অনলাইন ডেস্ক
হিরোশিমায় বিশ্বের প্রথম পারমাণবিক বোমা হামলায় বেঁচে যাওয়া জাপানি নাগরিক সুনাও সুবোই (৯৬) মৃত্যুবরণ করেছেন। সুবোইয়ের চিকিৎসকরা বলছেন রক্ত স্বল্পতার কারণে তার মৃত্যু হয়েছে। সুবোই মৃত্যুর আগ পর্যন্ত পারমাণবিক অস্ত্রবিরোধী প্রচারণা চালিয়ে গেছেন।
১৯৪৫ সালের ৬ আগস্ট হিরোশিমা শহরে যখন পারমাণবিক বোমা বিস্ফোরিত হয় তখন কলেজে যাচ্ছিলেন সুবোই, তখন তার বয়স ছিলো মাত্র ২০ বছর। মানব ইতিহাসের সবচেয়ে নৃশংস এ হামলায় সুবোইয়ের পুরো শরীর ঝলসে গিয়েছিলো। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের শেষদিকে প্রতিপক্ষ জাপানকে রুখতে ইতিহাসের প্রথম পারমানবিক বোমা হামলা চালায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। ওই হামলায় তাৎক্ষণিক মৃত্যুবরণ করেন এক লাখ ৪০ হাজারের বেশি মানুষ।
হিরোশিমায় সেদিনের পরিস্থিতি সম্পর্কে সুবোই বলেছিলেন যে, ৬ আগস্ট সম্পূর্ণ নগ্ন অবস্থায় আমি তিন ঘণ্টা দৌড়ে চেষ্টা করেছিলাম পালানোর কিন্তু পারিনি। পরে জ্ঞান হারানোর আগে একটা পাথরে নিজের নাম লিখেছিলাম। এরপর কয়েক সপ্তাহ পর আমার জ্ঞান ফেরে বলে জানিয়েছিলেন ডাক্তাররা। সুস্থ হওয়ার পর জাপানেই থিতু হন সুবোই। পেশায় ছিলেন গণিতের শিক্ষক। পড়ানোর ফাঁকে ছাত্রদের সাথে মাঝেমাঝেই শেয়ার করতেন বিশ্বযুদ্ধের অভিজ্ঞতা।
ভয়ংকর সে হামলায় ভাগ্যক্রমে বেঁচে যাওয়া সুবোই এরপর তার জীবন উৎসর্গ করেন পারমাণবিক অস্ত্র নির্মূলে। ২০১৬ সালে সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা হিরোশিমা সফরে গেলে ওবামার সাথেও সাক্ষাৎ করেছিলেন সুবোই। পারমাণবিক অস্ত্রবিরোধীদের মৃত্যুর আগ পর্যন্ত বলে গেছেন, হাল ছেড়ো না কখনও।
উল্লেখ্য, হিরোশিমা-নাগাসাকিতে পারমাণবিক বোমা হামলা থেকে বেঁচে যাওয়া প্রায় এক লাখ ২৭ হাজার জাপানি নাগরিক এখনও জীবিত আছেন।
Discussion about this post