প্রযুক্তি ডেস্ক
ক্রমান্বয়ে বাড়ছে বৈশ্বিক উষ্ণায়ন। আর তার সাথে তাল মিলিয়ে দৈনন্দিন জীবনে মানুষের ব্যবহৃত বিভিন্ন যন্ত্রের ভূমিকাও কম নয়। তেমনই এক যন্ত্রের নাম ‘এয়ার কন্ডিশনার বা এসি’। বিশ্বের প্রায় সব দেশেই এই যন্ত্রের রয়েছে বহুল ব্যবহার।
আর এই এসির ব্যবহার কমিয়ে আনতে উদ্যোগী হয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের পুরদু ইউনিভার্সিটির একদল গবেষক। তাদের দাবি, ল্যাবরেটরিতে তারা তৈরি করেছেন বিশ্বের “সবচেয়ে সাদা রঙ” যা “সাদার চেয়েও সাদা”।
এ বিষয়ে পুরদু ইউনিভার্সিটির মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের প্রফেসর জিউলিন রুয়ান বলেন, “সাত বছর আগে প্রজেক্টটা শুরুর সময়ই জলবায়ু পরিবর্তন ও জ্বালানি বাঁচানোর বিষয়টি মাথায় রেখেই আমরা কাজ শুরু করি।”
ইতোমধ্যে গিনেজ বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে “সবচেয়ে সাদা রঙ” হিসেবে জায়গা করে নিয়েছে এটি। তবে রেকর্ড গড়া নয়, বৈশ্বিক উষ্ণায়ন কমিয়ে আনাই ছিল এই উদ্ভাবনের মূল লক্ষ্য।
এ বছরের ১৫ এপ্রিল পুরদু ইউনিভার্সিটির ওয়েবসাইটে প্রকাশিত একটি জার্নালে বিজ্ঞানীরা দাবি করছেন, এই রঙ বিশ্বব্যাপী এয়ার কন্ডিশনার (এসি) ব্যবহারের প্রয়োজনীয়তা কমিয়ে আনবে।
গবেষকরা জানান, তাদের উদ্দেশ্য ছিল এমন একটি রং তৈরি করা যেটি সূর্যের বিকিরণকে প্রতিফলিত করতে পারে। এই রংটি ৯৮.১% সূর্যের বিকিরণ প্রতিফলিত করতে পারে। যেখানে বর্তমানে বাজারে প্রচলিত রংগুলো সর্বোচ্চ ৮০-৯০% পর্যন্ত প্রতিফলনে সক্ষম।
শুধু তাই নয়। বিজ্ঞানীদের ভাষ্য, নতুন আবিষ্কৃত এই রংটি ইনফ্রারেড রশ্মিও প্রবেশে বাধা দেবে। কোনো ভবনের ছাদ ও দেয়ালে এই রংয়ের এর প্রলেপ দেওয়া হলে প্রাকৃতিকভাবেই ঘর ঠাণ্ডা থাকবে। যেমন, ১০০০ বর্গফুটের ছাদে যদি রং লাগানো হলে এয়ারকন্ডিশনারের ১০ কিলোওয়াট বিদ্যুৎ বাঁচাতে পারবে।
পুরদুর বিজ্ঞানীরা জানান, দুটি অনন্য বৈশিষ্ট্য এই রংটিকে “সবচেয়ে” সাদা রংয়ে এ পরিণত করেছে। তা হলো- ব্যারিয়াম সালফেট নামে একটি রাসায়নিক যৌগের নির্দিষ্ট ঘনত্ব এবং যৌগটির বিভিন্ন আকারের অণু। রংটি বাজারে আনার জন্য পুরদু ইউনিভার্সিটির বিজ্ঞানীরা ইতোমধ্যে একটি কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি করেছেন বলেও এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানানো হয়েছে।
Discussion about this post