শিক্ষার আলো ডেস্ক
মঙ্গলবার (২৮ সেপ্টেম্বর) সকালে সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে অবস্থিত রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৪ জন ছাত্রের মাথার চুল কাঁচি দিয়ে কেটে দেয়ার প্রতিবাদে সকল পরীক্ষা, ক্লাস বর্জন এবং একাডেমিক ও প্রশাসনিক ভবনে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছে শিক্ষার্থীরা।
লাঞ্ছিত একাধিক শিক্ষার্থী জানান, কয়েক দিন আগে ক্লাস চলাকালে ওই শিক্ষক চুল বড় রাখার বিষয়ে ছাত্রদের বকাঝকা করেন। তার ভয়ে সবাই পরদিনই চুল ছোট করেন। রোববার (২৬ সেপ্টেম্বর) দুপুরে সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও বাংলাদেশ অধ্যয়ন বিভাগের প্রথম বর্ষের রাষ্ট্রবিজ্ঞান পরিচিতি বিষয়ের ফাইনাল পরীক্ষার হলে শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণের সময় সহকারী প্রক্টর ফারহানা ইয়াসমিন বাতেন কাঁচি হাতে দাঁড়িয়ে ছিলেন। যাদের চুল মুঠোর মধ্যে ধরা গেছে তাদের মাথার সামনের বেশ খানিকটা চুল তিনি কাঁচি দিয়ে কেটে দেন।
এদিকে এলোমেলোভাবে চুল কেটে দেওয়ায় অপমান সহ্য করতে না পেরে নাজমুল হাসান তুহিন (২৫) নামে রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্র অতিমাত্রায় ঘুমের ওষুধ খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছেন। তাকে মুমূর্ষু অবস্থায় এনায়েতপুর খাজা ইউনুস আলী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
এ ঘটনার পর সোমবার (২৭ সেপ্টেম্বর) দুপুরে শিক্ষার্থীরা প্রতিবাদে পরীক্ষা বর্জন করে। পরে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করার জন্য বিসিক বাসস্ট্যান্ড এলাকার শাহজাদপুর মহিলা ডিগ্রি কলেজে অবস্থিত রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের অস্থায়ী ক্যাম্পাস-১ এর গেটে জড়ো হলে ওই শিক্ষক তাদের পরীক্ষায় ফেল করিয়ে দেয়ার ভয়ভীতি দেখিয়ে অকথ্য ভাষায় গালাগালি করে পরীক্ষার হলে যেতে বাধ্য করে।
পরে মঙ্গলবার (২৮ সেপ্টেম্বর) সকালে সকল পরীক্ষা, ক্লাস বর্জন ও একাডেমিক ও প্রশাসনিক ভবনে তালা ঝুলিয়ে দেয় শিক্ষার্থীরা। এ সময় ওই শিক্ষকের বহিষ্কার দাবী করে বিভিন্ন শ্লোগান দেয় শিক্ষার্থীরা।
এ সব বিষয় অস্বীকার করে সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও বাংলাদেশ অধ্যয়ন বিভাগের চেয়ারম্যান সহকারী প্রক্টর ফারহানা ইয়াসমিন বলেন, কয়েকদিন আগে কিছু ছাত্র আমার কাছে এসে পরীক্ষা পিছিয়ে দিতে বলেছিল। আমি এতে রাজি হইনি। হয়তো বা সেই রাগে এ ধরনের অপপ্রচার চালিয়েছে।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার বিষয়ে তিনি বলেন, অন্য বিভাগের ছাত্ররা মিথ্যা গুজব ছড়াতে ফেসবুকে এ সব দিয়েছে। আমার বিভাগের কোন ছাত্র দেয়নি। এটা একটা গুজব।
রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশের রেজিস্ট্রার সোহরাব হোসেন জানান, এ বিষয়টি নিয়ে আমাদের কাছে কেউ লিখিত বা মৌখিক অভিযোগ দেয়নি। বিশ্ববিদ্যালয়ের অভিযোগ গ্রহণের জন্য সরকারি কর্মকর্তা নিযুক্ত রয়েছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত কোনো অভিযোগের খবর পাইনি।
Discussion about this post