শিক্ষার আলো ডেস্ক
“বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের প্রথম শ্রেণির কর্মকর্তা পদে নিয়োগের ভাইভা বোর্ডে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষক। তিনি খেয়াল করলেন, যে ছেলেটা এমসিকিউ ও রিটেন পরীক্ষায় প্রথম হয়েছে, সে ভাইভা দিতে আসেনি। তখন তিনি সংশ্লিষ্টদের বললেন, ওই নিয়োগ প্রার্থীকে ফোন দিতে।
তারা জানালেন, ছেলেটা গতমাসে মারা গেছে। বুকের মধ্যে ধাক্কা লেগে উঠলো ওই শিক্ষকের। তিনি তালিকার নামটা ভালোভাবে পড়ে দেখলেন- ছেলেটার নাম মাসুদ আল মাহাদী (অপু)।
তার প্রিয় ছাত্রদের একজন।” ঘটনাটি নিজ ফেসবুক পোস্টে বর্ণনা করেছেন গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সাবেক ছাত্র তারেক হাসান নির্ঝর।
গত ২৭ সেপ্টেম্বর নিয়োগ প্রার্থী ও ঢাবির সাবেক ছাত্র মাসুদ আল মাহদী অপু (২৬) আত্মহত্যা করেন। বিএসইসি’র নিয়োগ পরীক্ষা ছিল আর জীবনের শেষ চাকরি পরীক্ষা।
রাজধানীর চাঁনখারপুলের নাজিম উদ্দিন রোডের একটি বাসা থেকে অপুর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করা হয়। জরুরি সেবা ৯৯৯-এ ফোন পেয়ে লাশটি উদ্ধার করে পুলিশ।
সূত্র মতে, ১৮ নভেম্বর আয়োজিত ওই ভাইভা বোর্ডে উপস্থিত ঢাবির গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের ওই শিক্ষক নিজেই এই হৃদয়বিদারক ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, লিখিত ও এমসিকিউ পরীক্ষায় এত ভালো নম্বর দেখে আমরা ওই নিয়োগ প্রার্থীর সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করি।
কিন্তু পরে জানতে পারলাম ছেলেটি আমার বিভাগের শিক্ষার্থী মাসুদ আল মাহাদী (অপু)। যে গত ২৭ সেপ্টেম্বর আত্মহত্যা করেছে। বিষয়টি জানতে পেরে আমি নিজেও খুব কষ্ট পেয়েছি।
অপু সূর্যসেন হলের আবাসিক শিক্ষার্থী ছিলেন। পিরোজপুরের স্বরূপকাঠিতে জন্মগ্রহণ করা অপু দুই ভাইয়ের মধ্যে বড় ছিলেন। নতুন ধারার চলচ্চিত্র নির্মাণ করা ছিল তার স্বপ্ন। স্নাতকোত্তর শেষে তিনি সরকারি চাকরির পরীক্ষার প্রস্তুতি নেওয়া শুরু করেন।
বছর খানেকের অক্লান্ত প্রস্তুতির পর সফলতা না পেয়ে হতাশার কাছে হার স্বীকার করে নেন। জীবনের শেষ পরীক্ষায় প্রথম হয়েও সেই সুসংবাদ আর পাওয়া হলো না তার।
Discussion about this post