খেলাধূলা ডেস্ক
মাত্র ১১৯ রানের লক্ষ্য। কিন্তু সেটা তাড়া করতেই রীতিমতো ঘাম ছুটল অস্ট্রেলিয়ার। দক্ষিণ আফ্রিকা ম্যাচটাকে টেনে নিয়ে গেছে শেষ ওভারে। শ্বাসরুদ্ধকর লড়াইয়ে ৫ উইকেটে জিতে শেষ হাসিটা হাসল অস্ট্রেলিয়া।
দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে আর একবারই মুখোমুখি হয়েছিল অস্ট্রেলিয়া। সে ম্যাচে দলটা জিতেছিল আট উইকেটের ব্যবধানে। সুপার টুয়েলভের প্রথম ম্যাচে ইতিহাসের পুনরাবৃত্তিই ঘটিয়েছে অজিরা। তবে একেবারে হুবহু নয়। ২০১২ বিশ্বকাপের সেই ম্যাচে অনায়াসেই জিতেছিল দলটি। তবে এবার তা হয়নি, জিততে রীতিমতো অগ্নিপরীক্ষাই দিতে হয়েছে দলটিকে।
প্রোটিয়াদের ব্যাটিংয়ের শুরুটা অবশ্য ছিল আশা জাগানিয়াই। অধিনায়ক টেম্বা বাভুমা শুরুর ওভারেই মিচেল স্টার্ককে মেরেছিলেন দুটো বাউন্ডারি। তবে উড়ন্ত শুরুটা দক্ষিণ আফ্রিকা ধরে রাখতে পারেনি। অ্যাশটন অ্যাগারের বদলে দলে জায়গা করে নেওয়া গ্লেন ম্যাক্সওয়েল পরের ওভারেই বিদায় করেন বাভুমাকে। ফর্মে থাকা রাসি ফন ডার ডুসেনও বিদায় নেন মাত্র ২ রান করে। কুইন্টন ডি কক জশ হেইজেলউডকে স্কুপ করতে গিয়ে অদ্ভুতভাবে উইকেট হারান, ফলে পাওয়ার প্লে শেষ করার আগেই তিন ব্যাটারকে হারিয়ে ফেলে প্রোটিয়ারা।
এরপরের গল্পটা এইডেন মার্করামের একা লড়ে যাওয়ার। ওপাশে নিয়মিত সঙ্গী হারাতে থাকলেও মার্করাম লড়ে গেছেন প্রায় শেষতক। অষ্টম ব্যাটার হিসেবে ফেরার আগে তিনি করেছেন ৩৩ বলে ৪০ রান।
মার্করামের এই লড়াইয়ের পরেও অবশ্য বিশ্বকাপে নিজেদের সর্বনিম্ন রানের লজ্জা চোখরাঙানি দিচ্ছিল দক্ষিণ আফ্রিকাকে। ২০০৭ বিশ্বকাপে ভারতের বিপক্ষে ২০ ওভার খেলে ৯ উইকেটে মাত্র ১১৬ করতে পেরেছিল দলটি। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সে ‘কীর্তি’ ছাপিয়ে যাওয়ার শঙ্কা জেগেছিল দক্ষিণ আফ্রিকায়। তবে শেষ দিকে কাগিসো রাবাদার অপরাজিত ১৯ রানের ইনিংসে সে শঙ্কা এড়ায় দলটি। তবে তার চেয়ে কেবল দুটো রানই বেশি করতে পেরেছে বাভুমার দল। দুটো করে উইকেট নিয়ে অজি বোলার স্টার্ক, হেইজেলউড, আর অ্যাডাম জ্যাম্পা বড় ভূমিকা রেখেছেন এতে।
জবাব দিতে নেমে অজিদের শুরু থেকেই নিয়ন্ত্রণে রেখেছে দক্ষিণ আফ্রিকা। প্রোটিয়াদের নিয়ন্ত্রিত বোলিং তো ছিলই, অজিদের লড়াইটা যেন ছিল নিজেদের সঙ্গেও। টপ অর্ডারের অফফর্ম, সঙ্গে প্রথম ম্যাচের স্নায়ুচাপ, সব মিলিয়েই মামুলি লক্ষ্যটা মামুলি থাকেনি আর। দ্বিতীয় ওভারে অ্যারন ফিঞ্চ ফিরলেন, পঞ্চম ওভারে ডেভিড ওয়ার্নারও। পাওয়ারপ্লের একটু পর মিচেল মার্শও। ৩৮ রানে তিন উইকেট হারিয়ে অজিরা তখন অকূল পাথারই দেখছিল।
মার্কাস স্টয়নিস আর ম্যাথিউ ওয়েড যখন জুটি বাঁধলেন, তখনো দলের প্রয়োজন ছিল ২৮ বলে ৩৮ রানের। মনে হচ্ছিল দক্ষিণ আফ্রিকা বুঝি ম্যাচটা ছিনিয়েই নিলো! তবে এরপর দুজনে রান তুলছিলেন প্রয়োজন অনুসারেই। তাতে শেষ ওভারে দরকার ছিল ৭ রানের। শেষের রোমাঞ্চটাও ছিল তাই। তবে প্রথম বলে দুই আর পরের তিন বলে দুটো চারে দলকে জয়ের বন্দরে নিয়ে যান মার্কাস স্টয়নিস।
Discussion about this post