শিক্ষার আলো ডেস্ক
রোববার (১০ অক্টোবর) আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি-বাংলাদেশের (এআইইউবি) ২০তম সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের অডিটোরিয়াম থেকে ভার্চুয়ালি এটি সম্প্রচারিত হয়।
রাষ্ট্রপতি ও এআইইউবি’র চ্যান্সেলর মো. আবদুল হামিদের সম্মতিক্রমে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি সমাবর্তন অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ও গ্র্যাজুয়েটদের মধ্যে সনদ বিতরণ করেন। বিশেষ অতিথি হিসেবে অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী।
সমাবর্তন অনুষ্ঠানে বিভিন্ন অনুষদের মোট ২ হাজার ৮৭৮ জন ছাত্রছাত্রীকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি দেওয়া হয়। এছাড়া বিভিন্ন বিষয়ে পারদর্শিতা ও ভালো ফলাফল অর্জনকারী ছাত্রছাত্রীদের সম্মাননা পদক দেওয়া হয়।
নবীন গ্র্যাজুয়েটদের অভিনন্দন জানিয়ে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেন, দেশের মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন ও জাতির উন্নয়নের জন্য আপনারা সততা, নিষ্ঠা ও আন্তরিকতার মাধ্যমে আপনাদের অর্জিত জ্ঞান ও প্রজ্ঞাকে কাজে লাগাবেন এটিই- আমাদের প্রত্যাশা। চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের সফল অংশীদার হতে চাই আমরা। আর যদি তা আমাদের সফলভাবে করতে হয় তবে আমাদের শিক্ষার্থীদের কিছু বিশেষ দক্ষতা অর্জন করতে হবে। শুধু সনদই যথেষ্ট নয়।
ডা. দীপু মনি নতুন গ্র্যাজুয়েটদের শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেন, গত দেড় বছর ধরে আমরা একটা অতিমারির মধ্যে রয়েছি। সারা বিশ্বের মানুষ নানা সমস্যার মধ্যে রয়েছে। তার মধ্যে সবচেয়ে বেশি প্রতিকূলতায় রয়েছে শিক্ষাখাত। যারা এ অতিমারির মধ্যে পড়াশোনা শেষ করেছেন তাদের অভিনন্দন।
শিক্ষার্থীদের চাকরির পেছনে না ছুটে উদ্যোক্তা হওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, উদ্যোক্তা হতে হবে এবং প্রগতিশীল অর্থনীতিকে চালু রাখার জন্য উদ্যোগী হতে হবে। নতুন চাকরির বাজার সৃষ্টি করতে হবে। শিক্ষার্থীদের জ্ঞান, দক্ষতা এবং সঠিক মনোভাবের সমন্বয়ে বিশ্ব নাগরিক হিসেবে গড়ে তোলার আহ্বান জানান তিনি।
নবীন গ্র্যাজুয়েটদের অভিননন্দন জানিয়ে শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী বলেন, শিক্ষার্থীদের সনদ অর্জনের পাশাপাশি বর্তমান বিশ্বের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে হবে। একই সঙ্গে কর্মমুখী শিক্ষা গ্রহণ করে নিত্য নতুন দক্ষতা অর্জন করে দেশের উন্নয়নে নিজেকে সম্পৃক্ত করতে হবে। বর্তমান সরকারের ডিজিটাল বাংলাদেশের মাধ্যমে এ মহামারির মধ্যেও আমরা শিক্ষা কার্যক্রম চালিয়ে নিতে পেরেছি। উচ্চতর মানবসম্পদ গড়তে তারুণ্য জ্ঞান মেধা ও প্রজ্ঞা নিয়ে এগিয়ে যেতে হবে। একাডেমিক পড়াশোনার পাশাপাশি দক্ষতা উন্নয়ন ও প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে। করোনা মহামারির সময়ে সুষ্ঠুভাবে উচ্চশিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করার জন্য তিনি এআইইউবি’র ভূয়সী প্রশংসা করেন।
সমাবর্তন বক্তা হিসেবে বাংলাদেশে নিযুক্ত বিট্রিশ হাইকমিশনার এইচ ই রবার্ট চ্যাটার্টন ডিকসন তার শিক্ষা ও কর্মজীবনের বিভিন্ন দিক তুলে ধরে উপস্থিত গ্র্যাজুয়েটদের উদ্বুদ্ধ করেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন এখন সর্বত্র প্রশংসনীয়। অর্থনীতিসহ নারী শিক্ষা ও উন্নয়ন এবং শিক্ষায় বাংলাদেশের অগ্রগতি একটি মাইলফলক।
এআইইউবি’র ভাইস চ্যান্সেলার ড. কারমেন জেড ল্যামাগনা ডিগ্রিপ্রাপ্ত ছাত্রছাত্রীদেরকে তার ও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে আন্তরিক অভিনন্দন জানান। তিনি গ্র্যাজুয়েটদের জীবনে প্রতিটি সমস্যা ধৈর্য সহকারে এবং প্রাপ্ত শিক্ষার আলোকে নিজ নিজ মেধা দিয়ে মোকাবিলা করার আহ্বান জানান। তিনি আরও উল্লেখ করেন সনদ প্রাপ্তিই শেষ নয় বরং এখনই জীবনের পথ চলা শুরু।
এআইইউবি’র ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান ড. হাসানুল আবেদীন হাসান তার স্বাগত ভাষণে ডিগ্রি প্রাপ্তদের অভিনন্দন জানান। তিনি বলেন, এআইইউবি উচ্চশিক্ষা কার্যক্রমের আন্তর্জাতিক মানের উন্নত শিক্ষা দিতে সর্বদা বদ্ধপরিকর।
সমাবর্তন অনুষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের পক্ষে ভ্যালোডিকটরিয়ান বক্তব্য দেন এমপিএইচ বিভাগের শিক্ষার্থী নুদের নোওয়ার নিজাম। এছাড়া সমাবর্তন অনুষ্ঠানে এআইইউবি’র প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ইশতিয়াক আবেদীন, নাদিয়া আনোয়ার, ডা. আব্দুস সামাদ আলীম, মিসেস সাবরিনা আবেদীন, ডুলসে ল্যামাগ্না মজুমদারসহ সিন্ডিকেট ও একাডেমিক কাউন্সিল সদস্য, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা, দেশি-বিদেশি উচ্চপদস্থ ব্যক্তি, বিভিন্ন বিভাগের ডিন, শিক্ষক-শিক্ষিকা, কর্মকর্তা, ছাত্রছাত্রী ও অভিভাবক এবং গণমাধ্যমকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
Discussion about this post