শিক্ষার আলো ডেস্ক
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনা থাকার পরও রাজস্ব খাতে স্থানান্তর প্রক্রিয়ায় দীর্ঘসুত্রিতার কারণে ১৮ মাস যাবত বেতন ভাতা পাচ্ছেন না দেশের ৪৯টি সরকারি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে নিয়োগবিধির সকল কোটা অনুসরণ করে নিয়োগপ্রাপ্ত ৭৮৬ জন কারিগরি শিক্ষক। মঙ্গলবার সকাল ১১টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এই দাবি করেন ‘আমরা মুক্তিযোদ্ধার সন্তান’ কারিগরি শাখার সভাপতি সুমন হায়দার।
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন বীরশ্রেষ্ঠ ল্যান্স নায়েক নূর মোহাম্মদ শেখ এর ছেলে মোস্তফা কামাল, ‘আমরা মুক্তিযোদ্ধার সন্তান’ কারিগরি শাখার সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ ওমর ফারুক, ঢাকা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের জুনিয়র ইন্সট্রাক্টর ছাওরা পারভীন ও আমিনুল ইসলাম, বীর বিক্রম শাহ আলী আকন্দ এর ছেলে ও সিরাজগঞ্জ পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের ইন্সট্রাক্টর মেহেদি হাসান দানিয়াল, শরীয়তপুর পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের ইন্সট্রাক্টর রেজাউল করিমসহ দেশের বিভিন্ন পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষকরা।
‘আমরা মুক্তিযোদ্ধার সন্তান’ কারিগরি শাখার সভাপতি সুমন হায়দার বলেন, কারিগরি শিক্ষা সম্প্রসারণের লক্ষ্যে দেশের সরকারি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট সমূহের মানোন্নয়ন ও শিক্ষক সল্পতা দূরীকরণের জন্য জুলাই ২০১০ তারিখে সরকার স্কিলস এন্ড ট্রেনিং এনহ্যান্সমেন্ট প্রজেক্ট (স্টেপ) শীর্ষক প্রকল্পটি গ্রহণ করেন, যা ধারাবাহিকভাবে ৩০ জুন ২০১৯ তারিখ পর্যন্ত চলমান ছিল। ওই প্রকল্পের আওতায় সরকার দেশের ৪৯টি সরকারি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে নিয়োগবিধির সকল কোটা অনুসরণ করে দুই ধাপে ১০১৫ জন শিক্ষককে নিয়োগ প্রদান করেন (বর্তমানে কর্মরত ৭৭৭জন)। বিগত ২০১৯-২০২০ অর্থ বছরে সরকারের থোক বরাদ্দ খাত হতে ৭৮৬ জন শিক্ষকের বেতন ভাতাদি পরিশোধ করা হয়।
তিনি আরও বলেন, প্রকল্পের ৭৮৬ জন শিক্ষকের চাকরী মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর অনুশাসন/নির্দেশনা থাকা সত্ত্বেও রাজস্ব খাতে স্থানান্তরের প্রক্রিয়া দীর্ঘ সময়ের ব্যবধানে সম্পাদন করা হয়নি। করোনা মহামারি পরিস্থিতিতে আমরা বিগত ১৮ মাস যাবত বেতন ভাতাদি না পেয়ে অত্যন্ত মানবেতর ও উদ্বিগ্ন অবস্থায় দিন অতিবাহিত করছি। এমতাবস্থায়, ৭৮৬ জন শিক্ষক ও তাদের পরিবার-পরিজন এবং বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের কথা বিবেচনায় নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনার আলোকে কাজটি দ্রুত সম্পন্ন করার ও বেতন ভাতাদি প্রাপ্তিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের বিনীত অনুরোধ করছি।
‘আমরা মুক্তিযোদ্ধার সন্তান’ কারিগরি শাখার সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ ওমর ফারুক বলেন, বেতন ভাতা না পেয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছি আমরা। আজ ১৮ মাস হয়ে গেলো বেতন ছাড়া। টাকার অভাবে ক্যান্সারের চিকিৎসা করতে না পারায় ২ জন সহকর্মী মারা গেছেন। একজন সহকর্মী রোড অ্যাক্সিডেন্টে মারা গেছেন তার পরিবার আজ অনাহারে, অর্ধাহারে। আমরা প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনার দ্রুত বাস্তবায়ন চাই। আমাদের বকেয়া বেতন পরিশোধ ও দ্রুত রাজস্ব খাতে চাকরি স্থানান্তর প্রক্রিয়ায় প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
সংবাদ সম্মেলন শেষে প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন করেন কারিগরি শিক্ষকরা। এসময় তারা তাদের দুঃখ, দুর্দশার কথা সাংবাদিকদের সামনে তুলে ধরেন।
Discussion about this post