অনলাইন ডেস্ক
একটি মহল শিক্ষার্থীদের ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে রাজনৈতিক ফায়দা লুটতে চায় বলে অভিযোগ করেছেন তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ। একই সঙ্গে নিরাপদ সড়ক প্রতিষ্ঠা করাসহ বিভিন্ন দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের রাজপথ ছেড়ে ক্লাসে ফিরে যাওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে ঢাকা সাব-এডিটরস কাউন্সিল-ডিএসইসি মেধাবৃত্তি ২০২১ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তথ্যমন্ত্রী ওই অভিযোগ করেন।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের সন্তানেরা নিরাপদ সড়কের জন্য আন্দোলন করছে। আমি তাদের ধন্যবাদ জানাই। নিরাপদ সড়ক আমাদের প্রয়োজন, সরকারও এ বিষয়ে অনেক পদক্ষেপ নিয়েছে, শিক্ষার্থীদের জন্য ইতিমধ্যে হাফ ভাড়া করে দিয়েছে। বেসরকারি মালিক সমিতি ঢাকায় হাফ ভাড়া করেছে, চট্টগ্রামের জন্য আলোচনা করছে। আশা করব, তারা এখন ক্লাসে ফিরে যাবে। করোনার কারণে অনেক ক্ষতি হয়েছে, এখন ক্লাসে ফিরে যাওয়ার সময়।
কোমলমতি ছাত্রছাত্রীদের নিয়ে রাজনীতি করা শুরু হয়েছে ও তাদের ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে অনেকে রাজনৈতিক ফায়দা লোটার চেষ্টা করছে অভিযোগ করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, রামপুরার ঘটনা সেই অপচেষ্টার অংশ বলেই অনেকে মতপ্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন, ‘আমাদের দেশে কিছু পক্ষ আছে পরগাছার মতো। তারা অপরের ওপর ভর করে নিজেদের রাজনৈতিক উদ্দেশ্য হাসিল করতে চায়। এই পরগাছারা সক্রিয় হয়ে গেছে। তাই এ ব্যাপারে সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে। আমি অভিভাবকদের অনুরোধ জানাব, এ ব্যাপারে আপনারাও সতর্ক থাকবেন। সন্তানেরা যাতে ক্লাসে ফেরে, সেদিকে আমাদের লক্ষ রাখতে হবে।’
বিএনপির চেয়ারপারসন অসুস্থ খালেদা জিয়াকে বিদেশ না পাঠালে সরকারকে টেনেহিঁচড়ে নামানো হবে—দলটির নেতাদের এমন বক্তব্য উল্লেখ করে তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেন, ‘তাঁরা তো আমাদের সাড়ে ১২ বছর আগে থেকে টেনেহিঁচড়ে নামাতে চাচ্ছেন এবং সেটি করতে গিয়ে রশি ছিঁড়ে তাঁরাই পড়ে গেছেন। আমি মির্জা ফখরুল সাহেবকে অনুরোধ জানাব, আরও টান দিলে আপনারা আরও পড়ে যাবেন। তাই সেই চেষ্টা করে কোনো লাভ নেই।’
খালেদা জিয়া যাতে সর্বোচ্চ স্বাস্থ্যসেবা পান, চিকিৎসা পান, সে জন্য বিএনপি বা খালেদা জিয়ার পরিবার যেভাবে চাইবে, সেভাবেই দেশের অভ্যন্তরে সরকার সব ধরনের ব্যবস্থা করতে বদ্ধপরিকর বলে জানান হাছান মাহমুদ। তিনি বলেন, ‘খালেদা জিয়া ইতিপূর্বেও অসুস্থ হয়েছিলেন এবং দেশের মধ্যে চিকিৎসা নিয়েই তিনি ভালো হয়েছেন। এবারও আশা করি, আমাদের মেধাবী ডাক্তারদের সুচিকিৎসায় তিনি শিগগিরই সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে যাবেন।’
এটকোর সঙ্গে তথ্যমন্ত্রীর বৈঠক
দেশের বেসরকারি টিভি চ্যানেলের স্বত্বাধিকারীদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব টেলিভিশন চ্যানেল ওনার্সের (এটকো) প্রতিনিধিরা গতকালে দুপুরে তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী হাছান মাহমুদের সঙ্গে সচিবালয়ে তাঁর দপ্তরে এক বৈঠক করেছেন।
বৈঠক শেষে তথ্যমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, ‘হৃদ্যতাপূর্ণ বৈঠকে এটকো উপস্থাপিত বিষয়ের একটি হচ্ছে দেশে যেসব মোবাইল ফোন কোম্পানি আছে, তারা লাইসেন্স না নিয়েই ওটিটি প্ল্যাটফর্ম পরিচালনা করছে, কনটেন্ট বানাচ্ছে, অনলাইনে প্রচার করছে ও সেখান থেকে উপার্জন করছে, যা তাদের লাইসেন্সের শর্ত ভঙ্গ করে।
টেলিযোগাযোগ বিভাগ, বিটিআরসি ও মোবাইল অপারেটরদের নিয়ে আমরা বিষয়টি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করব। তারা যদি নিয়মবহির্ভূতভাবে এটি করে, সে ক্ষেত্রে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
তথ্যমন্ত্রী আরও বলেন, ‘আরেকটি বিষয়, আইপিটিভি রেজিস্ট্রেশন দেওয়ার প্রয়োজন আছে কি না? এটকোর পক্ষ থেকে সেই প্রশ্ন তারা তুলেছে। আইপিটিভি পৃথিবীর বাস্তবতা। কিন্তু ব্যাঙের ছাতার মতো আইপিটিভি সমীচীন নয় বলে আমি মনে করি।
আমরা ইতিমধ্যে ১৪টি আইপিটিভিকে রেজিস্ট্রেশন দেওয়ার অনুমতি দিয়েছি। আইপিটিভি-সংক্রান্ত নীতিমালা মন্ত্রিসভায় অনুমোদিত হয়েছে। নীতিমালায় বলা আছে, আইপিটিভি কোনোভাবেই সংবাদ প্রচার করতে পারবে না, কেব্লের মাধ্যমে প্রচার করতে পারবে না। আমরা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে অত্যন্ত যত্নের সঙ্গে আইপিটিভির ব্যাপারে অগ্রসর হতে চাই, যথেচ্ছভাবে নয়।’
এটকোর সিনিয়র সহসভাপতি ইকবাল সোবহান চৌধুরী, সহসভাপতি আরিফ হাসান, পরিচালক আহমেদ জোবায়ের, আবদুল হক, কাজী জাহেদুল হাসান ও আশফাক উদ্দীন এবং সদস্য নাসির উদ্দীন বৈঠকে অংশ নেন।
Discussion about this post