খেলাধূলা ডেস্ক
এবারের জাতীয় সাঁতার প্রতিযোগিতায় এক সঙ্গে অংশ নিয়েছে দুই বোন সাবা আর সারা । একজনের বয়স পাঁচ, আরেক জনের মাত্র তিন বছর।
রাজশাহী থেকে আসা এই দুই ক্ষুধে সাঁতারু মিরপুরের সুইমিংপুলের নীল জলে ঢেউ তুলেছে, বাড়িয়ে নিয়েছে আত্মবিশ্বাস।
দেশের হয়ে আন্তর্জাতিক আসরে স্বর্ণ জয়ের লক্ষ্য নিয়েই বেড়ে ওঠা ওদের। দেশের সবচেয়ে কনিষ্ঠ সাঁতারুও দুই বোন, সাবা আর সারা।
যে বয়সে মায়ের কোলে দোল খেয়ে সময় পার করে আর দশটা শিশু সে বয়সেই নীল জলের জলপরী ছোট্ট সারা। জলরাশির বুক চিরে এগিয়ে যায় তার স্বপ্ন রাশি রাশি।
দুই মাসে ২২টা ক্লাস করেই জাতীয় সাঁতার প্রতিয়োগিতায় অংশগ্রহণের যোগ্যতা অর্জন করেছে সে। সবার কৌতূহল তিন বছরের সারা কি পারবে ফিনিশিং লাইনে পোঁছাতে?
জাতীয় বয়সভিত্তিক সাঁতার প্রতিযোগিতায় মেয়েদের এই ইভেন্টে সর্বচ্চো বয়সসীমা যেখানে দশ, সেখানে বাকিদের সাথে লাড়াইয়ে নেমেছে তিন বছরের সারা। পাশের লাইনেই বড় বোন সাবা। সারা যখন মাঝপথে, ওর বড় বোন সাবা তখন ছুঁয়ে ফেলেছে টাচ লাইন। কয়েক সেকেন্ড পরেই নিজের লক্ষ্য পৌঁছে দারুণ খুশি ক্ষুদে সাঁতারু সারা।
বাবার কোলে বসে ভাঙ্গা ভাঙ্গা শব্দে সারা একাত্তরকে জানায়, সাঁতার করতে হবে। অনেক ভালো করতে হবে। বড় হয়ে মেডেল পেতে হবে। অনেক সম্মান পেতে হবে।
মার্শাল আর্ট খেলোয়ার দস্তগির আলমগীর ও মারুফা খাতুন দম্পতির দুই মেয়ে সাবা ও সারা। ওদের বাবা জানান, আমি নিজে একজন খেলোয়ার। আমার স্ত্রীও একজন খেলোয়ার। যেহেতু বাবা-মা দুইজনই খেলোয়ার, আমাদের স্বপ্নটা হচ্ছে দুই মেয়ে বড় হয়ে অলিম্পিকসহ, বিশ্বকাপ ও অন্যান্য বড় টুর্নামেন্টে খেলে পদক অর্জন করবে। যেটা আমরা পারিনি, সেটা আমাদের মেয়েরা অর্জন করবে।
দস্তগির আলমগীর বলেন, করোনার সময় সবাই যখন প্যানিক, পুরো পৃথিবী যখন নড়ে গেছে, তখনও খেলাধূলার মাধ্যমে পরিবারে আনন্দ ধরে রাখতে পেরেছি আমরা। আমাদের ভিতরে কোন প্যানিক তৈরি হয়নি। আমরা স্বাভাবিকভাবেই আমাদের প্রাকটিস চালিয়ে গেছি। সাঁতার, লংরানিং সবকিছু স্বাভাবিক রাখতে সক্ষম হয়েছি।
দুই মেয়েই মার্শাল আর্ট শিখে জানিয়ে তিনি বলেন, বড় মেয়ে সাবা মার্শাল আর্টে কালো বেল্ট অর্জন করেছে। সে একটানা পাঁচ কিলোমিটার দৌড়াতে পারে। আর সারা কমলা বেল্ট অর্জন করেছে।
দস্তগির আলমগীর ও মারুফা খাতুন দম্পতি আবারও প্রমাণ করলেন, পরিবার থেকেই গড়ে উঠুক খেলাধুলোর সংস্কৃতি আর স্বপ্ন দেখার শুরুটা হোক সেখানেই।
Discussion about this post