প্রফেসর ড. আবু রেজা মুহাম্মদ নেজামুদ্দিন নদভী
সরকারী বিশ্ববিদ্যালয় গুলোতে অধ্যয়নে ক্রমবর্ধিষ্ণু চাহিদা ও আসনের সীমাবদ্ধতার বিপরীতে বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠা ও সম্প্রসারণ একটি অনিবার্য বাস্তবতা।
এই বাস্তবতাকে বিবেচনায় নিয়ে বর্তমান সরকারও অনেক যাচাই-বাছাই করে অনেক বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়কে অনুমোদন দিয়েছে এবং কঠোর মনিটরিংয়ে রেখেছে। বিশ্বের সেরা ও প্রসিদ্ধ বিশ্ববিদ্যালয় গুলোও বেসরকারী উদ্যোগে পরিচালিত।
সারা বিশ্বের মত আমাদের দেশেও উচ্চ শিক্ষার ক্ষেত্রে বেসরকারী উদ্যোগ সর্বমহলে সমাদৃত এবং একিিট সফল প্রচেষ্টার নাম, একটা কল্যাণময় নাম। এখন উচ্চ শিক্ষা গ্রহণে অসংখ্য মেধাবী ছাত্র-ছাত্রীর প্রথম পছন্দ বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়। বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের মাধ্যমে উচ্চ শিক্ষা প্রদান সারাদেশে একটা বিপ্লব সাধন করেছে। আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় চট্টগ্রাম (আইআইইউসি) এই বিপ্লবের প্রথম সারির অংশীদার।
আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় চট্টগ্রাম উচ্চশিক্ষার জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে একটি বহুলপরিচিত বিশ্ববিদ্যালয়। চট্টগ্রাম শহর থেকে ২২ কিলোমিটারের দূরত্বে কুমিরায় ৪৫ একর জমির উপর নিজস্ব ক্যাম্পাসে প্রায় সাড়ে ৭ লক্ষাধিক বর্গফুট জায়গায় ৪২টি ভবনে আইআইইউসি’র শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। তিন শতাধিক সার্বক্ষণিক শিক্ষকসহ প্রায় চারশত শিক্ষক এই বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষা প্রদান করছেন।
দেশি-বিদেশীসহ এই বিশ্ববিদ্যালয়ে দশ হাজার ছাত্রছাত্রী অধ্যয়নরত। ইউজিসি’র মূল্যায়ন চিত্রে বাংলাদেশের প্রাইভেট ইউনিভার্সিটির মধ্যে শীর্ষ ৯ এর অন্যতম এবং চট্টগ্রামে ১ম স্থানে অবস্থান করছে।
১৯৯৫ সালে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রমের সূচনা হয়েছিল আইআইইউসি’র মালিকানাহীন একটি অপরিসর ভবনে।
যেসব গুণী ব্যক্তিত্ব ও চট্টল-মনীষার মহৎ উদ্যোগে আজকের পরিপূর্ণ আন্তর্জাতিক বিশ্ববিদ্যালয় তার ঐতিহাসিক পটভূমি, নেপথ্যের উদ্যোক্তাদের নাম আইআইইউসি’র বর্তমান ছাত্র-শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কাছে এখনো অজানাই রয়ে গেছে। স্বাধীনতা বিরোধী যুদ্ধাপরাধীদের একটি দলই এই বিশ্ববিদ্যালয়টি করেছে মর্মে ভুল ও বিকৃত সত্যকে প্রতিষ্ঠিত করার অপচেষ্টা চালানো হয়েছে। আইআইইউসি’র সূচনালগ্ন থেকে আজ পর্যন্ত প্রত্যক্ষ-পরোক্ষ প্রায় সকল ঘটনাপ্রবাহের আমি সম্পৃক্ত-সাক্ষী ও জ্ঞাতজন।
চট্টগ্রামে একটি ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার চট্টগ্রামবাসীর দীর্ঘদিনের লালিত স্বপ্নপূরণের পথিকৃৎ ব্যক্তিত্ব ছিলেন চট্টল মনীষা মাওলানা মনিরুজ্জামান ইসলামাবাদী। তাঁর স্বপ্নকে আলোর মুখ দেখাতে অগ্রসেনানী আলোকবর্তিকার মত ভূমিকা পালন করেন সর্বজননন্দিত মানবহিতৈষী বায়তুশ শরফের মরহুম পীর সাহেব মাওলানা মুহাম্মদ আবদুল জব্বার (রাহ.)।
তাঁর আন্তরিক উদ্যোগে সর্বপ্রথম ১৯৯২ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর বায়তুশ শরফ ইসলামী গবেষণা প্রতিষ্ঠানে চট্টগ্রামে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার অনিবার্য গুরুত্ব বিষয়ে এক সেমিনার আয়োজন করা হয়।
পীর সাহেব হুজুরের সভাপতিত্বে সেমিনারে চট্টগ্রামের তৎকালীন শীর্ষস্থানীয় শিক্ষাবিদ ও গুণীজনদের মধ্যে মঞ্চে আসন অলংকৃত করেছিলেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি উপমহাদেশের খ্যাতিমান ইতিহাসবেত্তা মরহুম প্রফেসর ড. আবদুল করিম, চট্টগ্রাম ইসলামী সমাজ কল্যাণ পরিষদের সাবেক সভাপতি মরহুম মাওলানা মুহাম্মদ শামসুদ্দিন, মরহুম প্রিন্সিপ্যাল রেজাউল করিম চৌধুরী, মরহুম প্রফেসর ড. মুঈনুদ্দিন আহমদ খান, মরহুম মাওলানা মুমিনুল হক চৌধুরী, মরহুম মুহাম্মদ বদিউল আলম প্রমুখ। এই সেমিনারের ঐতিহাসিক গুরুত্ববহ আউটপুট ছিল মাওলানা মুহাম্মদ আবদুল জব্বার (রাহ.)-কে আহবায়ক করে ৬১ সদস্যের ’ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় চট্টগ্রাম’ বাস্তবায়ন কমিটি।
চট্টগ্রাম জেলা পরিষদসহ বিভিন্ন স্থানে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় চট্টগ্রাম বাস্তবায়ন কমিটির একাধিক সেমিনার অনুষ্টিত হয়। দীর্ঘ পথ-পরিক্রমা শেষে গঠন করা হয় চট্টগ্রাম ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় ট্রাস্ট। মাওলানা আবদুল জব্বার (রাহ.)-কে ট্রাস্টের সভাপতি করা হয় । ১৯৯৫ সালের ১৯ এপ্রিল ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় চট্টগ্রামের বোর্ড অব ট্রাস্টের উদ্যোগে চট্টগ্রাম স্টেশন রোডস্থ হোটেল মিসকায় আয়োজিত সুধী সমাবেশে পীর সাহেব হুজুরের বক্তব্য এখনো আমার হৃদয়ে মননে মস্তিষ্কে গেঁথে আছে।
তিনি বলেছিলেন, “যে লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে এই ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় চট্টগ্রাম প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ তা বাস্তবায়নে যেন ব্যত্যয় না হয়। আর আমার বক্তব্য স্পষ্ট, এই বিশ্ববিদ্যালয় উম্মাহর জন্য হলে আমি আছি আর কোন দল বা গোষ্ঠীর জন্য হলে আমি নেই।” তিনি তাঁর প্রজ্ঞা কিংবা রুহানী শক্তির মাধ্যমে উপলব্ধি করতে পেরেেিছলেন যে একটি রাজনৈতিক গোষ্ঠী আইআইইউসি-কে কুক্ষিগত করার অশুভ তৎপরতায় লিপ্ত হতে পারে।
হুজুরের এই দিব্য ইংগিত ৬ মার্চ ২০২১ সালে আমি বোর্ড অব ট্রাস্টীজের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব নেয়ার আগ মুহূর্ত পর্যন্ত হাড়ে হাড়ে টের পেয়েছি। উল্লেখ্য, ঐ সময়ে বায়তুশ শরফের মরহুম পীর সাহেবকে ট্রাস্টের সভাপতি করা হলেও যাবতীয় আর্থিক লেনদেন হতো ট্রাস্টের তৎকালীন সেক্রেটারী মরহুম বদিউল আলম সাহেবের স্বাক্ষরে। ১৯৯৫ সালের জুন মাসে পীর সাহেব হুজুরের হাতে ৩টি বিভাগের শিক্ষা কার্যক্রমের উদ্বোধনের মাধ্যমে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় চট্টগ্রাম এর আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হয়।
ট্রাস্টের সভাপতি হিসেবে মাওলানা আবদুল জব্বার (রাহ.) ১৯৯৫ সালের ১৫ জুলাই ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় চট্টগ্রামে কম্পিউটার সায়েন্স এন্ড টেকনোলজি বিভাগের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন এবং কম্পিউটারের ওই দুষ্প্রাপ্যের সময়ে প্রথম কম্পিউটারটি তিনিই প্রদান করেছিলেন। একজন পীরের এই সুদূরপ্রসারী প্রযুক্তি-মনস্কতার স্মৃতি মনে পড়লে এখনো আমি আবেগাপ্লুত হয়ে পড়ি।
যাহোক, চকবাজার কলেজ রোডে ভাড়া-ভবনে বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রম শুরু করার পাশাপাশি উদ্যোক্তা ও ট্রাস্টের পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী নতুন নতুন বিভাগ খোলাসহ স্থায়ী ক্যাম্পাস ও অবকাঠামো গড়ে তোলার চিন্তাভাবনা ও কাজও শুরু হয়। এই কঠিন ও বহুল ব্যয়সাপেক্ষ কাজটির জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয় হয়ে দেখা দেয় বিশাল ফান্ডিং এর বিষয়টি। বিশাল ফান্ড সংগ্রহের উৎস হিসেবে আরব দেশগুলো, দাতাসংস্থা ও ধনাঢ্য ব্যক্তিবর্গের অর্থানুকূল্যের কোন বিকল্প ছিলনা।
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় ট্রাস্ট এই কাজটির দায়িত্ব অর্পণ করেছিলেন আমি প্রফেসর ড. আবু রেজা মুহাম্মদ নেজামুদ্দিন নদভীর হাতে। এ ব্যাপারে আমার দিকে আস্থাপূর্ণ ইশারা ছিল মরহুম পীর সাহেব হুজুরের (রাহ.)। আমি তাঁর কাছে পুত্রতুল্য স্নেহাস্পদ ছিলাম। নিজের সর্বোচ্চ যোগ্যতাকে কাজে লাগিয়ে আমার উপর অর্পিত দায়িত্ব পালনে ঝাঁপিয়ে পড়ি। আরব বিশ্বের কাছে অত্যন্ত প্রিয়মুখ তৎকালীন সর্বশ্রেষ্ঠ ইসলামিক স্কলার ভারতের নাদওয়াতুল ওলামা লক্ষ্ণৌর রেক্টর সৈয়দ আবুল হাসান আলী নদভীর স্নেহধন্য ছাত্র হওয়ার সুবাদে আমার সাথে মধ্যপ্রাচ্যেও বিভিন্ন দেশ, দাতাসংস্থা ও ধনাঢ্য ব্যক্তিবর্গের সাথে বেশ চেনাজানা ছিল।
আরবী ভাষায় আমার বিশেষ পারঙ্গমতা, মেধা, যোগ্যতা এবং আরববিশ্বে সুনামের কথা জানতে পেরে আইআইইউসি’র ওই সময়ের উদ্যোক্তারা আমাকে অধ্যাপনার পাশাপাশি বিদেশ বিভাগ ‘ফরেন এ্যাফেয়ার্স ডিভিশন’ এর প্রধানের দায়িত্ব প্রদান করেন। অল্প সময়ের ব্যবধানেই দায়িত্ব পালনে আমার অভূতপূর্ব সাফল্য সবার নজর কাড়ে। আমার শ্রমনিষ্ঠ প্রচেষ্টায় মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশ, দাতাসংস্থা ও ধনাঢ্য ব্যক্তিবর্গের অর্থানুকূল্যে শুরু ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় চট্টগ্রাম এর অবকাঠামোগত উন্নয়ন ও সার্বিক কার্যক্রমে বিপ্লবের সূচনা।
নতুন নতুন বিভাগ খোলাসহ এই বিশ্ববিদ্যালয়কে আন্তর্জাতিক বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তর করার সিদ্ধান্ত নেয়ার পর এই কাজটিকেও এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার দায়িত্ব অর্পিত হয় আমার উপর। আমি মিশরের আল আযহার ইউনিভার্সিটির ভিজিটিং প্রফেসর এনে এবং সুদান, সোমালিয়া, নেপাল, শ্রীলঙ্কা, চীনসহ বিভিন্ন দেশের শিক্ষার্থী ভর্তির পাশাপাশি আরববিশ্ব থেকে তাদের বৃত্তির ব্যবস্থা করে আর্থিক ব্যয় ছাড়াই এটিকে সত্যিকারের একটি ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিতে রূপ দিই। কর্মের স্বীকৃতি স্বরূপ তখনকার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় ট্রাস্ট ঐসময়ে আমাকে ট্রাস্ট সদস্য, সিন্ডিকেট সদস্যসহ প্রায় সব কমিটিতে গুরুত্বপূর্ণ পদে বসাতে কার্পণ্য করেনি।
আইআইইউসি-তে এক সময়ে সবার মুখেমুখে ছিল যে আমার সংগৃহীত ফান্ডকে মরহুম বদিউল আলম সাহেব যথাযথভাবে কাজে লাগিয়ে স্থায়ী ক্যাম্পাস গড়ে তোলাসহ ইনকাম জেনারেটিং করে আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় চট্টগ্রাম (আইআইইউসি)-কে শক্ত ভিত্তির উপর দাঁড় করিয়েছিলাম।
এরপর আইআইইউ’তে বিদেশী অর্থায়নে কোন ভবন নির্মিত হয়নি, আসেনি কোন বিদেশী অর্থ সাহায্য। আইআইইউসি মেডিকেল কলেজ ট্রাস্টের অধীন দু’টি প্রতিষ্ঠান (ক) ইন্টারন্যাশনাল ডেন্টালকলেজ ও (খ) ইন্টারন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ। ২০১০ সালের দিকে সরকার যথাযথ শর্তপূরণে ব্যর্থতার অভিযোগ এনে সারা দেশে যে ১২টি বেসরকারি মেডিকেল কলেজ বন্ধ ঘোষণা করেছিল তন্মধ্যে এই দু’টিও ছিলো। এমন দুঃসময়ে আমি তৎকালীন স্বাস্থ্য মন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম সাহেবকে ডিও লেটার প্রদান এবং সরাসরি সাক্ষাৎ করে মেডিকেল কলেজ দু’টি খোলার ব্যবস্থা করেছিলাম। তা সত্ত্বেও তাদের কাছ থেকে প্রতিদান হিসেবে আমি পেয়েছিলাম উক্ত মেডিকেল কলেজ ট্রাস্টি থেকে ‘অব্যাহতি’।
গত প্রায় বিশ বছর আইআইইউসি’র বিভিন্ন সমাবর্তন, প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী, সভা-সেমিনার এবং প্রকাশিত জার্নাল পর্যালোচনা করে দেখা গেছে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখা দূরদর্শী মহৎ ব্যক্তিত্বদের কোন মূল্যায়ন বা অবদানের যথাযথ স্বীকৃতি দেয়া হয়নি। নতুন প্রজন্মেও কাছে আইআইইউসি’কে স্বাধীনতাবিরোধী ও যুদ্ধাপরাধীদের একটি প্রতিষ্ঠান হিসেবে ধারণা দেয়াই এর আসল উদ্দেশ্য।
কিন্তু আজ আমি দ্ব্যর্থহীনভাবে জানাতে চাই আইআইইউসি একটি জাতীয় সম্পদ; কোন দল বা গোষ্ঠীর নয়। এটি চট্টগ্রামবাসীর অহংকার। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্বিক উন্নতির কাজে এগিয়ে আসার অর্থ হলো দেশপ্রেমের পরিচয় দেয়া। জাতির মেরুদন্ডকে মজবুত করার কাজে সহযোগিতা করা। চট্টগ্রামে প্রজন্মের পর প্রজন্মকে আন্তর্জাতিক মানের উচ্চ শিক্ষা গ্রহণের স্থায়ী ঠিকানা করে দেয়া।
লেখক: সংসদ সদস্য, চট্টগ্রাম-১৫, চেয়ারম্যান, বোর্ড অব ট্রাস্টিজ, আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় চট্টগ্রাম
Discussion about this post