শিক্ষার আলো ডেস্ক
মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) অধীনে সারাদেশের বিভিন্ন শিক্ষা অফিস ও প্রতিষ্ঠানে ২৮টি পদে তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী নিয়োগের কার্যক্রম চলছে। এ নিয়োগের জন্য চার দফায় লিখিত পরীক্ষা নেওয়া হয়েছে। আরও তিন দফায় লিখিত পরীক্ষার পর মৌখিক পরীক্ষাসহ অন্য কার্যক্রম সম্পন্ন করা হবে।
তবে নিয়োগ পরীক্ষা সম্পন্ন হওয়ার আগেই চাকরি পেতে লেনদেনের অভিযোগ উঠেছে। একটি চক্র এসব চাকরি পাইয়ে দেওয়ার কথা বলে অনেক প্রার্থীর কাছ থেকে ১০-১৫ লাখ টাকা করে নিচ্ছেন। এ কাজে মাউশির একটি সিন্ডিকেট জড়িত রয়েছে বলেও অভিযোগ।
২০২০ সালের ২২ অক্টোবর বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের মাধ্যমে এ কার্যক্রম শুরু হয়। এরপর ৪ হাজার ৩২ পদের বিপরীতে আবেদন করেন প্রায় ৮ লাখ ৯৭ হাজার প্রার্থী।
নিয়োগ সংশ্লিষ্টরা জানান, মাউশির কর্মচারী নিয়োগ কার্যক্রম পরিচালনায় জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়, শিক্ষা মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ পাবলিক সার্ভিস কমিশন ও মাউশির দুজন সদস্য মিলে মোট পাঁচজন নিয়োগ কমিটিতে রয়েছেন। তারা এ নিয়োগ কার্যক্রম পরিচালনা করছেন। এ পাঁচজন মিলে ভাইভা বোর্ড তৈরি করারও কথা রয়েছে।
তবে একটি বোর্ডের মাধ্যমে ভাইবা নিয়ে কার্যক্রম শেষ করতে আরও দুই থেকে তিন বছর সময় লেগে যাবে। এ কারণে কমিটির সদস্য বাড়ানোর চিন্তা-ভাবনাও করা হচ্ছে বলে জানা যায়।
মাউশির উপ-পরিচালক (সাধারণ প্রশাসন) বিপুল চন্দ্র বিশ্বাস জাগো নিউজকে এ বিষয়ে বলেন, করোনা পরিস্থিতির কারণে ধাপে ধাপে নিয়োগ পরীক্ষা আয়োজন করা হচ্ছে। এ পর্যন্ত চার ধাপে লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে। আরও তিন ধাপে লিখিত পরীক্ষা আয়োজন করা হবে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, গত বছরের নভেম্বর মাস থেকে অধিদপ্তরের একটি সিন্ডিকেট অবৈধ উপায়ে এসব পদে নিয়োগের উদ্দেশ্যে আর্থিক লেনদেন শুরু করে। বিষয়টি ঊর্ধ্বতনরা আঁচ করে গত বছরের ১৫ ডিসেম্বর অধিদপ্তর থেকে সতর্কতা জারি করা হয়।
এছাড়া এর আগে নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নপত্রফাঁস হওয়ার অভিযোগও ওঠে। এ অভিযোগ ওঠার পর ৪ জুন বিকেলে ‘স্টোর কিপার’ ও ‘ক্যাশিয়ার’ পদে অনুষ্ঠেয় লিখিত পরীক্ষা স্থগিত করা হয়। ১ জুন বিকেলে পরীক্ষা স্থগিত করে বিজ্ঞপ্তি দেয় মাউশি।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ওই সতর্কতার পরও সিন্ডিকেটের তৎপরতা থামেনি। প্রার্থীদের চাকরি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে লেনদেন চলছেই। অসাধু এ প্রক্রিয়ায় মাউশির একাধিক কর্মকর্তা জড়িত বলেও অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এ নিয়ে জানতে চাইলে মাউশির পরিচালক (সাধারণ প্রশাসন) ও নিয়োগ কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক শাহেদুল খবির জাগো নিউজকে বলেন, সুষ্ঠু, শৃঙ্খল ও কঠোর নিরাপত্তার মাধ্যমে কর্মচারী নিয়োগ পরীক্ষা আয়োজন করা হচ্ছে। নভেম্বরের মধ্যে লিখিত পরীক্ষা শেষ করা হবে। এরপর ভাইভা শুরু হবে। এজন্য আগামী সপ্তাহে নিয়োগ কমিটির একটি সভা হওয়ার কথা রয়েছে। সেখানে পরবর্তী বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
নিয়োগ পাইয়ে দেওয়ার নামে অর্থ লেনদেনের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এ বিষয়ে আমার কাছে কোনো অভিযোগ আসেনি। যেখানে এখনো লিখিত পরীক্ষা শেষ হয়নি, সেখানে কেউ চাকরি পাইয়ে দেওয়ার কথা বলে অর্থ আদায়ের বিষয়টি হাস্যকর।
অবৈধভাবে কাউকে চাকরি পাইয়ে দেওয়ার সুযোগ নেই জানিয়ে প্রার্থীদের এ বিষয়ে সর্তক থাকার অনুরোধ জানান এই কর্মকর্তা।সৌজন্যে-জাগো নিউজ
Discussion about this post