শিক্ষার আলো ডেস্ক
আজ শনিবার( ১১ সেপ্টেম্বর ) প্রতিষ্ঠার ২২ বছর পেরিয়ে ২৩ এ পা রাখল দেশের অন্যতম স্বনামধন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়( হাবিপ্রবি )।
দক্ষ গ্র্যাজুয়েট তৈরির লক্ষ্যে এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি খাতে অপার সম্ভাবনা অর্জনে এগিয়ে চলছে এই উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান। দীর্ঘ এ পথচলায় প্রাপ্তির খাতায় যেমন যুক্ত হয়েছে নানা অর্জন, তেমনি ছোট নয় অপ্রাপ্তির পাতাও। ২৩তম বিশ্ববিদ্যালয় দিবস উপলক্ষে নানা কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
তেভাগা আন্দোলনের জনক দিনাজপুর অঞ্চলের জনদরদি কৃষকনেতা হাজী মোহাম্মদ দানেশ এর নামানুসারে এই বিদ্যাপীঠের নামকরণ করা হয়। ইতোমধ্যে উত্তর অঞ্চলের অন্যতম সেরা বিদ্যাপীঠ হিসেবে পরিচিত পেয়েছে হাবিপ্রবি। মাত্র একটি অনুষদ ও সামান্য সুযোগ-সুবিধা নিয়ে যাত্রা শুরু করা এ বিশ্ববিদ্যালয়ে বর্তমানে ২৩টি ডিগ্রি প্রদান করা হচ্ছে। এ ছাড়াও ৯টি অনুষদের অধীনে ৪৫টি বিভাগ পরিচালিত হচ্ছে।
সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে হাবিপ্রবিতেই সর্বপ্রথম ক্যারিয়ার অ্যাডভাইজারি সার্ভিস (ক্যাডস) সেন্টারের যাত্রা শুরু হয়। এটি উদ্বোধন হওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য দেশে বিদেশে বিনামূলে চাকরির খবরাখবরের পাশাপাশি বিভিন্ন দেশের স্কলারশিপের তথ্য পাওয়া সহজতর হয়েছে।
এ ছাড়া দেশের প্রথম মোবাইল ভেটেরিনারি ক্লিনিক সেবা ও কৃষক সেবা কেন্দ্র চালু করে হাবিপ্রবি। এর ফলে একদিকে যেমন দিনাজপুর জেলার মানুষের গবাদি পশুপাখির উন্নত চিকিংসাসেবা প্রদান করা সম্ভব হচ্ছে ঠিক তেমনি কৃষকদের বিভিন্ন ফসল ফলাদি উৎপাদন সম্পর্কে তথ্য ও পরামর্শ দেয়া সহজতর হচ্ছে।
এই বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রায় ১২ হাজার শিক্ষার্থীকে পাঠদানের জন্য রয়েছে ৩১৪ জন উচ্চদক্ষতা সম্পন্ন শিক্ষক। এ ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক কার্যক্রম গতিশীল করতে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন প্রায় ২০০ জনের অধিক কর্মকর্তা এবং কয়েকশ’ কর্মচারী।
এ ছাড়া পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে সব থেকে বেশি বিদেশি শিক্ষার্থী (প্রায় ২০০ জন) পড়াশোনা করে হাবিপ্রবিতে। বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণা ও প্রশিক্ষণের সমন্বয় ও সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য রয়েছে ইনস্টিটিউট অব রিসার্চ অ্যান্ড ট্রেনিং (আই.আর.টি.) সেন্টার।
সাম্প্রতিক সময়ে হাবিপ্রবির ইঞ্জিনিয়ারিং অনুষদের শিক্ষক অধ্যাপক ড. মারুফ হাসানের কালোজামের জুস ও অধ্যাপক ড. মো. সাজ্জাদ হোসেন সরকারের নেতৃত্বে তৈরি টু স্টেজ গ্রেইন ড্রায়ার মেশিন দেশব্যাপী আলোড়ন সৃষ্টি করে ব্যাপক প্রশংসা কুড়িয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ সব শুভানুধ্যায়ীকে বিশ্ববিদ্যালয় দিবসের শুভেচ্ছা জানিয়ে নবনিযুক্ত উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম কামরুজ্জামান বলেন, ‘দক্ষ মানবসম্পদ তৈরি করার লক্ষ্য অর্জনে একজন প্রকল্প পরিচালক এবং সাবেক ছয়জন ভাইস চ্যান্সেলরের নেত্বেত্বে হাবিপ্রবি আজকে বাংলাদেশের অন্যতম একটি বিশ্ববিদ্যালয় পরিণত হয়েছে।
ইতোমধ্যে ছয়টি ফসলের জাত উদ্ভাবন করাসহ প্রকৌশল ক্ষেত্রে একটি ড্রায়ার এবং বিভিন্ন ধরনের কৃষি খামার যন্ত্র উদ্ভাবিত হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হিসেবে আমার লক্ষ্য এই প্রতিষ্ঠানের শিক্ষা এবং গবেষণা খাতকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া। এই প্রেক্ষাপটে আমি হাবিপ্রবির ২২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারী, অ্যালামনাই, শুভানুধ্যায়ীসহ সংশ্লিষ্ট সবার প্রতি আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জ্ঞাপন করছি।’
Discussion about this post