অনলাইন ডেস্ক
প্যারিসে সফররত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ফ্রান্স এবার বিরল সম্মান দেখিয়েছে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন। পাশাপাশি, প্রধানমন্ত্রীর এবারের ফ্রান্স সফরকে ঐতিহাসিক বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
শুক্রবার (১২ নভেম্বর) দুপুরে প্যারিসের হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে সাংবাদিকদের সঙ্গে ব্রিফিংয়ে এ কথা বলেন মন্ত্রী।
সংবাদ ব্রিফিংয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম, পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন, ফ্রান্সে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত খন্দকার মোহাম্মদ তালহা, প্রধানমন্ত্রীর উপ-প্রেস সচিব কে এম শাখাওয়াত মুন।
সংবাদ ব্রিফিংয়ে প্রধানমন্ত্রীর ফ্রান্স সফরের বিভিন্ন কর্মসূচি, ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ও প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে রাষ্ট্রীয়ভাবে সফররত বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে যে সম্মান দেওয়া হয় তার বিশদ বিবরণ তুলে ধরা হয়। এছাড়াও, বাংলাদেশ ও ফ্রান্সের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক, ব্যবসা-বাণিজ্যসহ পারস্পরিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয়ে সহযোগিতা নিয়ে যে আলোচনা হয় তা সাংবাদিকদের জানানো হয়।
ব্রিফিংয়ে রাষ্ট্রদূত খন্দকার মোহাম্মদ তালহা বলেন, প্রধানমন্ত্রীকে ফ্রান্সে যে পরিমাণ সম্মান দেখানো হয়েছে তা সত্যিই বিরল। এথেকে বোঝা যায় ফ্রান্স বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়ন ও গভীরতর করার ক্ষেত্রে এবং বিভিন্ন সেক্টরে সম্পৃক্ত হতে অত্যন্ত আগ্রহী।
তিনি বলেন, সফরে প্রধানমন্ত্রী অফিসিয়াল কর্মসূচিতে যেখানেই গেছেন সেখানে তাকে সশস্ত্র সালাম, লাল গালিচা সংবর্ধনা দেওয়া হয়েছে।
ইউনেস্কোতেও বাংলাদেশের যে অবস্থান ও মর্যাদা প্রধানমন্ত্রীর এই সফরের মধ্য দিয়ে আরও অনেক ওপরে গেছে। আরও অনেক উঁচু পর্যায়ে গেছে।
রাষ্ট্রদূত বলেন, সারা বিশ্ব বাংলাদেশকে নিয়ে ভাবছে। সেই সঙ্গে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছে। এক সময় বাংলাদেশ সম্পর্কে যে ধারণা ছিল দারিদ্র্যপীড়িত, দুযোর্গপ্রবণ সেই ইমেজ কেটে গেছে। বাংলাদেশ যে উদীয়মান সম্ভাবনাময় দেশ সে বিষয় এখন অনেকের কাছে স্পষ্ট।
বিভিন্ন দেশকে সহযোগিতার মাধ্যমে বাংলাদেশ সম্পর্কের নতুন দিগন্ত উন্মোচন করছে জানিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে বাংলাদেশ নতুন দিগন্ত উন্মোচন করছে, অনেক দেশকে টেকনিক্যাল সহায়তা দেওয়া শুরু করেছে বাংলাদেশ।
অন্য দেশকে সহায়তা করতে একটা প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো প্রতিষ্ঠা করার পরিকল্পনা করার কথা জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, এটাকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেওয়া যায় কি না। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ইন্টারন্যাশনাল অ্যাসিসটেন্স প্রোগ্রাম এ রকম কিছু, অন্য অনেক দেশে যেভাবে আছে।
প্যারিস সফরকালে প্রধানমন্ত্রী দ্বিপাক্ষিক বিভিন্ন কর্মসূচির বাইরে ইউনেস্কো এবং প্যারিস পিস ফোরামের কর্মসূচিতে অংশ নেন।
সফরের প্রথম দিনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ফ্রান্স প্রেসিডেন্টের সরকারি বাসভবন এলিসি প্রাসাদে যান। এলিসি প্রাসাদ এবং পরে ইনভ্যালিড্স-এ লাল গালিচা সংবর্ধণা ও গার্ড অব অনার প্রদান করা হয় সফররত শেখ হাসিনাকে। সফরকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাখো এবং প্রধানমন্ত্রী জ্যা ক্যাসট্যাক্সের সঙ্গে দ্বি পাক্ষিক বৈঠক করেন। ফ্রান্সের প্রেসিডেন্টের আমন্ত্রণে তার সঙ্গে মধ্যাহ্নভোজে অংশ নেন শেখ হাসিনা। আনুষ্ঠানিক বৈঠক ছাড়াও মধ্যাহ্নভোজের সময়ও দ্বিপাক্ষিক ও বহুপাক্ষিক বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন দুই নেতা।
প্যারিস সফরকালে ইউনেস্কোর ৭৫তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীর কর্মসুচি, প্যারিস পিস ফোরাম- এ অংশগ্রহণ করবেন, ইউনেস্কো সদর দপ্তরে সৃজনশীল অর্থনীতির জন্য ‘ইউনেস্কো-বাংলাদেশ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান’ পুরস্কার বিতরণসহ সাইডলাইনে বেশ কয়েকটি কর্মসূচিতে অংশ নেন শেখ হাসিনা। ১৪ নভেম্বর তার দেশে ফেরার কথা রয়েছে।
Discussion about this post