অনলাইন ডেস্ক
বাড়িঘর, কারখানা, অফিস থেকে বাস, ট্রাক কিংবা ব্যক্তিগত গাড়ি সবকিছুরই জানালা চারকোনা বা চতুর্ভুজাকৃতির। কিন্তু যাঁরা জীবনে একবার হলেও বিমান দেখেছেন বা চড়েছেন, তাঁরা জানেন বিমানের জানালা স্বাভাবিক যানবাহনের মতো চতুর্ভুজাকৃতির নয়। কিছুটা গোলাকার। কখনো কি মনে প্রশ্ন জেগেছে, কেন বিমানের জানালা গোলাকার হয়? শুধু সৌন্দর্যবর্ধনের জন্যই কি দেওয়া হয়েছে গোলাকার জানালা? নাকি রয়েছে অন্য কোনো কারণ?
যুক্তরাজ্যভিত্তিক গণমাধ্যম দি ইনডিপেনডেন্ট জানাচ্ছে, রাইট ভ্রাতাদের (উইলবার রাইট ও অরভিল রাইট) আবিষ্কার করা উড়োজাহাজে কোনো জানালাই ছিল না।
নিয়ন্ত্রণকক্ষের অনাবৃত ঊর্ধ্বাংশের এই নকশা বহু বছর ধরেই বিমান নির্মাণের ক্ষেত্রে অনুসরণ করা হয়েছে। পরবর্তীকালে উচ্চ গতি ও অধিক উচ্চতায় উড্ডয়ন ক্ষমতাসম্পন্ন বিমান নির্মাণ এবং যাত্রীদের ঝড়, বৃষ্টি ও তীব্র বায়ুপ্রবাহ থেকে রক্ষা করতে বিমানের ওপরের অংশটুকু ঢেকে দেওয়া হয় এবং বসানো হয় জানালা। আর সে জানালাগুলো ছিল এখনকার বাস-ট্রাকের মতই চারকোনা বা চতুর্ভুজাকৃতির। পঞ্চাশ দশক পর্যন্ত চারকোনা জানালা দিয়েই নির্মাণ করা হচ্ছিল বিমান।
কিন্তু ১৯৫৩ সালে মর্মান্তিক এক বিমান দুর্ঘটনা পাল্টে দেয় সবকিছু। সে দুর্ঘটনায় প্রাণ হারান ৫৬ যাত্রী। দুর্ঘটনার তদন্তে নেমে প্রকৌশলীরা আবিষ্কার করেন, যান্ত্রিক ত্রুটি বা ইঞ্জিনের কোনো ঝামেলা নয়, দুর্ঘটনার মূল আসামি বিমানের বর্গাকার জানালাগুলো। কিন্তু তা কীভাবে সম্ভব?
বর্গাকার বা আয়তকার জানালায় চারটি কোণ থাকে। উড়ন্ত অবস্থায় বাতাসের চাপ জানালার কাচের মাঝখানের তুলনায় চারটি কোণেই আপতিত হয় বেশি। কখনো কখনো চাপ অতিরিক্ত হয়ে গেলে জানালার কাচের কোণগুলোর পক্ষে তা ধরে রাখা সম্ভব হয় না। ফলে জানালাটি ভেঙে যায়। আর এ কারণেই ১৯৫৩ সালের মর্মান্তিক বিমান দুর্ঘটনাটি ঘটে।
এ ঘটনার পর থেকেই গোলাকৃতির জানালা দিয়ে বিমান নির্মাণ শুরু হয়। এতে করে বায়ুর চাপ জানালার চারদিকে সমানভাবে ছড়িয়ে পড়ে। ফলে তা ভেঙে যাওয়ার ঝুঁকি থাকে না। বিমানযাত্রা থাকে নিরাপদ।
Discussion about this post