প্রযুক্তি ডেস্ক
সাম্প্রতিক সময়ে ফেসবুক সম্পর্কে তথ্য ফাঁসকারী ফ্রান্সেস হাউগেন একটি সাক্ষাৎকারে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমটি সম্পর্কে যে অভিযোগ করেছেন, তার পাল্টা জবাব দিয়েছেন প্রতিষ্ঠানটির অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা মার্ক জাকারবার্গ। হাউগেন বলেছিলেন, ফেসবুক গোপনীয়তা বা নিরাপত্তার চেয়ে ব্যবসার দিকেই বেশি নজর রাখে। জবাবে জাকারবার্গ বলছেন, এ তথ্য সঠিক নয়। এর কোনো মানে নেই।
গার্ডিয়ানের একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মার্ক জাকারবার্গ ফ্রান্সেস হাউগেনের ফেসবুক সম্পর্কে সাক্ষাৎকার ও ওয়াল স্ট্রিট জার্নালে প্রকাশিত প্রতিবেদনের বিরুদ্ধে পাল্টা জবাব দিয়েছেন। জবাবে তিনি বলেছেন, ফেসবুক মানুষের নিরাপত্তার চেয়ে লাভের দিকে বেশি নজর দেয় এ তথ্য সঠিক নয়।
একটি ব্লগপোস্টে ফেসবুকের প্রধান নির্বাহী বলেন, হাউগেনের সাক্ষাৎকারের সবচেয়ে ক্ষতিকর বক্তব্য ‘ফেসবুক মানুষের নিরাপত্তার আগে লাভকে বড় করে দেখে’। স্থানীয় সময় মঙ্গলবার মার্কিন সিনেটরদের কাছে হাউগেনের মন্তব্য সম্পর্কে বলতে গিয়ে এ কথা বলেন জাকারবার্গ।
তিনি বলেন, হাউগেনের অভিযোগের কেন্দ্রবিন্দুতে একটি ধারণাটি রয়েছে যে, আমরা নিরাপত্তা এবং ভালো থাকার চেয়ে লাভকে বেশি অগ্রাধিকার দিই। এটা ঠিক নয়। অযৌক্তিক।
তিনি ওই পোস্টে এও বলেন, এই বক্তব্য, যেখানে বলা হয়েছে, আমরা ইচ্ছে করে কন্টেন্টের জন্য চাপ দিই, যা মানুষকে ক্ষুব্ধ করে, তা আসলে অযৌক্তিক। আমরা বিজ্ঞাপন থেকে অর্থ উপার্জন করি। এছাড়া বিজ্ঞাপনদাতারা প্রায়ই জানান, তারা বিজ্ঞাপন থেকে কোনো ক্ষতিকর কিংবা ক্ষুব্ধ হওয়ার মতো কিছু চান না।
জাকারবার্গ বলেন, হাউগেনের ফেসবুক সম্পর্কে অনেক দাবি এবং ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের ওপর ভিত্তি করে যে নথি প্রকাশ পেয়েছে, তার কোনো মানে নেই। এর আগে ওয়াল স্ট্রিট জার্নালে এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন প্রকাশ পায়। সেখানে বলা হয়, ফেসবুক অভ্যন্তরীণ গবেষণায় কাজ করতে ব্যর্থ হয়েছে। একইসঙ্গে একই মালিকানাধিন প্রতিষ্ঠান ইনস্টাগ্রাম মাধ্যমটি কিশোর-কিশোরীদের মানসিক স্বাস্থ্যের ক্ষতি করছে বলেও উল্লেখ করা হয়।
এ নিয়ে জাকারবার্গ বলেন, এসব দাবির কোনো মানে হয় না। আমরা যদি গবেষণাকে উপেক্ষাই করব, তাহলে কেন আমরা এই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোকে প্রথম স্থানে রেখেছি। কেন আমরা একটি শিল্প-নেতৃস্থানীয় গবেষণা কর্মসূচি তৈরি করব?
৩৭ বছর বয়সী ফ্রান্সেস হাউগেন ফেসবুকের সিভিক ইন্টেগ্রিটি গ্রুপের প্রোডাক্ট ম্যানেজার ছিলেন। সিবিএসের ‘সিক্সটি মিনিট নামে একটি সাক্ষাৎকারে তিনি জানান, তিনি চলতি বছরের প্রথমদিকে ফেসবুকের কর্মকাণ্ডে বিরক্ত হয়ে চাকরি ছেড়ে দিয়েছেন। তবে প্রতিষ্ঠানটি ছাড়ার আগে বেশ কিছু অভ্যন্তরীণ নথিপত্রের নকল নিয়ে এসেছেন তিনি।
ওই নথিগুলো ওয়াল স্ট্রিট জার্নালকে দেন তিনি। সেসব নথির ওপর ভিত্তি করে ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল তিন সপ্তাহ ধরে প্রতিবেদন প্রকাশ করে। প্রতিবেদনগুলো ‘ফেসবুক ফাইলস’ নামে পরিচিতি পায়।
এসব প্রতিবেদনে ফেসবুকের আচরণগত বৈষম্য ফুটে ওঠেছে। সাধারণ মানুষের তুলনায় তারা বিভিন্ন সেলিব্রেটি ও রাজনীতিবিদদের বেলায় ভিন্ন ধরনের আচরণ করে এমনটি বলা হয়। সাধারণ ব্যবহারকারীরা ফেসবুকের নানা নিয়মনীতির সূত্রে আবদ্ধ হলেও ভিআইপিদের ক্ষেত্রে তাদের অনেক বিধিনিষেধই শিথিলযোগ্য- এও উল্লেখ করা হয় প্রতিবেদনে।
Discussion about this post