শিক্ষার আলো ডেস্ক
২০২২ শিক্ষাবর্ষের প্রাথমিক স্তরের বিনামূল্যের পাঠ্যপুস্তক মুদ্রণ ও সরবরাহ নিয়ে কোনও অনিশ্চয়তা নেই, তবে এখনও সংকট কাটেনি মাধ্যমিকে।শুক্রবার (৩ ডিসেম্বর) পর্যন্ত প্রাথমিকের ৮ কোটির বেশি বই ছাপার কাজ শেষ হয়েছে। ইতোমধ্যে বেশিরভাগ বই উপজেলায় পৌঁছেও গেছে। আগামী ১৫ ডিসেম্বরের মধ্যে সব বই পৌঁছে যাবে।
অপরদিকে শুক্রবার পর্যন্ত মাধ্যমিক স্তরের পাঠ্যবই ছাপা হয়েছে ৬৫ শতাংশ এবং মাঠ পর্যায়ে পৌঁছেছে মাত্র ৪৫ শতাংশ।
এ বিষয়ে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক আলমগীর মুহম্মদ মনসুরুল আলম বলেন, ‘বছরের প্রথম দিন সব প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের হাতে বই পৌঁছে যাবে। মোট ১০ কোটির মতো বইয়ের মধ্যে আট কোটির বেশি বই ছাপা হয়েছে। এ পর্যন্ত বই ছাপা হয়েছে ৮৫ শতাংশ। বেশিরভাগ বই উপজেলা পর্যায়ে পৌঁছেও গেছে।’
এ বিষয়ে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড-এনসিটিবি’র সদস্য (পাঠ্যপুস্তক) অধ্যাপক মো. ফরহাদুল ইসলাম বলেন, ‘প্রাথমিকের বই নিয়ে কোনও সমস্যা নেই। যথাসময়ে শতভাগ বই পৌঁছে যাবে।’
মাঠ পর্যায়ে বিনামূল্যের পাঠ্যবই পৌঁছার বিষয়ে প্রাথমিকের ঢাকা বিভাগীয় উপ-পরিচালক মো. ইফতেখার হোসেন ভূঁইয়া বলেন, ‘অধিকাংশ বই উপজেলা পর্যায়ে পৌঁছে গেছে। আগামী ১ জানুয়ারি শিক্ষার্থীরা বই পাবে। কোনও সমস্যা নেই।’
সরকার ২০১০ সাল থেকে বছরের প্রথম দিন (১ জানুয়ারি) ‘বই উৎসব’ করে পাঠ্যবই বিতরণ করে আসছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেট ভাঙতে দ্বিতীয় দফার দরপত্র আহ্বানের কারণে দেরিতে বই ছাপার কাজ শুরু হয়। ফলে সঠিক সময়ে বই ছাপা নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দেয়। তাছাড়া ৫ থেকে ৬টি মুদ্রণ প্রতিষ্ঠান আর্থিক সংকটে কাগজ কিনতে না পারায় মাধ্যমিকের বইয়ের ছাপার কাজ পিছিয়ে পড়ে। এসব কারণে মাধ্যমিকের শতভাগ বই ডিসেম্বরের আগে ছাপা শেষ করা এবং মাঠ পর্যায়ে পৌঁছানো সম্ভব হবে না বলে সংশ্লিষ্টরা জানান।
মাধ্যমিকের বই ছাপার বিষয়ে এনসিটিবি সদস্য (পাঠ্যপুস্তক) অধ্যাপক মো. ফরহাদুল ইসলাম শুক্রবার (৩ ডিসেম্বর) বলেন, ‘মাধ্যমিকের ৪৫ শতাংশ বই মাঠে পৌঁছে গেছে। আর ছাপা হয়েছে ৬৫ শতাংশের মতো। বড় প্রেসগুলোতে কোনও সমস্যা নেই। ৫-৬টি প্রেস কাগজ কিনতে গিয়ে দুর্বল হয়ে পড়েছে। যারা দেরিতে শুরু করেছে, তাদের কাছ থেকে ৫০ শতাংশ বই নিতে হবে। এটুকু ছাড়া আর কোনও গ্যাপ নেই।’
এনসিটিবি সূত্রে জানা গেছে, ২০২২ শিক্ষাবর্ষে এবার প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরের জন্য মোট ৩৪ কোটি ৭০ লাখ ২২ হাজার ১৩০ কপি পাঠ্যবই ছাপা হচ্ছে। এরমধ্যে প্রাথমিক স্তরের মোট বই ছাপা হচ্ছে ৯ কোটি ৯৮ লাখ ৫৮ হাজার ৮৭৪ কপি। আর মাধ্যমিক স্তরের জন্য মোট ২৪ কোটি ৭১ লাখ ৬৩ হাজার ২৫৬ হাজার কপি পাঠ্যবই ছাপা হচ্ছে।
জানা গেছে, শেষ পর্যন্ত স্কুলগুলোতে বই পৌঁছানো গেলেও এ বছর বই উৎসব হবে কিনা, তা নিয়ে অনিশ্চয়তা রয়েছে। গত ১৮ নভেম্বর সচিবালয়ে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেছেন, ‘করোনার সংক্রমণের কারণে আগামী বছরও পাঠ্যপুস্তক উৎসব হয়তো করা যাবে না। তবে উৎসব না হলেও বছরের শুরুতে শিক্ষার্থীরা নতুন বই পাবে।’
Discussion about this post