকে ১৯৫৭ সাল পর্যন্ত তিনি ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের সংস্কৃতি ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক ছিলেন, পরে সাধারণ সম্পাদক হিসেবে নির্বাচিত হোন। তিন মেয়াদে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন তাজউদ্দীন আহমদ।
১৯৬৪ সালে রাজনৈতিক বন্দি হিসেবে কারাগারে থাকা অবস্থায় এলএলবি পাস করেন। ১৯৬৪ সালে তিনি আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও ১৯৬৬ সালে সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হোন। ১৯৭০ সালে তৃতীয়বারের মতো আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পদে নির্বাচিত হোন তিনি।
তাজউদ্দীন আহমদ মুক্তিযুদ্ধকালীন বাংলাদেশের প্রথম সরকার গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন যা “মুজিবনগর সরকার” নামে অধিক পরিচিত। তিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় বাংলাদেশ সরকারের প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন।
২২শে ডিসেম্বর তাজউদ্দীন আহমদ, সৈয়দ নজরুল ইসলামসহ বাংলাদেশ সরকারের নেতৃবৃন্দ ঢাকায় প্রত্যাবর্তন করেন। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর শেখ মুজিবুর রহমান পাকিস্তানের কারাগার থেকে মুক্ত হয়ে ফিরে এলে তাজউদ্দীন আহমদ প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে সরে দাঁড়ান। পরে তিনি অর্থ ও পরিকল্পনা মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্বভার গ্রহণ করেন।
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু খুন হওয়ার পর তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে ৩ নভেম্বর ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে জাতীয় আরও তিন নেতা আবুল হাসনাত মোহাম্মদ (এএইচ) কামরুজ্জামান, এম মনসুর আলী ও সৈয়দ নজরুল ইসলামের সঙ্গে তাজউদ্দীনকেও হত্যা করা হয়।
Discussion about this post