করোনাভাইরাসের কারণে সৃষ্ট পরিস্থিতিতে রফতানিমুখী শিল্পপ্রতিষ্ঠান তথা পোশাক শ্রমিকদের তিন মাসের বেতন-ভাতার পাঁচ হাজার কোটি টাকার তহবিলের সার্কুলার ইতোমধ্যেই জারি করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এ তহবিল থেকে চলতি মাসের বেতন এপ্রিলের ৩০ তারিখেই দেয়া হবে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির।
রোববার (৫ এপ্রিল) প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবন এক সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে উপস্থিতি থেকে তিনি এ কথা বলেন।
গভর্নর বলেন, ‘রফতানি খাতের শ্রমিকদের তিন মাসের বেতন-ভাতার জন্য যে পাঁচ হাজার কোটি টাকার তহবিল গঠন করা হয়েছে তার একটা নীতিমালা বাংলাদেশ ব্যাংক প্রণয়ন করেছে। এ তহবিল থেকে এপ্রিল, মে এবং জুন-এ তিন মাসের বেতন-ভাতা দেয়া হবে। আশা করছি, এপ্রিল মাসের শেষ তারিখেই এপ্রিল মাসের বেতন এ তহবিল থেকে দেয়া সম্ভব হবে।’
করোনাভাইরাসের কারণে সৃষ্ট পরিস্থিতিতে রফতানিমুখী শিল্পপ্রতিষ্ঠানের জন্য পাঁচ হাজার কোটি টাকার প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বৃহস্পতিবার (২ এপ্রিল) বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি বিভাগ এ-সংক্রান্ত এক সার্কুলার জারি করেছে।
সার্কুলার অনুযায়ী, এই প্যাকেজ থেকে বিনা সুদে ঋণ পাবে উৎপাদনের ন্যূনতম ৮০ শতাংশ পণ্য রফতানি করছে-এমন সচল প্রতিষ্ঠান। ঋণের অর্থ দিয়ে কেবল শ্রমিক-কর্মচারীদের এপ্রিল, মে এবং জুন এ তিন মাসের বেতন-ভাতা পরিশোধ করা যাবে। সুদবিহীন এ ঋণে সর্বোচ্চ ২ শতাংশ হারে সার্ভিস চার্জ নিতে পারবে ব্যাংকগুলো।
সংবাদ সম্মেলনে ফজলে কবির বলেন, ‘করোনার সঙ্কটেও সুষ্ঠভাবে অর্থের সরবরাহ নিশ্চিতে বাংলাদেশ ব্যাংক বেশ কয়েকটি পুনঃঅর্থায়ন তহবিলের আকার বৃদ্ধি করেছে। যেমন-এক্সপোর্ট ডেভেলপমেন্ট ফান্ড ৩ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলারের ছিল, সেটা বাড়িয়ে ৫ বিলিয়ন করা হয়েছে। পাশাপাশি এ ফান্ডের সুদহার ২ দশমিক ৭ শতাংশ থেকে কমিয়ে ২ শতাংশে নামিয়ে এনেছি।’
তিনি বলেন, ‘আমরা ১ এপ্রিল থেকে তফসিলি ব্যাংকসমূহের নগদ জমার হার (সিআরআর) হ্রাস করে সাপ্তাহিক গড়ভিত্তিতে ৫ শতাংশ করেছি, ইতোপূর্বে তা ৫ দশমিক ৫ শতাংশ ছিল। দেশে তফসিলি ব্যাংকসমূহে ৬ হাজার ৫০০ কোটি টাকা অতিরিক্ত জমা থাকবে। যা দিয়ে তারা তারল্য মেটাবে।’
তিনি আরও বলেন, ব্যাংকিং খাতে পর্যাপ্ত তারল্য সরবরাহ নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ ব্যাংকের রেপো সুদহার ২৫ বেসিস পয়েন্ট কমিয়েছে। যার ফলে ব্যাংকসমূহকে তারল্য যোগান দিতে কম ব্যয় করতে হবে।
স্বাধারণ ছুটি চলাকালীন জনগণের নগদ অর্থের চাহিদা মেটানোর জন্য সীমিত আকারে ব্যাংক খোলা রাখা হয়েছে বলেও জানান তিনি। বলেন, ক্রেডিক কার্ডে মে পর্যন্ত কোনো ধরনের জরিমানা আরোপ না করার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
এছাড়া করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব মোকাবিলায় বৈদেশিক মুদ্রার লেনদেনের ক্ষেত্রে বেশ কিছু শিথিলতা আনয়ন করা হয়েছে বলেও জানান গর্ভনর।
Discussion about this post