খেলাধূলা ডেস্ক
৪৯ রান তুলতে যেখানে ৪ উইকেট হারায় বাংলাদেশ, সেখানে ওই ৪ উইকেটেই স্কোর ২৫৩। আর এই যাত্রার ‘নায়ক’ লিটন দাস ও মুশফিকুর রহিম। দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ে লিটন তুলে নিয়েছেন টেস্ট ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরি। অন্যদিকে মুশফিকও হাঁটছেন শতকের পথে।
আজ (শুক্রবার) জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে শুরু হয়েছে বাংলাদেশ-পাকিস্তানের প্রথম টেস্ট। টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে বিপদে পড়া বাংলাদেশকে পথে ফেরান লিটন-মুশফিক। শুধু কী পথে ফেরানো, পাকিস্তানি বোলারদের কঠিন পরীক্ষা নিয়ে চালকের আসনে বসিয়েছেন দলকে। প্রথম দিন শেষে বাংলাদেশের সংগ্রহ ৪ উইকেটে ২৫৩ রান। লিটন অপরাজিত ১১৩ রানে। মুশফিক দ্বিতীয় দিন শুরু করবেন ৮২ রান নিয়ে। পঞ্চম উইকেট জুটিতে তারা অবিচ্ছিন্ন ২০৪ রানে।
সেঞ্চুরিতে লিটনের ‘জবাব’
সীমিত ওভারের ক্রিকেটে সময়টা ভালো না গেলেও টেস্টের পথচলা খারাপ ছিল না। তাই টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ কিংবা তার আগে ঘরের মাঠের কুড়ি ওভারের সিরিজের ধাক্কা কাটিয়ে উঠতে পাকিস্তানের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজকেই হয়তো বেছে নিয়েছেন লিটন দাস। আর ঘুরে দাঁড়ানোর জন্য এর চেয়ে ভালো কিছু আর কী হতে পারে! চট্টগ্রাম টেস্টের প্রথম ইনিংসে টেস্ট ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরি পেয়েছেন তিনি। তাতে হয়তো সমালোচকদের কড়া ‘জবাব’ও দেওয়া হলো তার!
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ধারাবাহিক ব্যর্থতায় সমালোচনার তীরে বিদ্ধ হয়েছেন লিটন। যে কারণে বাদ পড়েছিলেন পাকিস্তানের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজের দল থেকে। তবে ফরম্যাট বদলানোর সঙ্গে সঙ্গে বদলে গেলো লিটনের ফর্মও। যদিও গত কয়েক টেস্ট ধরেই এই ফরম্যাটে বাংলাদেশ দলের সবচেয়ে ধারাবাহিক ব্যাটার তিনি। চলতি বছর উইকেটকিপার ব্যাটার হিসেবে সবচেয়ে বেশি গড় তার। সেই ধারাবাহিকতায় চট্টলার মাটিতে দারুণ এক ইনিংসে নিজের প্রথম সেঞ্চুরির দেখা পেয়েছেন লিটন। ১৯৯ বলে শতক পূরণ করেছেন তিনি।
লিটন ও মুশফিকের দুর্দান্ত জুটিতে ভর করে প্রথম দিন শেষে ৪ উইকেট হারিয়ে ২৫৩ রানের সংগ্রহ পেয়েছে বাংলাদেশ।
চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে শুক্রবার সফরকারী পাকিস্তানের বিপক্ষে দুই ম্যাচ টেস্ট সিরিজের প্রথমটিতে টস জিতে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন বাংলাদেশের অধিনায়ক মুমিনুল হক।
প্রথমে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা ভালো করলেও বেশিক্ষণ থিতু হনে পারেননি সাইফ হাসান। পঞ্চম ওভারে শাহিন আফ্রিদির বাউন্সারে বল নিয়ন্ত্রণে না রাখতে পেরে উইকেট হারান এই ওপেনার। ব্যক্তিগত ১৪ রান করে সাঝঘরে ফেরেন তিনি। সাইফের বিদায়ের পর বেশিক্ষণ থিতু হতে পারেননি আরেক ওপেনার সাদমানও। হাসান আলির বলে এলবিডব্লিউ হয়ে ব্যক্তিগত ১৪ রানে বিদায় নেন তিনি।
ব্যাট করতে নেমে ইনিংস বাড়াতে ব্যর্থ হন অধিনায়ক মুমিনুল হকও। সাজিদ খানের বলে ব্যক্তিগত ৬ রানে উইকেট হারান তিনি। তিনে ব্যাট করতে নামা নাজমুল হোসেন শান্তও টিকতে পারেননি বেশিক্ষণ। ফাহিম আশরাফের বলে সাজিদ খানের হাতে ক্যাচ তুলে ব্যক্তিগত ১৪ রানে উইকেট হারান তিনি।
চার উইকেট হারিয়ে বাংলাদেশ যখন ব্যাটিং বিপর্যয়ে তখন মাঠে নেমে লিটনের সঙ্গে দলের হাল ধরেন মুশফিক। ব্যাট হাতে থিতু হয়ে বাংলাদেশের সংগ্রহ বাড়ানোর দিকে মনোযোগ দেন এই দুই ব্যাটার। এর মাঝে লিটন ক্যারিয়ারের ১০ম টেস্ট ফিফটি তুলে নেন ৯৫ বলে। আর মুশফিক ক্যারিয়ারের ২৪তম ফিফটি তুলে নেন ১০৮ বল খেলে, ৮ বাউন্ডারিতে।
ফিফটি ছোঁয়ার পর শাহিন আফ্রিদির বলে ব্যক্তিগত ৬৭ রানে একবার জীবন পান লিটন। এরপর ফের ব্যাট হাতে রানের ফোয়ারা ছোটান তিনি। মুশফিকের সঙ্গে তার জুটিতে আসে ১৫০-এর বেশি, যা চট্টগ্রামের মাটিতে পঞ্চম উইকেটে সর্বোচ্চ জুটি। পরে এই জুটিতে ২০০-এর বেশি রান আসে।
এদিকে দারুণ ইনিংস খেলার পথে মুশফিক বাংলাদেশের মাটিতে সর্বোচ্চ টেস্ট রানের মালিক বনে গেছেন। এতদিন ৩৭ ম্যাচের ৭০ ইনিংসে ২৬২০ রান নিয়ে তালিকার শীর্ষে ছিলেন তামিম ইকবাল। মুশফিক তাকে ছাড়িয়ে গেলেন ৪৪ ম্যাচের ৭৮তম ইনিংসে। ২৫৪৫ রান নিতে তালিকার তিনে আছেন সাকিব আল হাসান।
Discussion about this post