অনলাইন ডেস্ক
চলতি মাসেই বাস্তবায়নের পথে আরও একধাপ এগিয়ে যাচ্ছে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের কাজ। কেন্দ্রটির প্রথম ইউনিটের পারমাণবিক চুল্লি বা রিয়্যাক্টর প্রেসার ভেসেল বসানোর কাজ শুরু হচ্ছে রোববার। এরই মধ্যে চুল্লি স্থাপনের সব প্রস্তুতি শেষ হয়েছে। প্রকল্পের মূল কাজ এগিয়েছে প্রায় ৫০ শতাংশ। সরকারের আশা, ২০২৩ সালেই পরমাণু বিদ্যুৎ পাবে দেশ।
স্বাধীনতার ৫০ বছরের মাথায় দেশের স্বপ্নের প্রকল্প রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের দৃশ্যমান এই চুল্লি ভবনগুলো জানান দিচ্ছে খুব বেশি সময় বাকি নেই এর চূড়ান্ত স্তরে পৌঁছাতে।
২০১৭ সালে নভেম্বরে মূল নির্মাণকাজ শুরু হওয়ার পর থেকে এখানে দৈনিক ২৫ হাজার দেশি-বিদেশি শ্রমিক-প্রকৌশলীর শ্রমে-ঘামে আমূল পাল্টে গেছে রূপপুরের এই প্রকল্প এলাকা। প্রথম ইউনিটের রিয়্যাক্টর ভবন প্রায় প্রস্তুত। ভৌত অবকাঠামোতে এগিয়ে যাচ্ছে দ্বিতীয় ইউনিটও।
পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্রে যে যন্ত্রে নিউক্লিয়ার ফুয়েল বা ইউরেনিয়াম থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হবে তার মূল কাঠামোকে বলা হয় রিয়্যাক্টর প্রেসার ভেসেল বা পরমাণু চুল্লী। এসব বিদ্যুৎ কেন্দ্রের প্রাণ হিসেবেই বিবেচনা করা হয় এই বিশেষ যন্ত্রাংশকে। আন্তর্জাতিক গাইড লাইন অনুসারে, এটি স্থাপনের জটিল কাজ সম্পন্ন করার মাধ্যমেই গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক অর্জিত হবে বলে মত প্রকল্প বাস্তবায়নে থাকা কর্মকর্তাদের।
রাশিয়ার রাষ্ট্রায়ত্ব পরমাণু সংস্থা রোসাটমের কারিগরি তত্ত্বাবধান ও নকশায় এখানে ব্যবহার করা হবে পরমাণু প্রযুক্তির সবশেষ সংস্করণ ভিভিইআর-১২০০ টাইপের দুটি রিয়্যাক্টর। প্রথম ইউনিটের জন্য চারটি স্টিম জেনারেটর, প্রেসারাইজার, হাইড্রো অ্যাকোমডেটর ও কুল্যান্ট পাম্পের মতো ভারী যন্ত্র এখন রূপপুরের মাটিতে। এই প্ল্যান্ট চালু হলে ২৪০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ মিলবে একক উৎস থেকে।
নিউক্লিয়ার পাওয়ার কোম্পানি বাংলাদেশ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. শৌকত আকবর জানান, এ বছরের মধ্যে প্রকল্পের ৫০ শতাংশ কাজ সম্পন্ন করবো। পরের ধাপে যন্ত্রাংশগুলো স্থাপন করা হবে। এবং প্রকল্প নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করতে পারবো বলে আশা করছি।
আগামী রোববার (১০ অক্টোবর) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঢাকা থেকে ভিডিও কনফারেন্সে এই প্রকল্পে চুল্লি স্থাপনের কর্মযজ্ঞ উদ্বোধন করার কথা রয়েছে। অনুষ্ঠানে থাকবেন রোসাটমের মহাপরিচালক অ্যালেক্স লিখাচেভ। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমান জানাচ্ছেন, প্রযুক্তি ও নিরাপত্তায় কোনো আপস করা হচ্ছে না।রিয়্যাক্টর প্রেসার ভেসেল ইনস্টলেশনের মাধ্যমে পরমাণু স্থাপনা নির্মাণের সাফল্য ধারায় নতুন মাইলফলক অতিক্রম করতে যাচ্ছে দেশ।
Discussion about this post