শিক্ষার আলো ডেস্ক
গত ৩১ অক্টোবর থেকে রাজধানী ঢাকায় ১২ থেকে ১৭ বছরের স্কুল শিক্ষার্থীদের করোনার টিকা প্রয়োগ শুরু হয়েছে। পর্যায়ক্রমে চট্টগ্রামসহ অন্য শহরেও শীঘ্রই শিক্ষার্থীদের এ টিকা প্রয়োগ শুরুর কথা জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। এর প্রেক্ষিতে ১২ থেকে ১৭ বছরের স্কুল শিক্ষার্থীদের টিকাদানে জোর প্রস্তুতি চলছে চট্টগ্রামেও।
ইতোমধ্যে জেলার মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর ৬ষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণির (এসএসসি পরীক্ষার্থীসহ) প্রায় সাড়ে তিন লাখ শিক্ষার্থীর প্রয়োজনীয় তথ্য মাউশির (মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর) মাধ্যমে আইসিটি বিভাগে পাঠানো হয়েছে। এ তথ্য নিশ্চিত করে জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার জিয়াউল হায়দার হেনরী বলেন, আমরা প্রায় সাড়ে তিন লাখ শিক্ষার্থীর জন্ম নিবন্ধন নম্বরসহ প্রয়োজনীয় সব তথ্য মাউশিতে পাঠিয়েছি। মাউশি থেকে এসব তথ্য আইসিটি মন্ত্রণালয়ে পাঠানোর কথা। আমাদের পাঠানো তথ্যসমূহ আইসিটি বিভাগের সার্ভারে ইনপুট দেয়া হলে সংশ্লিষ্ট শিক্ষার্থীরা টিকার জন্য সহজেই সুরক্ষায় রেজিস্ট্রেশন করতে পারবে।
এর আগে মাধ্যমিক পর্যায়ের জেলার প্রায় ৭ লাখ শিক্ষার্থীর সংখ্যা মাউশিতে পাঠানো হয়। পরবর্তীতে এসব শিক্ষার্থীর জন্ম নিবন্ধন নম্বরসহ প্রয়োজনীয় তথ্যসমূহ পাঠানো হচ্ছে জানিয়ে জেলা শিক্ষা অফিসার বলেন, ইতোমধ্যে আমরা সাড়ে তিন লাখ শিক্ষার্থীর তথ্য পাঠিয়েছি। পর্যায়ক্রমে বাকি শিক্ষার্থীদের তথ্যও পাঠানো হচ্ছে।
উল্লেখ্য, স্কুল শিক্ষার্থীদের টিকাদান কার্যক্রম হাসপাতালের পরিবর্তে ভিন্ন কোনো প্রতিষ্ঠানে পরিচালনার সিদ্ধান্ত রয়েছে বলে আগেই জানিয়েছিলেন চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ ইলিয়াছ চৌধুরী। সিভিল সার্জন জানান, টিকা প্রয়োগে শিক্ষার্থীদের হাসপাতালে আনা হবে না। হাসপাতালের পরিবর্তে কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বা ভিন্ন কোনো কেন্দ্র নির্ধারণের নির্দেশনা রয়েছে। শিক্ষার্থীদের ফাইজারের টিকা দেয়া হবে জানিয়ে এর জন্য শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত কেন্দ্র লাগবে বলেও জানিয়েছিলেন সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ ইলিয়াছ চৌধুরী।
এদিকে, শিক্ষার্থীদের টিকা প্রয়োগে টিকাদান কেন্দ্র হিসেবে ৫টি স্কুলের ৬টি ভেন্যু প্রাথমিকভাবে নির্বাচন করে প্রস্তাবনা পাঠায় চট্টগ্রাম জেলা শিক্ষা অফিসারের কার্যালয়। প্রস্তাবনা পাওয়ার পর এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন করেন চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ ইলিয়াছ চৌধুরী। পরিদর্শন পরবর্তী এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন প্রস্তুত করে তা সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোতে পাঠিয়েছেন তিনি। পরিদর্শনের পর ৫টি স্কুলের মধ্যে চারটি স্কুল টিকাদান কেন্দ্র হিসেবে উপযোগী বলে জানিয়েছেন সিভিল সার্জন।
অর্থাৎ প্রাথমিকভাবে এই চারটি স্কুলে শিক্ষার্থীদের টিকা প্রয়োগ শুরু করা যাবে। সিভিল সার্জনের প্রতিবেদনে টিকাদান কেন্দ্র হিসেবে উপযোগী চারটি স্কুলের মধ্যে রয়েছে- একে খান মোড়ের মির্জা আহমেদ ইস্পাহানী উচ্চ বিদ্যালয়, চট্টেশ্বরী সড়কের চট্টগ্রাম গ্রামার স্কুল, লালখান বাজার ইস্পাহানি মোড়ের স্যার মরিস ব্রাউন ইন্টারন্যাশনাল স্কুল এবং এমএম আলী রোডের বাংলাদেশ এলিমেন্টারি স্কুল।
কলজিয়েট স্কুলকে টিকাদান কেন্দ্র হিসেবে প্রস্তাবনা দেয়া হলেও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি এখনো পুরোপুরি প্রস্তুত নয় বলে জানিয়েছেন সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ ইলিয়াছ চৌধুরী। এ বিষয়ে সিভিল সার্জন বলেন, শুধু এসি সুবিধা থাকলেই যথেষ্ট নয়। জেনারেটর সুবিধাও থাকতে হবে। সার্বিক বিষয় বিবেচনায় চারটি স্কুল টিকাদান কেন্দ্র হিসেবে উপযোগী মনে হয়েছে। পরিদর্শনের পর আমরা এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন পাঠিয়েছি। তবে আরো বেশ কিছু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান টিকাদান কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করা যাবে। যেগুলোতে এসি, জেনারেটরসহ সার্বিক সুবিধা রয়েছে। অর্থাৎ টিকাদান কেন্দ্র নিয়ে সমস্যা হবে না। প্রয়োজনে আরো কেন্দ্র নির্ধারণ করা যাবে।
অন্যদিকে, চট্টগ্রামে শিক্ষার্থীদের টিকাদান শুরুর বিষয়ে জানতে চাইলে জেলা শিক্ষা অফিসার জিয়াউল হায়দার হেনরী বলেন, ঢাকায় শিক্ষার্থীদের টিকাদান শুরু হয়েছে। এর মাঝে খুব অল্প সময়ে চট্টগ্রামেও শিক্ষার্থীদের টিকাদান শুরু হতে পারে বলে আমাদের জানানো হয়েছে। সেটা দশ দিনের মধ্যেও হতে পারে। সেভাবেই আমাদের প্রস্তুতি নিতে বলা হয়েছে। আমরা সেভাবে প্রস্তুতি নিচ্ছি।
Discussion about this post