শিক্ষার আলো ডেস্ক
রাজধানীর বকশীবাজারে অবস্থিত সরকারি মাদরাসা-ই-আলিয়ার ক্যাম্পাস ও হল অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করেছে কর্তৃপক্ষ। এরই প্রতিবাদে বুধবার (৫ জানুয়ারি) বেলা ১২টা থেকে মাদরাসার আল্লামা কাশগরী হলের সামনে জড়ো হয়ে আন্দোলন শুরু করেন অনাবাসিক ও আবাসিক শিক্ষার্থীরা।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা জানান, প্রায় চার একর জমি নিয়ে নির্মিত সরকারি মাদরাসা-ই-আলিয়ার আবাসিক হল এবং ক্যাম্পাসের নামমাত্র দুটো ভবন ছাড়া সব মাঠ এবং ভূমি ইতোমধ্যেই বেদখল হয়ে গেছে। সর্বশেষ হলের সীমানা প্রাচীরের মধ্যে অবস্থিত প্রধান হল সুপার এবং সহকারী হল সুপারের বাসভবন ভেঙে কারিগরি ও মাদরাসা শিক্ষা অধিদফতরের ভবন নির্মাণ করার উদ্যোগ নেওয়া হয়। এমনকি হল সুপারের বাসভবনের উপর মাদরাসা শিক্ষা অধিদফতরের ব্যানার লাগানোর চেষ্টাও করা হয়। শিক্ষার্থীরা এসব ঘটনার প্রতিবাদ করায় প্রশাসন তাদের ওপর চড়াও হয়েছে। নিজ ক্যাম্পাসে অন্য প্রতিষ্ঠানের ভবন নির্মাণে শিক্ষার্থীরা বাধা দেওয়ায় মাদরাসা অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ করে ও হল থেকে শিক্ষার্থীদের বের করে দেওয়া হয়।
সরকারি মাদরাসা-ই-আলিয়ার ফাজিল (অনার্স) শ্রেণির শিক্ষার্থী নাইমুল ইসলাম বলেন, বর্তমানে এ মাদরাসায় প্রায় ১০ হাজার শিক্ষার্থী অধ্যয়ন করছে। অথচ একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের সমমান শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হওয়ার পরও শিক্ষার্থীদের জন্য একটিমাত্র জরাজীর্ণ আবাসিক হল রয়েছে, যা মাত্র ৩৫০ জন শিক্ষার্থীর জন্য যথেষ্ট। এছাড়াও শরীর চর্চা কেন্দ্র, আধুনিক পাঠাগার, ছাত্র সংসদ কক্ষ, শিক্ষার্থীদের পাঠকক্ষ পর্যন্ত নেই। এমন জরাজীর্ণ অবস্থায় নিজ ক্যাম্পাসের উন্নয়ন না করে অন্য একটি প্রতিষ্ঠানের ভবন নির্মাণ করার ঘটনায় আমরা উদ্বিগ্ন।
রাকিবুল ইসলাম বরকত নামে আরেক শিক্ষার্থী বলেন, যেখানে জমি সংকটের কারণে আলিয়া মাদরাসারই ভালো কোনো ভবন নেই সেখানে কী করে অন্য একটি প্রতিষ্ঠান ভবন নির্মাণ করা হয়? প্রশাসন সম্পূর্ণ অযৌক্তিকভাবে অনির্দিষ্টকালের জন্য প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করেছে এবং বিকেল ৪টার মধ্যে আবাসিক শিক্ষার্থীদের হল ছাড়ার নির্দেশ দিয়েছে। আমরা এ ঘটনার তীব্র নিন্দা এবং প্রতিবাদ জানাই। আমরা হাল ছাড়ব না।
ঘটনাস্থলে উপস্থিতি চকবাজার থানার অফিসার ইনচার্জ (তদন্ত) তাসলিমা আক্তার বলেন, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির যাতে অবনতি না হয় এ জন্য আমরা অবস্থান নিয়েছি ৷ এখন পর্যন্ত আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে৷ শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসের ভেতরেই অবস্থান করছে৷
উল্লেখ্য, বুধবার সকালে সরকারি মাদরাসা-ই আলিয়ার আল্লামা কাশগরী (রহ) হল ও ইব্রাহিম হলের সুপার বাংলা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো. জাহাঙ্গীর আলম সই করা বিজ্ঞপ্তিতে ক্যাম্পাসে সরকারি কাজে বাধা প্রদান, অধ্যক্ষ শিক্ষকদের অবরুদ্ধ করা, ক্যাম্পাসে সহিংস পরিস্থিতি সৃষ্টি করে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটানো এবং পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হওয়ার আশঙ্কায় সরকারি মাদরাসা-ই-আলিয়ার দুটি হল পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত বন্ধ ঘোষণা করা হয়। একইসঙ্গে বুধবার বিকেল ৪টার মধ্যে অবস্থিত সব শিক্ষার্থীকে হল ছাড়ার নির্দেশ দেয় কর্তৃপক্ষ।
Discussion about this post